Introduction to Accounting PDF

Document Details

HandsomeBoolean

Uploaded by HandsomeBoolean

Tags

accounting bangla business finance

Summary

This document provides an introduction to accounting, explaining its principles and importance in daily life, businesses, and society. It explores the concept of accounting as a process for recording and analyzing financial transactions. Furthermore, it highlights the significance of accounting in various aspects of life, like personal finance and business management.

Full Transcript

# প্রথম অধ্যায় ## হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থ সম্পর্কিত ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এ সকল ঘটনার সংখ্যা অগণিত ও বৈচিত্র্যময়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল ব্যতীত এ সকল আর্থিক ঘটনার সামগ্রিক ফলাফল ও প্রভাব জানা কঠিন। হিসাববিজ্ঞান হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সংঘটিত আর্থ...

# প্রথম অধ্যায় ## হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থ সম্পর্কিত ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এ সকল ঘটনার সংখ্যা অগণিত ও বৈচিত্র্যময়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল ব্যতীত এ সকল আর্থিক ঘটনার সামগ্রিক ফলাফল ও প্রভাব জানা কঠিন। হিসাববিজ্ঞান হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সংঘটিত আর্থিক ঘটনাসমূহের সামগ্রিক প্রভাব এবং ফলাফল নির্ণয়ের পদ্ধতি ও কৌশল আলোচনা করা হয়। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন পক্ষ হিসাব তথ্য জানতে সর্বদা আগ্রহী। তাই হিসাববিজ্ঞান আর্থিক লেনদেনসমূহের সংরক্ষণ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে এদের প্রভাব ও ফলাফল নির্ণয় করে বিভিন্ন পক্ষকে প্রতিবেদন আকারে অবহিত করে। ## এই অধ্যায় শেষে আমরা- * হিসাববিজ্ঞানের ধারণা বর্ণনা করতে পারব। * হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে পারব। * হিসাববিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারব। * হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ ব্যাখ্যা করতে পারব। * হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করতে পারব। * মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে পারব। * সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাবব্যবস্থার সম্পর্ক বর্ণনা করতে পারব। * দৈনন্দিন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে হিসাব রাখতে আগ্রহী হব। # হিসাববিজ্ঞানের ধারণা হিসাববিজ্ঞান এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি যেমন- খরচ পরিশোধ, আয় আদায়, সম্পদ ক্রয় ও বিক্রয়, পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়, দেনাদার হতে আদায় এবং পাওনাদারকে পরিশোধ ইত্যাদি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়। হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে ব্যবসায়ের আর্থিক লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ, শ্রেণিবদ্ধকরণ, ব্যাখ্যাকরণের পদ্ধতি আলোচনা করা হয়। এর ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন নির্ণয় করা যাবে এবং এসব তথ্যাবলি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে। হিসাববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানা যায়। তাই হিসাববিজ্ঞানকে 'ব্যবসায়ের ভাষা' বলা হয়। হিসাববিজ্ঞানের মাধ্যমে আর্থিক ঘটনাসমূহ হিসাবের নির্দিষ্ট বইতে যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ, শ্রেণিবদ্ধ ও বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা যায়। ## কাজ: একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলীর তালিকা কর। # হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা 1. লেনদেনসমূহ সঠিকভাবে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধকরণ ব্যতীত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়। তাই হিসাববিজ্ঞানের প্রথম উদ্দেশ্য লেনদেনসমূহকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিকভাবে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা। 2. হিসাববিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা। লাভ-ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব। যাবতীয় আয় ও ব্যয় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতি নির্ণয় করা সম্ভব। 3. প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করা সম্ভব। 4. ব্যয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব। হিসাববিজ্ঞান ব্যবসায়ের যাবতীয় ব্যয় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 5. ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধে হিসাববিজ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। যথাযথ হিসাবরক্ষণের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধের পাশাপাশি তা নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব। 6. আর্থিক তথ্যাবলি সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানানো এবং ব্যবসায়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবহার করা। 7. প্রতিষ্ঠানের একাধিক বছরের আর্থিক বিবরণীর তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উন্নতি ও অবনতির বিভিন্ন দিক চিহ্নিতপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। 