Islam Class 8 Textbook PDF

Document Details

Uploaded by Deleted User

2024

ড. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম,ড. আমীর হোসেন,মোঃ আবু হানিফ,ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম,ম

Tags

Islam textbook Islamic studies 8th grade Bangladesh curriculum

Summary

This textbook is designed for 8th-grade students in Bangladesh, focusing on Islamic studies. It covers various topics in Islam, emphasizing foundational knowledge and practical application, while also considering challenges and opportunities in a rapidly evolving world.

Full Transcript

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০22 অনুযায়ী প্রণীত এবং 2024 শিক্ষাবর ্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য নির ্ধারিত পাঠ্যপুস্তক অষ্...

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০22 অনুযায়ী প্রণীত এবং 2024 শিক্ষাবর ্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য নির ্ধারিত পাঠ্যপুস্তক অষ্টম শ্রেণি (পরীক্ষামূলক সংস্করণ) রচনা ড. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ড. আমীর হ োসেন ম োঃ আবু হানিফ ড. ম োহাম্মদ আবুল কাশেম ম োঃ নাজমুল হাছান ম োঃ ম োস্তফা কামাল নাজমুল হাসান জুন্নুন ড. ম োঃ ইকবাল হায়দার উম্মে কুলসুম সম্পাদনা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ wkÿvel© 2024 জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর ্ড ৬৯-৭০, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ কর্ক তৃ প্রকাশিত [জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর ্ড, বাংলাদেশ কর্ক তৃ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত] প্রকাশকাল :..............., 2023 শিল্প নির্দেশনা মঞ্জুর আহমেদ প্রচ্ছদ মঞ্জুর আহমেদ গ্রাফিক্স নূর-ই-ইলাহী ম ো: আ: হান্নান বিশ্বাস ম ো: সাদ্দাম হ োসাইন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্ক তৃ বিনামূল্যে বিতরণের জন্য মুদ্রণে : প্রসঙ্গ কথা পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে জীবন ও জীবিকা। প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে পরিবর্তনের গতিও হয়েছে অনেক দ্রুত। দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বের সঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক োন ো বিকল্প নেই। কারণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ইতিহাসের যেক োন ো সময়ের চেয়ে এগিয়ে চলেছে অভাবনীয় গতিতে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব পর্যায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ আমাদের কর্মসংস্থান এবং জীবনযাপন প্রণালিতে যে পরিবর্তন নিয়ে আসছে তার মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে। অদূর ভবিষ্যতে অনেক নতুন কাজের সুয োগ তৈরি হবে যা এখনও আমরা জানি না। অনাগত সেই ভবিষ্যতের সাথে আমরা যেন নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারি তার জন্য এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয় োজন। পৃথিবী জুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটলেও জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ুদূষণ, অভিবাসন এবং জাতিগত সহিংসতার মত ো সমস্যা আজ অনেক বেশি প্রকট। দেখা দিচ্ছে ক োভিড ১৯-এর মত ো মহামারি যা সারা বিশ্বের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং অর্থনীতিকে থমকে দিয়েছে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় সংয োজিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা। এসব চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তার টেকসই ও কার্যকর সমাধান এবং আমাদের জনমিতিক সুফলকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। আর এজন্য প্রয় োজন জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যব োধ ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন দূরদর্শী, সংবেদনশীল, অভিয োজন-সক্ষম, মানবিক, বৈশ্বিক এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পদার্পণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষা হচ্ছে এই লক্ষ্য অর্জনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এজন্য শিক্ষার আধুনিকায়ন ছাড়া উপায় নেই। আর এই আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে একটি কার্যকর যুগ োপয োগী শিক্ষাক্রম প্রণয়নের প্রয় োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর্ডের একটি নিয়মিত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণকার্যক্রম হল ো শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন। সর্বশেষ শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয় ২০১২ সালে। ইত োমধ্যে অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে। প্রয় োজনীয়তা দেখা দিয়েছে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও উন্নয়নের। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং শিখন চাহিদা নিরূপণের জন্য ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালব্যাপী এনসিটিবির আওতায় বিভিন্ন গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলন পরিচালিত হয়। এসব গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকার মত ো য োগ্য প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিচ্ছিন্ন য োগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম উন্নয়ন করা হয়েছে। য োগ্যতাভিত্তিক এ শিক্ষাক্রমের আল োকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হল ো। বাস্তব অভিজ্ঞতার আল োকে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এমনভাবে রচনা করা হয়েছে যেন তা অনেক বেশি সহজব োধ্য এবং আনন্দময় হয়। এর মাধ্যমে চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা বিভিন্ন প্রপঞ্চ ও ঘটনার সাথে পাঠ্যপুস্তকের একটি মেলবন্ধন তৈরি হবে। আশা করা যায় এর মাধ্যমে শিখন হবে অনেক গভীর এবং জীবনব্যাপী। পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়নে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে যথাযথ গু্রুত্ব দেওয়া