Creative Question - Class 9 Islamic History Annual Exam (1) PDF
Document Details
Uploaded by Deleted User
Tags
Summary
This document contains creative questions from a class 9 Islamic History annual exam. The questions cover the topic of life of Prophet Muhammad (s).
Full Transcript
## সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ### খ. সৃজনশীল প্রশ্ন: মান-৭০ #### ১১টি প্রশ্ন থেকে ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে- ##### (খ) হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মক্কা জীবন (৫৭০-৬২২ খ্রি:) ## পঞ্চম পরিচ্ছেদ ### আবির্ভাব ও পরিচয় **প্রশ্ন ১** ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জনৈক বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মহান...
## সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ### খ. সৃজনশীল প্রশ্ন: মান-৭০ #### ১১টি প্রশ্ন থেকে ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে- ##### (খ) হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মক্কা জীবন (৫৭০-৬২২ খ্রি:) ## পঞ্চম পরিচ্ছেদ ### আবির্ভাব ও পরিচয় **প্রশ্ন ১** ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জনৈক বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মহানবী (স)-এর নবুয়তপ্রাপ্তি পূর্বযুগ, তাঁর চরিত্র, কর্মকান্ড ও গুণাবলি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। একপর্যায়ে তিনি তৎকালীন আরবের বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, গোত্রকলহ ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। পরিশেষে তিনি বলেন, তৎকালীন আরবের এসব অবস্থা নিরসনে সর্বশ্রেষ্ঠ নবীরূপে মহানবী (স) আবির্ভূত হন। * মহানবী (স)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বযুগ কী নামে পরিচিত ছিল? * সে যুগের ব্যাপ্তিকাল কত ছিল? * উক্ত যুগের মতো উদ্ভূত কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে তোমার করণীয় কী? -ব্যাখ্যা কর। * “মহানবী (স) সর্বশ্রেষ্ঠ নবীরূপে বিশ্বে আবির্ভূত হন"- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। **১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর** * মহানবী (স)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বযুগ **'আইয়ামে জাহেলিয়া'** তথা অন্ধকার যুগ নামে পরিচিত ছিল। * সে যুগের ব্যাপ্তিকাল প্রায় এক শতাব্দী। * অন্ধকার যুগের ব্যাপ্তিকাল সম্পর্কে একাধিক অভিমত পরিলক্ষিত হয়। যেমন- * কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, হযরত আদম (আ) হতে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত সময়। * কেউ কেউ বলেন, হযরত ঈসা (আ)-এর পর থেকে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাবের মধ্যবর্তী সময়। * ঐতিহাসিক নিকলসন (Nicholson) ইসলামের আবির্ভাবের পূর্ববর্তী এক শতাব্দীকালকে অন্ধকার যুগ বলে উল্লেখ করেছেন। আর ঐতিহাসিক হিট্টিসহ অনেকেই এ মত সমর্থন করেছেন। এ মতটিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। * সারকথা: অন্ধকার যুগের ব্যাপ্তিকাল হলো- ইসলামের আবির্ভাবের পূর্ববর্তী এক শতাব্দীকাল। * উক্ত যুগ তথা জাহেলিয়া যুগের মতো উদ্ভূত কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমি ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে তা মোকাবিলা করব। * উদ্দীপকে বর্ণিত আলোচনা সভায় জনৈক ইসলামি চিন্তাবিদ মহানবী (স)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বযুগ তথা আইয়ামে জাহেলিয়া যুগ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি জাহেলিয়া যুগের বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, গোত্রকলহ ইত্যাদি অপকর্মের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। জাহেলিয়া যুগের মতো পরিস্থিতি বর্তমান বিশ্বে হওয়া আমাদের কারো কাম্য নয়। * ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অন্ধকার যুগ তথা আরবের আইয়ামে জাহেলিয়া যুগ ছিল বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, গোত্রকলহসহ নানা অনাচার-অবিচারে নিমজ্জিত। উক্ত অন্ধকার যুগের মতো কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমি যে সকল পদক্ষেপ ও কর্মসূচি অবলম্বন করব তা নিম্নরূপ- * আমার প্রথম কাজ হবে দ্বীন ইসলামের মর্মবাণী মানুষের সামনে তুলে ধরে ইসলামের ছায়াতলে জনগণকে আশ্রয় গ্রহণ করার আহ্বান জানানো। * প্রতিটি মুসলিম তথা মানবজাতিকে সুশিক্ষিত ও ইসলামি জ্ঞানার্জনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করব। * বিশৃঙ্খল উম্মাহকে একটি শক্তিশালী সংগঠনের আওতায় ঐক্যবদ্ধ করব। * আধুনিক জাহেলিয়াতের সকল চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় প্রতিটি মুসলিমকে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী হিসেবে গড়ে তুলব। * সমাজ থেকে মদ, সুদ, ঘুষসহ যাবতীয় অনাচার দূর করে সংস্কারের মাধ্যমে সমাজকে ইসলামের আলোকে গড়ে তুলব। * সারকথা: উক্ত যুগের মতো তথা জাহেলিয়া যুগের মতো উদ্ভূত কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমি ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে তা মোকাবিলা করব। * পৃথিবীতে যত নবী-রাসূল আগমন করেন তাঁদের সকলের মধ্যে মহানবী (স) সর্বশ্রেষ্ঠ নবীরূপে আবির্ভূত হন। * উদ্দীপকে বর্ণিত আলোচনা সভায় জনৈক ইসলামি চিন্তাবিদ মহানবী (স)-এর চরিত্র, কর্মকান্ড ও গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। রাসূল (স) ছিলেন মানবজাতির কল্যাণকামী ও পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পথপ্রদর্শক। রাসূল (স) ছিলেন সর্বশেষ নবী। তাঁর আগে অনেক নবী-রাসূল পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি সকল নবী-রাসূলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন। * অনুরূপভাবে বলা যায়, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাবকাল ছিল জাহেলিয়াতের যুগে। তখন আরব উপদ্বীপসহ সমগ্র পৃথিবী অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। সে সময়ে মিথ্যা, পাপাচার, হত্যা, লুণ্ঠন, মদ্যপান, জুয়া, যৌন অনাচার, কথায় কথায় ঝগড়া-বিবাদ এমনকি যুদ্ধবিগ্রহ পর্যন্ত ঘটে যেত। কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাদেরকে হত্যা করা হতো বা জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। মানবতার এ চরম দুর্দিনে আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মদ (স)-কে পাঠালেন বিশ্বমানবতার মুক্তি ও শান্তির দূত হিসেবে। অংশীদারত্ব, পৌত্তলিকতা ও জড়পূজা থেকে মানবজাতিকে একত্ববাদের ও ন্যায়ের পথপ্রদর্শন করতে এবং বিশ্বের নির্যাতিত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষকে মুক্তি দিতে। মুক্তি ও শান্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মধ্যে ছিল সকল মানবিক গুণের বিকাশ। তাই তিনি সমগ্র বিশ্বের মানুষের জন্য সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পথপ্রদর্শক। তিনি