8. বিভিন্ন সেবামূলক অমুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠান যেমন- স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ক্লাব ও সোসাইটিতে বিভিন্ন উৎস হতে অর্থের আগমন ও বহির্গমনের পরিমাণ সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে নির্দিষ্ট সময়ান্তে এ সকল প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন হিসাবের উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা যায়। 9. সরকার বিভিন্ন উৎস হতে কর, শুল্ক, ভ্যাট ধার্যের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করে এবং বিভিন্ন নিয়মিত ও উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয় করে। সরকারের এসকল কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য হিসাববিজ্ঞান সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া হিসাবের বই এবং সংশ্লিষ্ট দলিলাদি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজে লাগে যেমন ব্যাংক বা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ, পণ্যের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ, ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নির্ধারণ ইত্যাদি। সুন্দর, সুশৃংখল ও মিতব্যয়ী জীবন গঠনের জন্য হিসাব রাখার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। যথাযথ হিসাব না রাখলে প্রতিষ্ঠানের ভালো ও খারাপ দিকগুলো জানা যাবে না। সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে অপচয় রোধ এবং আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা সম্ভব। ## কাজ: তোমার দৈনন্দিন জীবনে হিসাববিজ্ঞান কীভাবে সাহায্য করতে পারে বলে মনে কর? # হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সভ্যতার সূচনা হতে মানুষ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা হিসাব গাছের গায়ে, গুহায় বা পাথরে চিহ্ন দিয়ে রাখত। এক সময় মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করল এবং কৃষিকাজ আরম্ভ করল। ঘরে দাগ কেটে এবং রশিতে গিঁট দিয়ে ফসল ও মজুদের হিসাব রাখা শিখল। আস্তে আস্তে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, সমাজ বিস্তার লাভ করে, বিনিময় প্রথা চালু হয়, মুদ্রার প্রচলন হয় এবং ব্যবসায়-বাণিজ্য শুরু হয়। ক্রয়-বিক্রয়, জমা-খরচ, দেনা-পাওনা এবং অন্যান্য লেনদেন হিসাবের বইতে অঙ্কের মাধ্যমে লেখা শুরু হয়। ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে লুকা প্যাসিওলি নামে একজন ইতালীয় গণিতবিদ 'সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা' নামে একটি গ্রন্থ লিখেন এবং এতে হিসাবরক্ষণের মূল নীতি “দুতরফা দাখিলা (Double Entry)” ব্যাখ্যা করা হয়। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং ব্যবসায়-বাণিজ্যের অগ্রগতি হয় এবং এরই ফলে হিসাববিজ্ঞানেরও উন্নতি হয়। ব্যবসায় যেমন ছোট থেকে বড় হতে থাকে তেমনি এর পরিধিও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, অব্যবসায়ী, সরকারি, বেসরকারি, মুনাফাভোগী ও অমুনাফাভোগী সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানে হিসাববিজ্ঞানের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির সাথে হিসাববিজ্ঞানের উন্নতি সম্পর্কিত। বর্তমান কম্পিউটারের যুগে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে হিসাবের বই হাতে লিখার পরিবর্তে কম্পিউটারে করা হয়। ফলে সময় ও শ্রম লাঘবের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত দ্রুত গ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সহজ হয়। ## কাজ: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কীভাবে হিসাববিজ্ঞানের উন্নতি ঘটায়? # হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারী: ## অভ্যন্তরীণ ব্যবহারকারী * **মালিক ও ব্যবস্থাপক**: হিসাবরক্ষক হিসাবের বই এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তৈরি করেন। ব্যবসায়ের মালিক এবং তাঁর ব্যবস্থাপক এসব হিসাব বিবরণী থেকে ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতি ও আর্থিক অবস্থার পরিমাণ ও পরিবর্তন জানতে পারেন। ফলে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। ## বাহ্যিক ব্যবহারকারী 1. **ঋণ প্রদানকারী**: প্রতিষ্ঠানকে ঋণ সরবরাহের পূর্বে ঋণ পরিশোধ ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ের যাবতীয় হিসাব পর্যালোচনা করেই ঋণ সরবরাহ করে থাকে. 2. **সরকার**: সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ের হিসাব হতে যথাযথভাবে শুল্ক, ভ্যাট, কর এবং আয়কর পরিশোধ করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। 3. **পাওনাদার**: বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের পূর্বে ব্যবসায়ের দায় পরিশোধ ক্ষমতা যাচাই করেই সরবরাহকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহ করেন। সম্প্রক্ষিত হিসাব হতে সহজেই এই ধারণা লাভ করা সম্ভব। 4. **কর্মচারী ও কর্মকর্তা**: ব্যবসায়ের শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ তাদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার যথার্থতা বিচার এবং ন্যায্য অংশ আদায়ের জন্য আর্থিক বিবরণীর সহায়তা গ্রহণ করে। এছাড়া হিসাব নিরীক্ষক, বিনিয়োগকারী, ভোক্তা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হিসাব তথ্য ব্যবহার করে থাকেন। ## কাজ : হিসাব তথ্যের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যবহারকারীদের পৃথক তালিকা প্রস্তুত কর। # সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাবব্যবস্থার সম্পর্ক হিসাববিজ্ঞান শুধু মুনাফা নির্ণয়ের জন্যই ব্যবহার করা হয় না। মুনাফা নির্ণয়ের পাশাপাশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সমাজ এবং পরিবেশেরও যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, হিসাববিজ্ঞান সেদিকটিতেও অবদান রাখে। নিচের উদাহরণগুলো থেকে সমাজ ও পরিবেশ সম্পর্কে হিসাববিজ্ঞানের করণীয় বুঝা যাবে। 