হয়েছে। বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকটি রচনা, সম্পাদনা, পরিমার্জন, চিত্রাঙ্কন ও প্রকাশনার কাজে যাঁরা মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পরীক্ষামূলক এই সংস্করণে ক োন ো ভুল বা অসংগতি কার ো চ োখে পড়লে এবং এর মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ক োন ো পরামর্শ থাকলে তা জানান োর জন্য সকলের প্রতি বিনীত অনুর োধ রইল। প্রফেসর ম োঃ ফরহাদুল ইসলাম চেয়ারম্যান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ব োর ্ড, বাংলাদেশ বিষয় পরিচিতি প্রিয় শিক্ষার্থী, নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তরণে ত োমাকে আন্তরিক অভিনন্দন! জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আল োকে প্রণীত ‘ইসলাম শিক্ষা’ এ নতুন বইটি হাতে পেয়ে নিশ্চয়ই তুমি আনন্দিত। ইত োমধ্যে তুমি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের ‘ইসলাম শিক্ষা’ বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়ন করেছ। এ পাঠ্যপুস্তকের নতুনত্বের দিকসমূহ এবং এর ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কেও ত োমার পূর্ব ধারণা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। ত োমাকে আবারও কিছু কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। ইসলাম শিক্ষা বিষয়টি পড়ে ত োমাকে কেবল ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করলেই চলবে না। তুমি যা শিখবে সে অনুসারে ত োমাকে কাজ করতে হবে। শিখন মূল্যায়নে তুমি কতটা ‘জান ো’ কেবল তার ওপর গুরুত্ব না দিয়ে তুমি কতটা ‘পার ো’ তার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব আর োপ করা হবে। ইসলাম শিক্ষার নতুন ক োন বিষয়বস্তু তুমি শিখবে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। আর সে অভিজ্ঞতা তুমি অর্জন করবে নানা মাধ্যমে। শিক্ষক তার পরিকল্পনা অনুসারে ত োমার অভিজ্ঞতা লাভের প্রেক্ষাপট বা উপলক্ষ্য সৃষ্টি করবেন এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে ত োমাকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাবেন। আবার কখনও বা তা হাতে-কলমে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে তুমি অভিজ্ঞতা লাভ করবে। অভিজ্ঞতা ও পারদর্শিতা অর্জনের জন্য ত োমাকে নিয়মিত শ্রেণিতে উপস্থিত থাকতে হবে। শিক্ষকের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এছাড়াও পাঠ্যপুস্তকে দেয়া এবং শিক্ষক কর্ক তৃ আর োপিত বিভিন্ন কাজ ত োমাকে যথাযথভাবে সম্পাদন করতে হবে। আশা করা যায় এ পদ্ধতি অবলম্বনে তুমি ইসলামের ম ৌলিক বিষয় সম্পর্কে জানার পাশাপাশি ইসলামি জীবনবিধানের অন্তর্নিহিত স ৌন্দর্য, তাৎপর্য ও এর উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারবে। সহজ ও আনন্দদায়ক উপায়ে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে কাংখিত দক্ষতা ও পারদর্শীতা অর্জন করতে পারবে। আশা করা যায় এ পাঠ্যপুস্তকটির কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে ত োমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার দিগন্ত আর ো প্রসারিত হবে। মহান আল্লাহ আল োর পথে ত োমার চলার পথ সহজ করে দিন। সূচিপত্র অধ্যায় বিষয়বস্তু পৃষ্ঠা নাম্বার অধ্যায় 1 : আকাইদ 1 আল্লাহর পরিচয় 1 রাসুলগণের প্রতি ইমান 6 খতমে নবু্্ওয়াত 11 ঈসা (আ.) ও ইমাম মাহদি (আ.) এর আগমন 13 আখিরাতের ‍প্রতি ইমান 15 কিয়ামত 15 তাকদিরের প্রতি ইমান 19 শাফা‘আত 21 শিরক 24 অধ্যায় 2 : ইবাদাত 28 সালাত 28 সাওম 35 যাকাত 47 হজ 55 অধ্যায় 3 : কুরআন ও হাদিস শিক্ষা 73 আল কুরআনের পরিচয় 73 তাজবিদ 79 সূরা আল-কাওসার 84 সূরা আল-মাউন 86 সূরা কুরাইশ 89 সূরা আল-কারিয়াহ 92 সূরা যিলযাল 95 আয়াতুল কুরসি 97 আল হাদিস 101 অধ্যায় 4 : আখলাক 110 আখলাকে হামিদাহ 111 আখলাকে যামিমাহ 124 অধ্যায় 5 : আদর্শ জীবন চরিত 134 মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) 134 হযরত ইবরাহিম (আ.) 143 হযরত উসমান (রা.) 146 হযরত ফাতিমা (রা.) 148 হযরত শাহ জালাল (রহ.) 150 অধ্যায় 6 : পরমত সহিষ্ণুতা 152 ইসলাম শিক্ষা প্রথম অধ্যায় প্রিয় শিক্ষার্থী, ত োমরা অতিথি মহ োদয়ের সাথে আল োচনা, মতবিনিময়ের মাধ্যমে আকাইদের ম ৌলিক বিষয়াবলি সম্পর্কে সুন্দর ও স্পষ্ট একটি ধারণা অর্জন করতে পেরেছ ো। আল োচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুল ো ত োমরা নিশ্চয়ই ত োমাদের খাতায় লিখে রেখেছ ো। চল ো, এখন শিক্ষকের নির্দেশনা ম োতাবেক তুমি/ ত োমরা একক/জ োড়ায় আল োচনা করে খাতায় লিখ। দলগত কাজ ত োমরা আজকের আল োচনা থেকে আকাইদ সম্পর্কে কি কি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছ, দলে আল োচনা করে লিখ। আল্লাহর পরিচয় প্রিয় শিক্ষার্থী, তুমি কি মনে কর ো একটি পিঁপড়ার পক্ষে এ পৃথিবীর বাস্তব রূপ ও এর বিশালতা দেখা সম্ভব? হয়ত ো তুমি বলবে, ‘নিশ্চয়ই না’। একটি সামান্য পিঁপড়ার পক্ষে এটি যেমন অসম্ভব, তেমনি এ বিশ্ব জাহানের মালিক ও প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার প্রকৃত পরিচয় ও গুণাবলি সম্পর্কে সম্যক জানা মানুষের পক্ষে কখন োই সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য সকল কিছুর স্রষ্টা। তিনি তাঁর সৃষ্টিরাজির ক োন ো কিছুকেই অনর্থক সৃষ্টি করেননি। বরং তাঁর এ সৃষ্টিরাজির মাধ্যমে তিনি তাঁর পরিচয়, নিদর্শন ও মহিমা নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। যেমন আমাদের বসবাসের এই জমিন, মাথার উপরের আকাশ, পাহাড়, সমুদ্র, আকাশে চলমান মেঘমালা, বায়ুপ্রবাহ, রাত এবং দিনের পরিবর্তন; এসব নিয়ে আমরা যদি গভীরভাবে চিন্তা wkÿvel© 2024 ভাবনা করি তাহলে এসবের মাঝে আমরা মহান আল্লাহর অজস্র মহিমা ও নিদর্শন খজে ুঁ পাই। আবার পবিত্র 1 আকাইদ কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত ‘আল-আসমাউল হুসনা’র মাঝেও মহান আল্লাহর পরিচয় ও গুণাবলির উল্লেখ রয়েছে। ত োমার অবশ্যই মনে আছে, মহান আল্লাহর ওপর ইমান প্রসঙ্গে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে তুমি আল্লাহর গুণের পরিচয় জানতে আল আসমাউল হুসনা থেকে কয়েকটির বিবরণ জেনেছ ো। এ শ্রেণিতে আমরা আর ো কয়েকটি আল্লাহর গুণবাচক নাম সম্পর্কে আল োচনা করব ো। তাহলে আল োচনা শুরু করা যাক। আল্লাহু তাওয়াবুন তাওয়াবুন অর্থ তাওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী। এটি মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। আল্লাহ নিজেই তাঁর নাম রেখেছেন ‘আত-তাওয়াব’ । তাওয়াব হল ো যিনি সর্বদা তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন। অতএব যারা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করে, তিনি তাদের তাওবা কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন। আল্লাহই তাঁর বান্দাকে তাওবা করার ত ৌফিক দান করেন। ফলে বান্দা গুনাহের কাজ থেকে ফিরে আসে। সে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে এবং উক্ত গুনাহের কাজে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প করে। আর এভাবে বান্দা যখন খাঁটি তাওবা করে তখন আল্লাহ তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেন। মহান আল্লাহ বলেন– অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ১০৪) মহান আল্লাহ তাওবাকারীকে ভাল োবাসেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভাল োবাসেন।’ (সূরা আল বাকারা, আয়াত: ২২২) প্রতি রাতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করেন যেন দিনের পাপী ব্যক্তিরা রাতে তাওবা করে নিতে পারে। আবার তিনি দিনে ক্ষমার হাত প্রসারিত করেন যাতে রাতের পাপী ব্যক্তিরা দিনে তাওবা করে নিতে পারে। যখন কেউ অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করে এবং সৎ কাজ করে, তখন আল্লাহ তা‘আলা তার মন্দ কাজকে ভাল ো দিয়ে পরিবর্তন করে দেন। জ োড়ায় কাজ ‘আল্লাহু তাওয়াবুন’ মহান আল্লাহর এই নামের শিক্ষা ত োমার/ত োমাদের কর্মে বাস্তবায়নে কী কী wkÿvel© 2024 করতে পার ো তার একটি তালিকা তৈরি কর ো। 2 ইসলাম শিক্ষা আল্লাহু কাদিরুন কাদিরুন অর্থ সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমতাধর। এটি মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। আল-কাদির হলেন এমন সত্তা, যিনি পূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী। আল্লাহ সর্বশক্তিমান। তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন আর এগুলো তিনি সুনিপুণভাবে পরিচালনা করেন। তিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। কিয়ামতের দিন পুনরায় তিনি সকলকে জীবিত করবেন আর সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিবেন এবং পাপীদেরকে শাস্তি দিবেন। তিনি এমন এক সত্তা যিনি ক োন ো কিছু করতে ইচ্ছা করলে শুধু কুন বা ‘হও’ বলেন, সাথে সাথে তা হয়ে যায়। তিনিই অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী। আর তিনি যাকে যেভাবে চান সেভাবেই পরিবর্তন করেন। আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা তাই করেন। সবকিছুর ওপর তিনি সর্বশক্তিমান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২০) আল্লাহু ওয়াদুদুন ওয়াদুদ শব্দের অর্থ পরম স্নেহপরায়ণ, প্রেমময়, প্রেমাষ্পদ। ‘আল্লাহু ওয়াদুদুন’ অর্থ আল্লাহ পরম প্রেমময় ও স্নেহপরায়ণ। মহান আল্লাহ বলেন, অর্থ: ‘এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, প্রেমময়।’ (সূরা আল-বুরুজ, আয়াত: ১৪) আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের অত্যন্ত ভাল োবাসেন। তিনি ভাল োবেসেই তাদের সৃষ্টি করেছেন। তাই বান্দার দায়িত্ব হল ো তাঁর বন্দেগি করা এবং যাবতীয় আদেশ-নিষেধ পালন করা। সৃষ্টি জগতের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে মহান আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ভাল োবাসেন। এজন্য মহানবির একটি উপাধি ‘হাবিব’। মহান আল্লাহর ভাল োবাসা অর্জনের সর্বোত্তম পন্থা হল ো তাঁর প্রিয় রাসুল মুহাম্মাদ (সা.)-কে ভাল োবাসা। তাঁর আদর্শ পরিপূর্ণঅনুসরণ ও অনুকরণ করা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলুন, ত োমরা যদি আল্লাহকে ভাল োবাস, তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ ত োমাদেরকে ভাল োবাসবেন।’ (সূরা আলে- ইমরান, আয়াত: ৩১) আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে এতই ভাল োবাসেন যে, তারা পাহাড়সম গুনাহ করার পর তাওবা করলে মহান আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। তিনি তাওবাকারীকে অত্যন্ত ভাল োবাসেন ও পছন্দ করেন। তাই মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাওবার দরজা কখনই বন্ধ করেন না। কারণ তাঁর স্নেহ-মমতা ও ভাল োবাসার ক োন ো সীমা নেই। wkÿvel© 2024 আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদুদ নাম থেকে আমরা শিক্ষা লাভ করি যে, তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসাস্থল। 3 আকাইদ আমাদের প্রতি তিনি অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ। আমরা যতই অন্যায় ও অপরাধ করি না কেন, আল্লাহর কাছে ফিরে আসলে তিনি আনন্দিত হন, আমাদের ক্ষমা করে দেন। তিনি আমাদের কল্যাণ চান। আমাদেরকে জান্নাত দান করতে চান। তাই আমরা আল্লাহর ইবাদাত করব ো। তাঁর যাবতীয় আদেশের অনুসরণ করব ো। তাঁর হাবিব হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে ভাল োবাসব ো। আল্লাহর জন্যই সমগ্র সৃষ্টি জগতকে ভাল োবাসব ো। আল্লাহু জাব্বারুন জাব্বার শব্দের অর্থ মহা শক্তিধর, পরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী ইত্যাদি। আল্লাহু জাব্বারুন অর্থ আল্লাহ পরাক্রমশালী। মহান আল্লাহর সামনে সবাই পরাভূত ও দুর্বল। তিনিই সবচেয়ে মহিমান্বিত। অহংকার করার একচ্ছত্র অধিকার তাঁরই। একই সাথে বান্দাদের প্রতি তিনি পরম স্নেহশীল ও দয়ালু। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর এ গুণবাচক নামটি একবার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন– অর্থ: ‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতিত ক োন ো ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত। তারা যাকে শরিক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র, মহান।’ (সূরা আল-হাশর, আয়াত: ২৩) মহান আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তাঁর আদেশ ও ইচ্ছাই চূড়ান্ত। কেউ তাঁকে পরাভূত করতে পারে না। বরং তিনিই সবার উপর ক্ষমতাবান। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন, সবাই তাঁরই মুখাপেক্ষী। মহান আল্লাহর এ গুণবাচক নামটি আমাদেরকে তাঁর প্রতি পরিপূর্ণআস্থা ও ভরসা রাখতে শেখায়। আমরা বুঝতে পারি, যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছাই চূড়ান্ত, তাই তাঁর ইচ্ছায় নিজেদের সমর্পিত করার মধ্যেই যাবতীয় কল্যাণ রয়েছে। এটি আমাদের আত্মনির্ভরশীল ও সাহসী হতে শেখায়। আল্লাহু জাব্বারুন নামের বিশ্বাসী ব্যক্তি আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ ভরসা করে। যাবতীয় বাধা-বিপত্তি ম োকাবেলা করে আপন লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। নিজের ক্ষুদ্রতা উপলব্ধি করে অহংকার থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহকেই সবচেয়ে বড় মনে করে। আমরা মহান আল্লাহর এ গুণটি উপলব্ধি করব ো। তাঁকে সর্বশক্তিমান ও মহাপরাক্রমশালী হিসেবে জানব ো। wkÿvel© 2024 সকল কাজে তাঁর কাছে সাহায্য চাইব ো। অন্যায় ও খারাপ কাজ পরিহার করব ো। 4 ইসলাম শিক্ষা আল্লাহু সামাদুন সামাদ অর্থ অমুখাপেক্ষী, চিরন্তন, অবিনশ্বর ইত্যাদি। আল্লাহু সামাদুন অর্থ হল ো আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলার কারও প্রয় োজন নেই। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ। সৃষ্টিজগতের সবকিছু আল্লাহ তা‘আলার মুখাপেক্ষী। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, অর্থ: আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। (সূরা আল-ইখলাস, আয়াত: ২) পৃথিবীর সবকিছু অস্তিত্বহীন ছিল ো। মহান আল্লাহই সবকিছুকে অস্তিত্বে এনেছেন। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া ক োন ো কিছুই এক মুহূর্ত টিকে থাকতে পারে না। সকল সৃষ্টি জন্ম-মৃত্যু, বেড়ে ওঠা, পানাহার, সুস্থতা ইত্যাদির জন্য আল্লাহর মুখাপেক্ষী। বিশ্বজগৎ সৃষ্টি ও পরিচালনায় তাঁর ক োন ো সাহায্যকারীর প্রয় োজন হয় না। তাঁর হুকুমই ুঁ সমগ্র সৃষ্টিজগৎ চূড়ান্ত। কেউ তাঁর হুকুমের বাইরে যেতে পারে না। তিনি তাঁর গুণাবলি ও কর্মে পরিপূর্ণ, নিখত। ধ্বংস হওয়ার পর শুধু তিনি থাকবেন। আসমান-জমিনের সবকিছু তাঁর কাছে প্রার্থনা করে। তাঁর দিকেই মন োনিবেশ করে। তাঁর অনুগ্রহ লাভ করেই সবাই টিকে থাকে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আসমানসমূহ ও পৃথিবীতে যারা আছে সকলেই তার নিকট প্রার্থী।’ (সূরা আর-রহমান, আয়াত: ২৯) মহান আল্লাহ এমন সত্তা, যিনি সকলের একমাত্র উদ্দেশ্য। তিনি ছাড়া দুনিয়ার ক োন ো কিছু মানুষের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়। মহান আল্লাহর ক োন ো কিছুর প্রয় োজন নেই। এমনকি মানুষের ইবাদাত-বন্দেগি, তাসবিহ- তাহলিলেরও তিনি মুখাপেক্ষী নন। মানুষের নিজেদের কল্যাণ ও প্রয় োজনেই তাঁর ইবাদাত-বন্দেগি করা উচিত। মানুষ আল্লাহর অবাধ্য হলে আল্লাহর বিন্দুমাত্র ক্ষতি নেই। এমনকি অনুগত বান্দা হলেও তাঁর বিশেষ ক োন ো লাভ নেই। তাঁর আহার-নিদ্রা, বিশ্রাম ক োন ো কিছুর প্রয় োজন নেই। এক কথায় তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ, অমুখাপেক্ষী ও দ োষমুক্ত একমাত্র সত্তা। আমরা মহান আল্লাহর এই গুণটি সুন্দরভাবে অনুধাবন করব ো। একমাত্র তাঁরই মুখাপেক্ষী হব ো। তাঁর উপর ভরসা করতে শিখব ো। জ োড়ায় কাজ মহান আল্লাহর পরিচয় তথা আসমাউল হুসনা জানার মাধ্যমে আল্লাহ সম্পর্কে ত োমার নতুন যে যে বিশ্বাস তৈরি হল ো: ১. আমরা যদি আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তাহলে আল্লাহ আমাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন। ২.............................................................................................................. ৩.............................................................................................................. wkÿvel© 2024 ৪.............................................................................................................. 5 আকাইদ প্রতিফলন ডায়েরি লিখন (প্রিয় শিক্ষার্থী, ত োমরা ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের প্রতিফলন ডায়েরিতে নিম্নোক্ত শির োনামে বাড়িতে লিখবে। এক্ষেত্রে, পরিবারের বয় োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের যেমন: মাতা-পিতা/দাদা-দাদি/বড় ভাই-ব োন/ সহপাঠী প্রমুখের সহায়তা নিতে পার ো।) মহান আল্লাহ সম্পর্কে বর্ণিত বিশ্বাসের ফলে আমার চরিত্রে যেসব গুণের প্রতিফলন ও চর্চা অব্যাহত রাখব। ১. আল্লাহ তা‘আলার কাছে মাফ চাইলে, তিনি আমাদের মাফ করে দেন। আমরাও যথাসম্ভব অন্যকে মাফ করে দিব ো। ২............................................................................................................ ৩............................................................................................................ ৪............................................................................................................ রাসুলগণের প্রতি ইমান মানব জাতিকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে অনেক নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। রাসুলগণ আল্লাহর মন োনীত ব্যক্তি। তাঁদের প্রচারিত বাণী আল্লাহরই বাণী। এই বিশ্বাস স্থাপন করাই হল ো রাসুলগণের প্রতি ইমান। রাসুলগণের প্রতি ইমান বলতে নবি-রাসুল উভয়কে বুঝান ো হয়েছে। রাসুল শব্দটি রিসালাত শব্দ থেকে এসেছে। রিসালাত শব্দের শাব্দিক অর্থ চিঠি, বার্তা, সংবাদ ইত্যাদি। সুতরাং রিসালাত বলতে আল্লাহ তা‘আলার বাণী মানুষের কাছে প ৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বকে ব োঝায়। এ দায়িত্ব পালনকারীকে রাসুল বলা হয়। রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ছাড়া মুমিন হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুমিনের একান্ত কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘রাসুল, তাঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ইমান এনেছেন এবং মু’মিনগণও। তাঁদের সকলে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসুলগণের প্রতি ইমান এনেছেন।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৫) রাসুলগণের প্রতি ইমান আনার অপরিহার্যতা ইমানের পূর্ণতার জন্য ইসলামের ৭টি ম ৌলিক বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য। রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন সেগুল োর মধ্যে অন্যতম। সুতরাং রাসুলগণের প্রতি ইমান না আনলে তাওহিদে বিশ্বাস পূর্ণ হবে wkÿvel© 2024 না। নবি-রাসুলগণের কাউকে বিশ্বাস করা আর কাউকে অবিশ্বাস করা যাবে না। বরং প্রত্যেককেই আল্লাহ তা‘আলার প্রেরিত নবি-রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। সবাইকে যথাযথ সম্মান দিতে হবে। তাঁদের সবার 6 ইসলাম শিক্ষা প্রতি ইমান আনতে হবে। তাঁদের প্রতি ইমান আনার পর সন্দেহ প োষণ করা যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ: ‘তারাই মুমিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনে, পরে সন্দেহ পোষণ করে না।’ (সূরা আল- হুজুরাত, আয়াত: ১৫) নবি-রাসুল প্রেরণের প্রয় োজনীয়তা মহান আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা, আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক তৈরি করা, মানুষকে সরল সঠিক পথ দেখান ো, পরকাল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, মানুষকে অন্ধকার থেকে আল োর দিকে নিয়ে আসা, আল্লাহর বিধি বিধান মেনে চলার প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং ভ্রান্ত পথ ও মত দূর করে সত্য দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নবি-রাসুল প্রেরণের প্রয় োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তাই আল্লাহ তা‘আলা আদম (আ.) থেকে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) পর্যন্ত অনেক নবি- রাসুল প্রেরণ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, অর্থ: ‘আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের নিজেদের মধ্য হতে তাদের নিকট রাসুল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাঁর আয়াতসমূহ তাদের নিকট তিলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন আর কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন, যদিও তারা পূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ছিল।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৪) নবি-রাসুলগণের গুণাবলি নবি-রাসুলগণ মানবজাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তাঁরা আল্লাহ তা‘আলা কর্ক তৃ মন োনীত। তিনি তাঁদের সব ধরনের চারিত্রিক ও মানবিক দ োষত্রুটি থেকে রক্ষা করেন। তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন মাসুম বা নিষ্পাপ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই তাঁরা ছিলেন আমার মন োনীত উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত’। (সূরা স োয়াদ, আয়াত: ৪৭) দুনিয়ার জীবনের চাকচিক্যের প্রতি নবি-রাসুলগণের ক োন ো আগ্রহ ছিল না। তাঁরা ছিলেন মিষ্টভাষী, ভদ্র, বিনয়ী, ধৈর্যশীল, সহনশীল, আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল, প্রতিকূল পরিবেশে তাওহিদের দাওয়াত প্রদানকারী এবং সৎকর্মশীল। আল্লাহ তা‘আলা নবি-রাসুলগণের গুণাবলি উল্লেখ করে বলেন, ‘এবং স্মরণ করুন ইসমা‘ইল, ইদরিস ও যুল-কিফল-এর কথা, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন ধৈর্যশীল; এবং তাঁদেরকে আমি আমার অনুগ্রহভাজন wkÿvel© 2024 করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ’। (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৮৫-৮৬) 7 আকাইদ নবি-রাসুলগণের অনুসরণ মানব জাতিকে হেদায়েতের পথ দেখান োর জন্য আল্লাহ তা‘আলা অনেক নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবি- রাসুলগণ ওহির মাধ্যমে আল্লাহর বাণী লাভ করতেন। তাঁরা একদিকে ছিলেন সত্য ও সঠিক জ্ঞানের অধিকারী, অন্যদিকে ছিলেন উন্নত চরিত্রের অধিকারী। নবি-রাসুলগণ মানবজাতিকে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা সে অনুযায়ী আমল করবে তারা মৃত্যুর পর মহা সুখের জান্নাত লাভ করবে। আর যারা নবি-রাসুলের অনুসরণ না করে পাপ কাজে লিপ্ত হবে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি। তাই নবি-রাসুলের অনুসরণ করা সবার ইমানি দায়িত্ব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ: ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে।’ (সূরা আল- আহযাব, আয়াত: ৭১) আমরা সবাই আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে অনুসরণ করব ো। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও নবিগণের মর্যাদা আল্লাহর প্রেরিত নবি-রাসুলগণ সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। তাঁরা সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। নবি-রাসুলদের একেক জনকে মহান আল্লাহ বিশেষ বিশেষত্ব প্রদান করেছেন। যেমন হযরত ইবরাহিম (আ.)-কে আল্লাহ তা‘আলা ‘খলিল’ বা বন্ধু বলে আখ্যায়িত করছেন। হযরত সুলাইমান (আ.) এবং হযরত দাউদ (আ.)-কে নবুওয়াত ও বাদশাহী দান করেছিলেন। হযরত আইয়ুব (আ.)-কে ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক হিসেবে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছিলেন। হযরত ইউসুফ (আ.)-কে বিশেষ স ৌন্দর্য দান করেছিলেন। হযরত মুসা (আ.)-কে তুর পাহাড়ে তাঁর সাথে কথা বলার সুয োগ দিয়েছিলেন। হযরত ঈসা (আ.)-এর উপাধি ছিল ‘রুহুল্লাহ’। তিনি দ োলনায় থাকাকালেই কথা বলেছেন। এ ছাড়া মহান আল্লাহর হুকুমে তিনি মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করতে পারতেন। এভাবেই সব নবি-রাসুলকে আল্লাহ তা‘আলা আলাদা আলাদা মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য ও নিদর্শন দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ: ‘এ ‘ রাসুলগণ, তাঁদের মধ্যে কাউকে কার ো ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে এমন কেউ রয়েছে যাঁর wkÿvel© 2024 সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন, আবার কাউকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৩) 8 ইসলাম শিক্ষা কিন্তু হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে সবার উপরে বিশেষ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য দান করা হয়েছে। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল ছিলেন। তিনি ছিলেন মহান চরিত্রের অধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে কেবল এ পৃথিবী আর মানুষই নয়; বরং জগৎসমূহের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। সবার ওপরে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘ োষণা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অর্থ: ‘এবং আমি আপনার খ্যাতিকে উচ্চমর্যাদা দান করেছি।’ (সূরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত: ৪) মহান আল্লাহ আর ো বলেন, অর্থ: ‘আমি ত ো আপনাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭) নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি আদম সন্তানের নেতা হব ো। আর এ কথা গর্ব করে বলছি না’। তিনি আর ো বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আমিই সর্ব প্রথম আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করব ো। আর আমার সুপারিশই সর্বপ্রথম কবুল করা হবে’। (তিরমিযি) নবি-রাসুলগণের মু‘জিযা সকল যুগে রিসালাতের সত্যতা প্রমাণ ও হেদায়েতের পথ সুগম করে ইমানি সফলতার জন্য মু‘জিযার ভূমিকা ছিল উল্লেখয োগ্য। আল্লাহ তা‘আলা নবি-রাসুলগণকে তাঁদের নবুওয়াতের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ হিসেবে অল ৌকিক প্রমাণ বা মু‘জিযা দান করেছেন। কিন্তু তাঁদের সকলেরই মু‘জিযা ছিল তৎকালীন সময়ের জন্য। তাঁদের তির োধানের সাথে সাথে তাঁদের মু‘জিযা দেখার ক োন ো উপায় ছিল না। যেমন- হযরত মুসা (আ.)-এর লাঠি সাপে পরিণত হত ো, হযরত ঈসা (আ.) ‘কুম বিইযনিল্লাহ’ (আল্লাহর হুকুমে দাঁড়িয়ে যাও) বললে মৃত ব্যক্তি জীবিত হত ো; মাটির টুকরায় ফুঁ দিলে পাখি হয়ে উড়ে যেত; অন্ধ ব্যক্তি দৃষ্টি লাভ করত ো; কুষ্ঠ র োগী আর োগ্য লাভ করত ো। এ সবই তাঁদের মু‘জিযা বা অনন্য নিদর্শন। হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনে অসংখ্য মু‘জিযা সংঘটিত হয়েছিল। যেমন তাঁর পবিত্র হাতের ইশারায় চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া, মিরাজের রাতে উর্ধ্বজগতে ভ্রমণ করা এবং আল্লাহর দিদার লাভ করা, গাছ-পাথর কর্ক তৃ তাঁর রিসালাতের সাক্ষ্য দেওয়া ইত্যাদি। তাঁর সবচেয়ে বড় মু‘জিযা আল-কুরআন, যা কিয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত ও বিদ্যমান থাকবে। নবি-রাসুলের পার্থক্য নবি শব্দের অর্থ সংবাদবাহক। আর রাসুল শব্দের অর্থ দূত। নবি ও রাসুলের মধ্যে পার্থক্য হল ো, আল্লাহ wkÿvel© 2024 তা‘আলা যাকে নতুন শরিয়ত দিয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট পাঠান, তাঁকে রাসুল বলা হয় । আর যাকে নতুন শরিয়ত না দিয়ে পূর্বের রাসুলের শরিয়তই প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে পাঠান, তাঁকে নবি বলা হয়। প্রত্যেক রাসুলই 9 আকাইদ নবি, কিন্তু প্রত্যেক নবিই রাসুল নন। নবুওয়াতের ধারায় প্রথম নবি ছিলেন হযরত আদম (আ.) আর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মাদ (সা.)। নবি-রাসুলের সংখ্যা নবি-রাসুলগণের সংখ্যা সম্পর্কে একটি প্রশ্নের জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নবিদের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার। তার মধ্যে ৩১৩ বা অন্য বর্ণনায় ৩১৫ জন রাসুল’। (তাবারানি) আল-কুরআনে মাত্র ২৫ জন নবি-রাসুলের নাম এসেছে । তবে আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক জাতির নিকট নবি পাঠিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এসেছে, অর্থ: ‘এমন কোন ো সম্প্রদায় নেই যার নিকট সতর্ককারী প্রেরিত হয়নি।’ (সূরা আল-ফাতির, আয়াত: ২৪) তাঁদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যকের নাম কুরআন ও হাদিসে এসেছে। আর অধিকাংশের নাম আসেনি। এ বিষয়ে কুরআন মাজিদে ঘ োষণা করা হয়েছে, ‘আমি ত ো আপনার পূর্বে অনেক রাসুল প্রেরণ করেছিলাম। আমি তাঁদের কারও কারও কথা আপনার নিকট বিবৃত করেছি এবং কারও কারও কথা আপনার নিকট বিবৃত করিনি।’ (সূরা আল-মু’মিন, আয়াত: ৭৮) নবি-রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা ইমানের অংশ। দুনিয়াতে যারা নবি-রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তাঁদের আদর্শ অনুসরণ করবে, ইহকাল ও পরকালে তারা সফলকাম হবে। প্রতিফলন ডায়েরি লিখন যেসব বিশ্বাস ও কাজের মাধ্যমে রাসুলগণের প্রতি আমার ইমান দৃঢ় করব ো (উল্লিখিত শির োনামের আল োকে নির ্ধারিত ছকটি তুমি বাড়িতে প্রতিফলন ডায়েরিতে পূরণ কর ো।) ক্রমিক বিশ্বাসসমূহ কাজসমূহ সকল নবি-রাসুল আল্লাহর পক্ষ নবি-রাসুলগণ ছিলেন উন্নত চরিত্রের অধিকারী। তাঁদের ১. থেকে প্রেরিত। অনুসরণ করে আমিও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হব ো। wkÿvel© 2024 10 ইসলাম শিক্ষা খতমে নবুওয়াত খাতামুন অর্থ শেষ বা সমাপ্ত। আর নবুওয়াত অর্থ পয়গম্বারি, নবিগণের দায়িত্ব ইত্যাদি। সুতরাং খতমে নবুওয়াতের অর্থ নবুওয়াতের সমাপ্তি। খাতামুন শব্দের অন্যতম অর্থ সিলম োহর। সিলম োহর লাগান োর পর তাতে কিছু প্রবেশ করান ো যায় না। নবুওয়াতের সিলম োহর হল ো নবুওয়াতের দায়িত্বের পরিসমাপ্তি ঘ োষণা। নবুওয়াত তথা নবি-রাসুল আগমনের এ ক্রমধারার সমাপ্তিকেই খতমে নবুওয়াত বলা হয়। আর যার মাধ্যমে নবুওয়াতের ধারার সমাপ্তি ঘটে তিনি হলেন খাতামুন নাবিয়্যিন বা সর্বশেষ নবি। আমাদের প্রিয়নবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) হলেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল। রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বশেষ নবি ও রাসুল মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে বহু নবি-রাসুল প্রেরণ করেন। দুনিয়াতে আগমনকারী সব নবি-রাসুলই ক োন ো বিশেষ গ োত্র, বিশেষ দেশ এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন সারা বিশ্বের সকল মানুষের নবি। নবি আগমনের ক্রমধারা শুরু হয় হযরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে। আর হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে শেষ হয়। সুতরাং তিনিই সর্বশেষ নবি ও রাসুল। তাঁর পরে আর ক োন ো নবি নেই। তাঁর পরে আজ পর্যন্ত ক োন ো নবি আসেননি। কিয়ামত পর্যন্ত আসবেনও না। খতমে নবুওয়াতের প্রমাণ হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে খাতামুন নাবিয়্যিন হিসেবে বিশ্বাস করা ইমানের অন্যতম অঙ্গ। এতে বিশ্বাস না করলে মানুষ ইমানদার হতে পারবে না। তাঁর পরবর্তী সময়ে যারা নবুওয়াত দাবি করেছে তারা সবাই ভণ্ড, মিথ্যাবাদী ও প্রতারক। কুরআন মাজিদ ও হাদিসে খতমে নবুওয়াতের অনেক প্রমাণ বিদ্যমান। এর মধ্যে কতিপয় প্রমাণ নিম্নরূপ: আল-কুরআনের দলিল কুরআন মাজিদে আল্লাহ তা‘আলা সরাসরি মহানবি (সা.)-কে খাতামুন নাবিয়্যিন বা সর্বশেষ নবি বলেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন– অর্থ: ‘মুহাম্মাদ ত োমাদের মধ্যে ক োন ো পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসুল এবং সর্বশেষ নবি।’ (সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০) হাদিসের দলিল খতমে নবুওয়াত প্রমাণে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। মহানবি (সা.) বলেন– wkÿvel© 2024 11 আকাইদ অর্থ: ‘আমিই শেষ নবি। আমার পরে আর ক োন ো নবি নেই।’ (তিরমিযি) অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রিসালাত ও নবুওয়াতের ধারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমার পর আর ক োন ো নবি ও রাসুল আসবে না’। (তিরমিযি) নবি কারিম (সা.) আর ো বলেন, ‘বনি ইসরাইলে নবিগণই নেতৃত্ব দিতেন। যখনই ক োন ো নবি ইন্তেকাল করতেন তখনই পরবর্তী নবি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতেন। কিন্তু আমার পর আর ক োন ো নবি আসবে না।’ (বুখারি) অন্য এক হাদিসে মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব হবে। তারা প্রত্যেকেই নবি হওয়ার দাবি করবে। অথচ আমিই সর্বশেষ নবি। আমার পর আর ক োন ো নবি আসবে না’। (আবু দাউদ) অন্য একটি হাদিসে মহানবি (সা.) উপমার মাধ্যমে খতমে নবুওয়াত ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ও আমার পূর্ববর্তী নবিগণের দৃষ্টান্ত হল ো এমন যে, এক ল োক একটি দালান নির্মাণ করল। খুব সুন্দর ও ল োভনীয় করে তা সজ্জিত করল। কিন্তু তার এক ক োণে একটি ইটের স্থান ফাঁকা ছিল। ল োকজন দালানটির চারদিকে ঘুরে এর স ৌন্দর্য দেখছিল আর বিস্ময় প্রকাশ করছিল এবং বলছিল- ‘এ ক োণে একটি ইট রাখা হয়নি কেন? বস্তুত আমিই সে ইট এবং আমিই শেষ নবি।’ (বুখারি) উপমার মাধ্যমে বর্ণিত হাদিসসমূহ থেকে এ কথা সহজেই বুঝা যায় যে, মহানবি (সা.) হলেন নবুওয়াতের দালানের সর্বশেষ ইট। তাঁর মাধ্যমেই পরিপূর্ণ হয়ে গেল নির্মাণকাজ। ফলে নতুন করে দালানে আর ইট লাগান োর প্রয় োজন পড়বে না। অর্থাৎ তিনিই সর্বশেষ নবি ও রাসুল। য ৌক্তিক প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত সকল কিছুরই শুরু এবং শেষ আছে। তাই নবুওয়াতেরও শুরু এবং শেষ আছে। এক নবির পর অন্য নবি আসার কতগুল ো য ৌক্তিক কারণ থাকে। যেমন– ১. পূর্ববর্তী নবির শিক্ষা যদি ক োন ো বিশেষ সম্প্রদায় বা সময়ের জন্য নির্দিষ্ট হয়। ২. পূর্ববর্তী নবির শিক্ষায় যদি নতুন কিছু সংয োজন-বিয় োজন প্রয় োজন হয়। ৩. পূর্ববর্তী নবির শিক্ষা যদি বিলুপ্ত বা বিকৃত হয়ে যায়। মহানবি (সা.)- এর নবুওয়াতের ক্ষেত্রে উপরিউক্ত কারণগুল োর ক োন োটিই প্রয োজ্য নয়। কেননা, মহানবি (সা.) ক োন ো বিশেষ সম্প্রদায় বা সময়ের জন্য আসেননি। বরং তিনি কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বের সকল মানুষের wkÿvel© 2024 নবি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 12 ইসলাম শিক্ষা অর্থ: আমি ত ো আপনাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি। (সূরা সাবা, আয়াত: ২৮) রাসু্লুল্লাহ (সা.)-এর মাধ্যমে দ্বীন (ইসলাম) পরিপূর্ণও পূর্ণাঙ্গ হয়েছে। এতে ক োন োরূপ সংয োজন-বিয় োজনেরও প্রয় োজন নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, অর্থ: ‘আজ ‘ ত োমাদের জন্য ত োমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও ত োমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে ত োমাদের দ্বীন মন োনীত করলাম।’ (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৩) উপরিউক্ত আল োচনা থেকে এটা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি এবং রাসুল। তাঁর পরে আর ক োন ো নবি-রাসুল আসবেন না এবং আসার ক োন ো প্রয় োজনও নেই। তারপরে যদি কেউ নবুওয়াতের দাবি করে সে মিথ্যাবাদী, ভণ্ড ও প্রতারক। আমরা খতমে নবুওয়াতে বিশ্বাস করব ো। এতে বিশ্বাস করা ইমানের অপরিহার্য অংশ। আমরা আমাদের জীবনের সর্বাবস্থায় মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করে চলব ো। জ োড়ায়/দলগত কাজ ও উপস্থাপন প্রিয় শিক্ষার্থী, ত োমরা জ োড়ায় আল োচনা করে উল্লিখিত শির োনামের আল োকে আল-কুরআন ও হাদিসের বাণীসমূহ ছ োট কাগজে অর্থসহ লিখ। মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ই আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ নবি। ঈসা (আ.) ও ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন wkÿvel© 2024 হযরত ঈসা (আ.)-এর দুনিয়াতে পুনরাগমন ও ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমনে বিশ্বাস ইসলামি আকিদার একটি দিক। কিয়ামতের ১০টি বড় আলামতের অন্যতম হল ো ঈসা (আ.) ও ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন। 13 আকাইদ আখেরি যামানায় ইমাম মাহদি (আ.)- এর আত্মপ্রকাশ কিয়ামতের সর্বপ্রথম বড় আলামত। ইমাম মাহদি (আ.) এবং ঈসা (আ.) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আনীত দ্বীন ইসলামের অনুসারী হবেন। ইমাম মাহদির পরিচয় ইমাম মাহদির প্রকৃত নাম হবে মুহাম্মাদ এবং পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ। তিনি ইমাম হাসান (রা.)-এর বংশধর হবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মাহদি আসবেন আমার বংশধর হতে। তাঁর কপাল হবে উজ্জ্বল এবং নাক হবে উন্নত। তিনি পৃথিবীকে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ দিয়ে পূর্ণ করে দিবেন, যেভাবে পৃথিবী যুলুম-নির্যাতনে পূর্ণ হয়েছিল।’ (আবু দাউদ) ইমাম মাহদি (আ.)-এর আগমন কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবী যখন যুলুম-নির্যাতন, যুদ্ধ-বিগ্রহ, দুর্নীতি, হিংসা ও হানাহানিতে ভরে যাবে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে চলে যাবে, তখন শুধু মুসলমানরাই নয়, বিশ্বের সকল নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিত জাতি একজন ত্রাণকর্তার আগমন কামনা করবেন। যিনি তাদেরকে অন্যায়-অবিচারের অন্ধকার থেকে মহামুক্তির আল োর দিকে পথ দেখাবেন। তখন উম্মতে মুহাম্মাদির মাঝে একজন ব্যক্তি আগমন করবেন। তিনি রমযান মাসে কাবা ঘর তাওয়াফ অবস্থায় প্রকাশ পাবেন। কাবা চত্বরে মুসলমানগণ তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণ করবেন। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে বছর রমযান মাসের প্রথম দিকে সূর্যগ্রহণ এবং রমযান মাসের শেষের দিকে চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদি’র আবির্ভাব হবে’। তিনি শেষ নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.)