ছিলেন মানবজাতির কল্যাণকামী। * অতএব এটা স্পষ্ট যে, মহানবী (স) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তাঁর আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি মানবতার ইতিহাসে সর্বাধিক সফল ঘটনা। দাসত্বপ্রথা মোচন, দারিদ্র্য মোচন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন সফল নেতা। * সারকথা: হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল। তার আগমনে জাহেলিয়াতের অবসান ঘটে। তিনি মানবজাতির কল্যাণকামী সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। তাঁর সংস্কার কর্মসূচির ফলে তিনি সার্বিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। **প্রশ্ন ২** আবদুল্লাপুর গ্রামে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে সর্বদা ঝগড়াঝাটি মারামারি লেগেই থাকত। তাদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই ছিল না। এমন পরিস্থিতি অবলোকন করে এলাকার যুবক হুমায়ন খুবই মর্মাহত হন। এ পরিস্থিতি থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষার জন্য হুমায়ন কিছু যুবকের সমন্বয়ে একটি ভ্রাতৃসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এ সংঘের উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও নিঃস্ব অসহায়কে সহায়তা করা। অন্যদিকে গ্রামের মাদরাসা ভবন উদ্বোধন নিয়ে মাতবরদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এমতাবস্থায় হুমায়ন সকল মতবিরোধ অবসান করে সকলকে সাথে নিয়ে মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে সক্ষম হন। * রাসূল (স) কত খ্রিস্টাব্দে হিজরত করেন? * হিলফ উল-ফুযুল বলতে কী বুঝ? * হুমায়নের প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃসংঘের সাথে পাঠ্যবইয়ের কোন সংস্থার মিল খুঁজে পাওয়া যায়? তার উদ্দেশ্যাবলি আলোচনা কর। * মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এর সাথে রাসূল (স)-এর জীবনের কোন ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে? তোমার উত্তরের সপক্ষে মতামত দাও। **২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর** * রাসূল (স) **৬২২** খ্রিস্টাব্দে হিজরত করেন। * হিলফ-উল-ফুযুল বলতে মহানবী (স) প্রতিষ্ঠিত শান্তি সংঘকে বুঝায়। * হিলফ-উল-ফুযুল আরবি শব্দ। এর অর্থ শান্তিসংঘ। ইসলামপূর্ব আরব সমাজ ছিল অন্যায়, অত্যাচার, ব্যভিচার, হত্যা, লুটতরাজ প্রভৃতি অপরাধ ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত। মদ, জুয়া আর নারী ছিল তাদের নিত্যদিনের সাথি। আরব সমাজ থেকে এসব অন্যায়, অপকর্ম, অনাচার, পাপাচার ও ব্যভিচার দূরীভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হযরত মুহাম্মদ (স) কতিপয় শান্তিকামী যুবকের সমন্বয়ে ৫৯৫ খ্রিস্টাব্দ যে শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাসে তা হিলফুল ফুযুল নামে পরিচিত। * সারকথা: হযরত মুহাম্মদ (স) কতিপয় শান্তিকামী যুবকের সমন্বয়ে ৫৯৫ খ্রিস্টাব্দ যে শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাসে তা হিলফুল ফুযুল নামে পরিচিত। * হুমায়নের প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃসংঘের সাথে পাঠ্যবইয়ের হিলফ-উল ফুযুল-এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। * ইসলামের ইতিহাসে হিলফ-উল ফুযুল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফুজ্জার যুদ্ধের বীভৎসতা ও সহিংসতা দেখে মহানবী (স)-এর মন অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়। তখন তিনি