1. জলবায়ুদূষণ রোধে প্রতিষ্ঠান কিছু অর্থ খরচ করবে এবং হিসাববক্ষক তার হিসাব রাখবে এবং সে হিসাব থেকে বুঝা যাবে ব্যবসার মালিক সমাজ এবং পরিবেশ সম্পর্কে কতটুকু সজাগ। বিশেষ করে তেল কোম্পানিগুলো বায়ুদূষণ রোধে অনেক ব্যয় করে থাকে। 2. শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া আশপাশের পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। ব্যবসায়ের মালিক ও হিসাবরক্ষককে এর প্রতিরোধে অর্থ খরচ করতে হয়, হিসাব রাখতে হয় এবং এ বিষয়ে সরকারের নিয়মনীতিকে অনুসরণ করে চলতে হয়। 3. পণ্য তৈরিতে স্বাস্থ্যসম্মত কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, যথাসম্ভব কম বিদ্যুৎ খরচ করা হয়, যন্ত্রপাতির শব্দ কম হতে হয় এবং আবর্জনা সঠিক স্থানে ফেলতে হয়। এসব কাজ করার জন্য কিছু অর্থ খরচ হয়। হিসাবরক্ষককে এ খরচের জন্য অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি ব্যয় করা অর্থের যথাযথ হিসাব রাখতে হয়। 4. প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে সমাজের জন্য কিছু খরচ করতে হয়, যেমন- গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান। এ জন্য প্রতিষ্ঠান বছরে কত টাকা খরচ করল তার হিসাব রাখতে হয়। ## কাজ: সমাজ পরিবেশের হিতকর কাজ করতে একটি ব্যবসায়ের কী কী ব্যয় হয় তার একটি তালিকা কর। # মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ায় হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা মূল্যবোধ হলো ব্যক্তি ও সমাজের চিন্তা চেতনা, বিশ্বাস, ধ্যান ধারণা প্রভৃতির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা একটি মানদণ্ড, যার দ্বারা মানুষ কোনো বিষয়ের ভালো-মন্দ বিচার করে ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করে । নিচে মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞান কীভাবে সহায়তা করে তা ব্যাখ্যা করা হলো- 1. **সততা ও দায়িত্ববোধের বিকাশ**: হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের রীতি-নীতি ও কলাকৌশল যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি, সম্পদ ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং হিসাবের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়। আর বছরের পর বছর এর অনুসরণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও দায়িত্ববোধ বিকশিত হয়। 2. **ঋণ পরিশোধ সচেতনতা সৃষ্টি**: হিসাববিজ্ঞান ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ঋণ পরিশোধে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং তাদের মূল্যবোধ জাগ্রত করে। ফলে ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। 3. **সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টি**: সরকারের আয়ের অন্যতম উৎসগুলো হচ্ছে ভ্যাট, কাস্টমস ডিউটি, আয়কর প্রভৃতি। হিসাববিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সঠিক আয় ও ব্যয় নির্ণয় করা সম্ভব। ফলে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। 4. **জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রতিরোধ**: সুষ্ঠু হিসাবব্যবস্থা প্রচলিত থাকলে সম্ভাব্য শাস্তি ও দুর্নামের ভয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে জালিয়াতি, তহবিল তছরুপ, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রবণতা হ্রাস পায়। # জবাবদিহিতায় হিসাববিজ্ঞান কোনো কার্য সম্পাদনের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট হলে কাজের ফলাফলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার কাজের জন্য দায়ী করা যায়। নিজের কাজের জন্য তৃতীয় পক্ষের নিকট দায়বদ্ধতাই জবাবদিহিতা। এই জবাবদিহিতা কার্যক্রমকে গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো— * **ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা**: আধুনিক বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থায় আয়, ব্যয় ও বিনিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিগণকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়, যাতে করে দায়িত্বপালনে পূর্ণ মনোযোগ প্রদান সম্ভব হয় এবং নির্দিষ্ট হিসাবকাল শেষে অর্পিত দায়িত্বের ফলাফল সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের জবাব প্রদানেও সক্ষম হয়. * **মালিক, ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের নিকট জবাবদিহিতা**: প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের এই মর্মে জবাবদিহি করতে হয় যে প্রস্তুতকৃত বিবরণীতে প্রতিষ্ঠানের সঠিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে কি না, বিনিয়োগকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে, অর্জিত মুনাফা ও প্রাক্কলিত মুনাফার সংগতি রক্ষা হয়েছে কি না ইত্যাদি. এরূপ জবাবদিহিতার অনুপস্থিতিতে আর্থিক অনার্থিক সকল ক্ষেত্রে চরম বিশৃঙ্খলা ও অবনতি পরিলক্ষিত হয়। * **সরকারের নিকট জবাবদিহিতা**: সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করে প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে কি না এবং যথাযথভাবে শুল্ক, ভ্যাট ও কর পরিশোধ করা হচ্ছে কি না তা দেখার অধিকার সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের রয়েছে. যথাযথ হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে এই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব. ## বহুনির্বাচনি প্রশ্ন 1. হিসাববিজ্ঞান — * সমাজের একের সাথে অন্যের সম্পর্ক আলোচনা করে * পণ্য ক্রয় এবং বিক্রয়ের হিসাব রাখে * উৎপাদনব্যবস্থার আলোচনা করে * একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ও ফলাফল নিরূপণ করে

Use Quizgecko on...
Browser
Browser