- এর উম্মাত হিসেবে এ দুনিয়াতে আসবেন। তিনি উম্মাতে মুহাম্মাদির নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন। ইসলাম ধর্মকে সংস্কার করবেন। ইসলামি শরিয়তের মাধ্যমে বিচার-ফয়সালা করবেন। পৃথিবী হতে যুলুম-নির্যাতন দূর করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন। ঈসা (আ.)- এর আগমন ইমাম মাহদি (আ.)- এর আবির্ভাবের সাত বছরের মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। দাজ্জাল ও তার বাহিনী মুসলমানদের উপরে অসহনীয় অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকবে। একদিন দু’জন ফেরেশতার কাঁধে ভর করে ঈসা (আ.) দামেস্কের একটি মসজিদে অবতরণ করবেন। তিনি উম্মাতে মুহাম্মাদি হিসেবে দুনিয়াতে আসবেন। নেমে এসে তিনি ইমাম মাহদি (আ.)- এর সাথে মুসাফাহা করবেন। এরপর ইমাম মাহদির পিছনে মুক্তাদি হয়ে আসরের সালাত আদায় করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সেদিন ত োমাদের অবস্থা কেমন হবে, যেদিন ত োমাদের মধ্যে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) অবতরণ করবেন এবং ত োমাদেরই মধ্য হতে একজন ত োমাদের ইমাম হবেন।’ (বুখারি) wkÿvel© 2024 14 ইসলাম শিক্ষা আখিরাতের প্রতি ইমান প্রিয় শিক্ষার্থী, ষষ্ঠ শ্রেণিতে তুমি আখিরাত জীবনের বিভিন্ন স্তর এবং ইমানের সাতটি বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জেনেছ ো। সপ্তম শ্রেণিতে ইমানের সাতটি বিষয়ের মধ্যে আল্লাহর প্রতি ইমান, ফিরিশতাগণের প্রতি ইমান, কিতাবসমূহের প্রতি ইমান-সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছ ো। এরই ধারাবাহিকতায় এ শ্রেণিতে তুমি আখিরাত জীবনের অংশ হিসেবে কিয়ামত, পুনরুত্থান ও হাশর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। এছাড়াও এ অধ্যায়ে তাকদিরের ওপর ইমান, শাফা‘আত এবং শিরক সম্পর্কে জানতে পারবে। জ োড়ায় কাজ কিয়ামত দিবসের তাৎপর্য এবং আমার বিশ্বাস উল্লিখিত শির োনামের আল োকে ত োমরা প্যানেল/জ োড়ায় আল োচনা কর ো। কিয়ামত ইসলামি আকিদা ম োতাবেক কিয়ামত বলতে মহাপ্রলয়, পুনরুত্থান অতঃপর হাশরের ময়দানে দণ্ডায়মান হওয়া বুঝায়। নিম্নে এ বিষয়গুল ো নিয়ে কিছু আল োচনা তুলে ধরা হল ো: (ক) মহাপ্রলয় কিয়ামত বা মহাপ্রলয় কখন সংঘটিত হবে মহান আল্লাহ তা গ োপন রেখেছেন। তিনি ছাড়া কেউ তা জানেন না। যখন আল্লাহর নির ্ধারিত সময় চলে আসবে তখন কিয়ামত সংঘটিত হবে। মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইসরাফিল (আ.) কর্ক তৃ শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার মাধ্যমে কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘটবে। এ মহাপ্রলয়ের দৃশ্য অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার সাথে সাথে সমস্ত মানুষ ভয়ে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মত ো ছুটাছুটি করতে থাকবে। তারা তাদের পরিবারের ল োকদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু তারা ফিরে যাবার অবকাশ পাবে না। বন্য পশুরা ভয়ে একত্রিত হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, ত োমরা ত োমাদের রবকে ভয় কর। নিশ্চয়ই কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার। যেদিন ত োমরা তা দেখবে, সেদিন প্রত্যেক স্তন্য দানকারিনী আপন দুগ্ধপ োষ্য শিশুকে ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক গর্ভধারিণী তার গর্ভপাত করে ফেলবে, তুমি দেখবে মানুষকে মাতাল সদৃশ, অথচ তারা মাতাল নয়।’ (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ১-২) সেদিন পৃথিবী প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে। আসমান ও জমিনে আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করবেন তারা ছাড়া সবাই বেহশুঁ হয়ে পড়বে। পর্বতমালা ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে এবং রঙিন পশমের wkÿvel© 2024 মত ো উড়তে থাকবে। সমুদ্রে আগুন জ্বলে ওঠবে। আকাশের আবরণ অপসারিত হয়ে গলিত তামার ন্যায় 15 আকাইদ হবে। সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে। নক্ষত্ররাজি বিচ্ছিন্ন হয়ে খসে পড়বে। চন্দ্র ও সূর্য একত্রিত হয়ে যাবে। সেদিন আকাশসমূহকে এমনভাবে গুটিয়ে নেওয়া হবে যেভাবে পুস্তকে লিখিত কাগজপত্র গুটিয়ে রাখা হয়। এভাবে কিয়ামত বা মহাপ্রলয়ের প্রথম পর্ব সংঘটিত হবে। এ মহাপ্রলয়ে বিশ্বাস করা ইমানের অংশ। (খ) পুনরুত্থান পুনরুত্থান অর্থ পুনরায় উত্থান, কবর হতে মৃতের উত্থান। মহান আল্লাহ মৃত্যুর পর মানুষকে পুনরায় জীবিত করবেন। মৃত্যুর পর পুনরায় জীবন লাভ তথা পুনরুত্থানে বিশ্বাস স্থাপন করা ইমানের অন্যতম প্রধান অঙ্গ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলুন, আল্লাহই ত োমাদেরকে জীবন দান করেন ও ত োমাদের মৃত্যু দান করেন। অতঃপর তিনি ত োমাদেরকে কিয়ামত দিবসে একত্রিত করবেন, যাতে ক োন ো সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। (সূরা আল-জাছিয়া, আয়াত: ২৬) শিঙ্গায় দ্বিতীয় ফুৎকারের পর পুনরুত্থান ও হাশর বা মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিনই বিচারের দিন। আখিরাত বা পরকালের অনন্ত জীবনের সূচনা এদিন থেকেই হবে। আল-কুরআনে এ দিনকে ‘ইয়াওমুল বা‘ছ’ বা পুনরুত্থান দিবস, হিসাব গ্রহণের দিবস, প্রতিদান দিবস ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যারা এই পুনরুত্থানে বিশ্বাস করে না তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রতিও বিশ্বাস রাখে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কাফিররা ধারণা করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন, নিশ্চয়ই হবে, আমার প্রতিপালকের শপথ, ত োমরা অবশ্যই পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর ত োমরা যা করতে ত োমাদেরকে সে সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।’ (সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ৭) বাড়ির কাজ ‘কিয়ামত সম্পর্কে পরিবারের বয় োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের ধারণা’ (প্রিয় শিক্ষার্থী, তুমি ত োমার প্রতিফলন ডায়েরিতে উপর োক্ত শির োনামের আল োকে ছকটি পূরণ করবে। এক্ষেত্রে, পরিবারের সদস্য/প্রতিবেশি/সহাপাঠীর ধারণা জানতে পার ো।) ক্রমিক পরিবারের সদস্য বিশ্বাস সঠিক/ভুল ইসরাফিল (আ.)-এর শিঙ্গায় ফুৎকারের ১. বড় ভাই সঠিক মাধ্যমে কিয়ামত শুরু হবে। ২. ৩. wkÿvel© 2024 ৪. 16

Use Quizgecko on...
Browser
Browser