আর্তপীড়িত, অসহায়, গরিব, দুর্বল ও অত্যাচারিতকে জালিম ও ধনীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং আরবে শান্তি বজায় রাখার জন্য কিছু সংখ্যক যুবকদের নিয়ে হিলফ-উল ফুযুল নামে একটি কমিটি গঠন করেন। * উদ্দীপকে আবদুল্লাহপুর গ্রামে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে সর্বদা ঝগড়াঝাটি মারামারি লেগেই থাকত। তাদের মধ্যে নীতি নৈতিকতার কোনো বালাই ছিল না। এ পরিস্থিতি থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষার জন্য হুমায়ন কিছু যুবকের সমন্বয়ে একটি ভ্রাতৃসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। তেমনিভাবে হযরত মোহাম্মদ (স) আর্তপীড়িত, অসহায়, গরিব ও দুর্বল ও অত্যাচারিতকে জালিম/ও ধনীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য ৫৯৫ খ্রি: হিলফ-উল-ফুযুল নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এ সংঘটির উদ্দেশ্য ছিল নিঃস্ব, অসহায় ও দুর্গতদের সেবা করা। অত্যাচারিতকে সাহায্য করা। অত্যাচারীকে বাধা দেওয়া। সমাজে শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে সম্প্রীতি রক্ষা করা। সুতরাং হুমায়নের প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃ সংঘের সাথে পাঠ্যবইয়ের মহানবী প্রতিষ্ঠিত হিলফ-উল-ফুযুল সংস্থার মিল পাওয়া যায়। * সারকথা: হযরত মোহাম্মদ (স) আর্ত-পীড়িত, অসহায়, গরিব ও দুর্বল ও অত্যাচারিতকে জালিম ও ধনীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য হিলফ-উল-ফুযুল নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এ সংঘটির উদ্দেশ্য ছিল নিঃস্ব, অসহায় ও দুর্গতদের সেবা করা হবে। মহানবী প্রতিষ্ঠিত শান্তিসংঘ ও হুমায়ন কতৃক প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃসংঘ তাদের উদ্দেশ্যসমূহ একই ছিল। * মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এর সাথে রাসূল (স)-এর জীবনের হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের সাদৃশ্য রয়েছে। * হাজরে আসওয়াদ স্থাপন তৎকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে যুদ্ধ বাধার উপক্রম হলে জ্ঞানবৃদ্ধ আবু উমাইয়া সকলকে বলেন, যে ব্যক্তি আগামীকাল ভোরে সর্বপ্রথম কাবাঘরে প্রবেশ করবে, তার ওপরই এ ভার অর্পণ করা হবে। পরদিন মহানবী (স) প্রথম কাবাঘরে প্রবেশ করেন। তখন রাসূল (স) কে হাজরে আসওয়াদ স্থাপন এর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। * উদ্দীপকে গ্রামের মাদরাসা ভবন উদ্বোধন নিয়ে মাতবরদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এমতাবস্থায় হুমায়ন সকল মতবিরোধ অবসান করে সকলকে সাথে নিয়ে মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে সক্ষম হন। অনুরূপ হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে রাসূল (স)-এর সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের কাজ শেষ হয়। এই হাজরে আসওয়াদের সাথে সামাজিক মর্যাদা ও বংশগত প্রাধান্যের বিষয় সম্পৃক্ত ছিল। তাই পাথরটিকে কে যথাস্থানে স্থাপন করবেন তা নিয়ে মহা বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। প্রত্যেক গোত্রের লোকই দাবি করতে লাগল যে, তাঁরাই পাথরটি স্থাপনের একমাত্র অধিকারী। এ নিয়ে তুমুল দ্বন্দ্ব কলহ শুরু হয়। চারদিন অতিবাহিত হবার পরও মীমাংসার লক্ষণ দেখা গেল না। তখন তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে লাগল। যুদ্ধ যখন একেবারে অনিবার্য হয়ে পড়ল তখন জ্ঞানবৃদ্ধ আবু উমাইয়া সকলকে আহবান করে বললেন, স্থির হও, স্থির হও আমার কথা শোন। বৃদ্ধের গভীর মর্ম বেদনাপূর্ণ গম্ভীর আহ্বানে সকলে ফিরে দাঁড়াল। তখন তিনি সকলকে বুঝিয়ে বললেন এবং প্রস্তাব দিলেন, যে ব্যক্তি আগামীকাল সর্বপ্রথম কাবা গৃহে প্রবেশ করবে তিনিই এ বিবাদের ফয়সালা দেবেন। সকলেই এই প্রস্তাব মেনে নেয়। পরদিন হযরত রাসূল (স) সর্বপ্রথম কাবাঘরে প্রবেশ করে এবং সকলেই বলে ওঠে আমরা তাঁর মীমাংসায় সম্মত। তখন রাসূল (স) নিজেই হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। * উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় এর স্থাপন নিয়ে বিতর্ক হলে মহানবী (স)-এর দূরদর্শী চিন্তায় সে সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। তাই উদ্দীপকের মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ঘটনার সাথে এটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। * সারকথা: উদ্দীপকে গ্রামের মাদরাসা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন নিয়ে। মাতবরদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এমতাবস্থায় হুমায়ন সকল মতবিরোধ অবসান করে অনুরূপ হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে হযরত রাসূল (স)-এর সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের কাজ শেষ হয়। **প্রশ্ন ৩** কলহ ও বিবাদপূর্ণ নিঝুমদ্বীপে দীর্ঘদিন যাবৎ সাধারণ মানুষ অসহায় জীবনযাপন করে আসছে। চুরি-ডাকাতি, খুন-রাহাজানি সেখানে নিত্যদিনের ঘটনা। কারো সাহায্যে কেউ আসে না। সদ্য যৌবনে পদার্পণ করা আবদুর রহমান এসব দেখে বড় হয়েছে। তার মন ব্যাকুল হয়ে পড়ে দ্বীপবাসীর করুণ পরিণতি দেখে। ক্রমান্বয়ে সে মানুষের দুঃখ দুর্দশা মুছতে এগিয়ে আসে। সকলকে ডাকতে থাকে সত্য ও সুন্দরের দিকে। পথ দেখায় আলোকিত ভবিষ্যৎ-এর। পাড়া-প্রতিবেশী তার আচার-আচরণে মুগ্ধ। সকলে তাকে শ্রেষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী বলে স্বীকৃতি দেয়। তিনি বললেন হযরত মুহাম্মদ (স) মানব জাতির আদর্শ তোমরা সে আদর্শ অনুসরণ কর। তোমাদের মাঝে শান্তি ফিরে আসবে। * বাল্যকাল থেকে লোকজন হযরত মুহাম্মদ (স)-কে কী বলে ডাকত? * হযরত মুহাম্মদ (স) যখন আবির্ভূত হলেন তখন আরবের অবস্থা কীরূপ ছিল? * আবদুর রহমানের আচরণে কার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা কর। * উদ্দীপকের উক্তি "হযরত মুহাম্মদ (স) সমগ্র মানবজাতির জন্য আদর্শ" তুমি একমত? তোমার মতামত ব্যক্ত কর। **৩নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর** * বাল্যকাল থেকে লোকজন হযরত মুহাম্মদ (স)-কে **'আল-আমীন'** বলে ডাকত। * হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাবের সময় আরবসহ সমগ্র পৃথিবী অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। * সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাব কাল ছিল জাহেলিয়াতের যুগে। তখন আরব উপদ্বীপসহ সমগ্র পৃথিবী অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। সে সময়ে মিথ্যা, পাপাচার, হত্যা, লুণ্ঠন, মদ্যপান, জুয়া, যৌন অনাচার, কথায় কথায় ঝগড়া-বিবাদ এমনকি যুদ্ধ-বিগ্রহ পর্যন্ত ঘটে যেত। কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাদেরকে হত্যা করা হতো বা জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। মানবতা বলতে যা বোঝায় তা ছিল তাদের মধ্যে অনুপস্থিত। এক কথায়, মানুষ আল্লাহর বিধান এবং রাসূলগণের আদর্শ ও সত্যের বাণী ভুলে গিয়ে পাশবিকতায় লিপ্ত ছিল। * সারকথা: হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাবের সময় আরবসহ সমগ্র পৃথিবী অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। * কলহ ও বিবাদপূর্ণ নিঝুম দ্বীপের যুবক আবদুর রহমানের আচরণে শান্তির অগ্রদূত সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। * উদ্দীপকের আবদুর রহমানের জীবনে মহানবী (স)-এর সকল গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়, যেগুলো রাসূল (স)-এর জীবনে দেখা যায়। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন মানবতার প্রতি সহৃদয়বান ও চিন্তাশীল। মানুষের দুর্দশা দেখে ছোটবেলা থেকেই তাঁর কচি মন ব্যথিত হতো। * উদ্দীপকে উল্লিখিত আবদুর রহমানের অনুরূপে রাসূল (স) শৈশবকালেই মানুষের জীবনকর্ম সম্পর্কে গভীর চিন্তা করতেন। চাচা আবু তালেবের সঙ্গে মাত্র বারো বছর বয়সে বাণিজ্য উপলক্ষে সিরিয়া ভ্রমণে খোদাদ্রোহী সামুদ জাতির ধ্বংসাবশেষ অবলোকন ও প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য দর্শনে তাঁর মন এক পরম সত্তার সান্নিধ্য পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। আরবরা মূর্তিপূজা করত। এ মূর্তিপূজা তাঁকে ব্যথিত করত। তিনি এর অসারতা প্রমাণের জন্য উপায় আবিষ্কার করতে থাকেন। তিনি জগৎ সৃষ্টির রহস্য জানতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন। তিনি গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে হেরা গুহায় ধ্যান করতেন। আরবদেশে প্রচলিত নানা অনাচার, কদাচার, হিংসা বিদ্বেষ দেখে তিনি কষ্ট অনুভব করতেন এবং কিভাবে মানবতার মুক্তি সম্ভব সে বিষয়ে চিন্তা করতেন। * সারকথা: আবদুর রহমানের আচরণে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে ছোটবেলা থেকেই মহানবী (স)-এর মন ব্যথিত হতো। মানুষের জীবনকর্ম সম্পর্কে তিনি গভীরভাবে চিন্তা করতেন। * "হযরত মুহাম্মদ (স) সমগ্র মানবজাতির জন্য আদর্শ" -উক্তিটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। * মহানবী (স)-এর মহান জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। শৈশব, কৈশোর, যৌবনের কোনো মনযিলে তিনি ন্যায় থেকে বিচ্যুত হন নি। তাঁর হাবভাব, চালচলন, কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার অন্ধকার সমাজকে আলোর সন্ধান দিয়েছিল। তিনি ছিলেন দূরদর্শিতা, সত্যপ্রিয়তা এবং মানবকল্যাণে চিন্তাশীলতার এক সুউচ্চ মিনার। তাঁর চিন্তার পরিচ্ছন্নতা, কর্মপ্রচেষ্টার পরিপক্বতা, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের পবিত্রতা তাঁকে সমগ্র মানবজাতির আদর্শে পরিণত করেছে। * প্রদত্ত উদ্দীপকের আবদুর রহমান ছিলেন সত্যবাদী ও আমানতদারি। তাকে কখনো মিথ্যা স্পর্শ করে নি। তাঁর কাছে কেউ কিছু আমানত রাখলে তিনি চাওয়া মাত্রই ফেরত দিতেন। * সমাজে সকলের মনে সে আদর্শ চরিত্রের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অনুরূপভাবে বিশ্বের সর্বকালের সমগ্র মানবজাতির আদর্শ পুরুষ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)। শৈশবে তিনি ছেলেদের সাথে অহেতুক খেলাধুলা বা পথে পথে ঘুরে বেড়াতেন না; বরং তিনি নির্জনতায় নিমগ্ন থেকে সৃষ্টি, সৃষ্টিকর্তা, মানুষ ও তাদের প্রকৃতি এবং তার কর্তব্যকর্ম নিয়ে চিন্তা করতেন। * উপর্যুক্ত আলোচনায় বলা যায়, মানব সমাজের, মানবজাতির সকল দিক ও বিভাগের জন্য অনুপম আদর্শের একমাত্র বাতিঘর সরওয়ারে কায়েনাত রাসূলে করিম হযরত মুহাম্মদ (স)। একমাত্র তিনিই সমগ্র মানবজাতির আদর্শ। * সারকথা: 'হযরত মুহাম্মদ (স) সমগ্র মানবজাতির জন্য আদর্শ, -উক্তিটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। কেননা মানব চরিত্রের যত সদগুণ থাকতে পারে, ত