NCTB Bangla VIII Final PDF
Document Details
Uploaded by DeftUnderstanding3105
2023
Tags
Summary
This document is a textbook for 8th grade Bangla in Bangladesh. It includes the introduction and an overview of the content covered in the textbook. It outlines a vision and plan for the future, with goals related to knowledge and skill development and focuses on issues such as technological advancements, global trends, and sustainable development impacting everyday life. The textbook is intended to be engaging.
Full Transcript
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০22 অনুযায়ী প্রণীত এবং 2024 শিক্ষাবর্ ্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য নির্ ্ধধারিত পাঠ্যপুস্তক বাংলা অষ্টম শ্রেণি...
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০22 অনুযায়ী প্রণীত এবং 2024 শিক্ষাবর্ ্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য নির্ ্ধধারিত পাঠ্যপুস্তক বাংলা অষ্টম শ্রেণি (পরীক্ষামূলক সংস্করণ) রচনা ও সংকলন তারিক মনজুর জফির সেতু মো োহাম্মদ শেখ সাদী উম্মে হাবিবা প্রণয় ভূঞাাঁ সৈয়দা ফারিহা লাহারিন ফিরো োজ আল ফেরদৌ ৌস সফিকুল আলম বকশ সম্পাদনা স্বরো োচিষ সরকার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ ৬৯-৭০ মতিঝিল বাণিজ্্যযিক এলাকা, ঢাকা ১০০০ কর্কতৃ প্রকাশিত [জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ কর্ক তৃ সর্্বস্বত্ব সংরক্ষিত] প্রকাশকাল : , 2023 শিল্প নির্্দদেশনা মঞ্জুর আহমদ প্রচ্ছদ পরিকল্পনা মঞ্জুর আহমদ প্রচ্ছদ রাসেল রানা চিত্রণ সুভাষ চন্দ্র সূতার প্রমথেশ দাস পুলক গ্রাফিক্স নূর-ই-ইলাহী কে. এম. ইউসুফ আলী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্ক তৃ বিনামূল্যে বিতরণের জন্য মুদ্রণে: প্রসঙ্গ কথা পরিবর্্তনশীল এই বিশ্বে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে জীবন ও জীবিকা। প্রযুক্তির উৎকর্্ষষের কারণে পরিবর্্তনের গতিও হয়েছে অনেক দ্রুত। দ্রুত পরিবর্্তনশীল এই বিশ্বের সঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার কো োনো ো বিকল্প নেই। কারণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ইতিহাসের যেকো োনো ো সময়ের চেয়ে এগিয়ে চলেছে অভাবনীয় গতিতে। চতুর্্থ শিল্পবিপ্লব পর্্যযায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ আমাদের কর্্মসংস্থান এবং জীবনযাপন প্রণালিতে যে পরিবর্্তন নিয়ে আসছে তার মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে সম্পর্্ক আরও নিবিড় হবে। অদূর ভবিষ্যতে অনেক নতুন কাজের সুযো োগ তৈরি হবে যা এখনও আমরা জানি না। অনাগত সেই ভবিষ্যতের সাথে আমরা যেন নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারি তার জন্য এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়ো োজন। পৃথিবী জুড়ে অর্্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটলেও জলবায়ু পরিবর্্তন, বায়ুদূষণ, অভিবাসন এবং জাতিগত সহিংসতার মতো ো সমস্যা আজ অনেক বেশি প্রকট। দেখা দিচ্ছে কো োভিড ১৯-এর মতো ো মহামারি যা সারা বিশ্বের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং অর্্থনীতিকে থমকে দিয়েছে। আমাদের প্রাত্্যহিক জীবনযাত্রায় সংযো োজিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্্যযালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা। এসব চ্্যযালেঞ্জ ও সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাাঁড়িয়ে তার টেকসই ও কার্্যকর সমাধান এবং আমাদের জনমিতিক সুফলকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। আর এজন্য প্রয়ো োজন জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবো োধ ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন দূরদর্শী, সংবেদনশীল, অভিযো োজন-সক্ষম, মানবিক, বৈশ্বিক এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ স্বল্্পপোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পদার্্পণের লক্ষষ্যমাত্রা অর্্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষা হচ্ছে এই লক্ষষ্য অর্্জনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এজন্য শিক্ষার আধুনিকায়ন ছাড়া উপায় নেই। আর এই আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে একটি কার্্যকর যুগো োপযো োগী শিক্ষাক্রম প্রণয়নের প্রয়ো োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্্ডডের একটি নিয়মিত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্্ণ কার্্যক্রম হলো ো শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্্জন। সর্্বশেষ শিক্ষাক্রম পরিমার্্জন করা হয় ২০১২ সালে। ইতো োমধ্যে অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে। প্রয়ো োজনীয়তা দেখা দিয়েছে শিক্ষাক্রম পরিমার্্জন ও উন্নয়নের। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষার বর্্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং শিখন চাহিদা নিরূপণের জন্য ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালব্যাপী এনসিটিবির আওতায় বিভিন্ন গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলন পরিচালিত হয়। এসব গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকার মতো ো যো োগ্য প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিচ্ছিন্ন যো োগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম উন্নয়ন করা হয়েছে। যো োগ্যতাভিত্তিক এ শিক্ষাক্রমের আলো োকে সকল ধারার (সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হলো ো। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলো োকে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এমনভাবে রচনা করা হয়েছে যেন তা অনেক বেশি সহজবো োধ্য এবং আনন্দময় হয়। এর মাধ্যমে চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা বিভিন্ন প্রপঞ্চ ও ঘটনার সাথে পাঠ্যপুস্তকের একটি মেলবন্ধন তৈরি হবে। আশা করা যায় এর মাধ্যমে শিখন হবে অনেক গভীর এবং জীবনব্যাপী। পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়নে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ধর্্ম, বর্্ণ নির্্ববিশেষে সকলকে যথাযথ গু্রুত্ব দেওয়া হয়েছে। বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকটি রচনা, সম্পাদনা, পরিমার্্জন, চিত্রাঙ্কন ও প্রকাশনার কাজে যাাঁরা মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তাাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পরীক্ষামূলক এই সংস্করণে কো োনো ো ভুল বা অসংগতি কারো ো চো োখে পড়লে এবং এর মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কো োনো ো পরামর্্শ থাকলে তা জানানো োর জন্য সকলের প্রতি বিনীত অনুরো োধ রইল। প্রফেসর মো োঃঃ ফরহাদুল ইসলাম চেয়ারম্যান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ ভূমিকা বাংলা বইয়ের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের ভাষা দক্ষতা বাড়ানো ো এবং বাংলা সাহিত্্যযের সঙ্গে পরিচয় ঘটানো ো। এই উদ্দেশ্য থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ধারাবাহিকতায় অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইটি প্রণীত। প্রমিত ভাষা শেখার কাজে যতটুকু ব্যাকরণ প্রয়ো োজন, তার বাইরে শিক্ষার্থীকে যাতে আলাদাভাবে ব্যাকরণ মুখস্থ করতে না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থী যাতে আনন্দের সাথে ভাষা শেখার কাজ সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য এই পাঠ্যপুস্তকের যাবতীয় কাজ ও কৌ ৌশল পরিকল্পিত। অভিন্ন উদ্দেশ্যে এখানে সংকলিত হয়েছে জীবনঘনিষ্ঠ নানা ধরনের নমুনা ও উপকরণ। ভাষা ব্যবহারেও কথো োপকথনের ভঙ্গি রক্ষা করা হলো ো। পাঠ নির্্ববাচনের সময়ে খেয়াল রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীর সঙ্গে যাতে বাংলা সাহিত্্যযের প্রধান প্রধান লেখকের পরিচয় ঘটে। আবার, এই পরিচয় যাতে তার প্রমিত ভাষা শেখার সাথে সাংঘর্্ষষিক না হয়, সেটিও মনে রাখা হয়েছে। তাই নির্্ববাচিত সাহিত্্যপাঠের কিছু কিছু ক্ষেত্রে শব্দরূপের পরিবর্্তন করতে হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীর বয়স ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কো োনো ো কো োনো ো পাঠ সংক্ষিপ্তও করতে হয়েছে। পূর্্ববর্তী শ্রেণির সাতটি দক্ষতাকে আরো ো উন্নীত করে এই শ্রেণিতে সেগুলো ো নিম্নরূপে সাজানো ো হলো ো: 1. উদ্দেশ্য বিবেচনায় নিয়ে প্রয়ো োজন অনুযায়ী মানুষের সঙ্গে যো োগাযো োগ করতে পারা; 2. প্রমিত ভাষায় কথা বলতে পারা এবং লিখতে পারা; 3. বিভিন্ন ধরনের লেখা পড়ে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে পারা; 4. শব্দ ও বাক্্যযের গঠন বিবেচনায় নিয়ে বাক্্য রচনা করতে পারা এবং একইসঙ্গে অভিধান দেখে শব্দের বানান ঠিক করতে পারা ও অর্্থ বুঝতে পারা; 5. বিভিন্ন ধরনের বিবরণমূলক ও বিশ্লেষণমূলক রচনা লিখতে পারা; 6. কবিতা-গল্প-প্রবন্ধ-নাটক–সাহিত্্যযের বিভিন্ন রূপের বৈশিষ্টট্য বুঝতে পারা, নিজের জীবন ও সমাজের সঙ্গে সাহিত্্যযের বিষয় ও ভাবকে মেলাতে পারা এবং সাহিত্্য রচনার মধ্য দিয়ে নিজের কল্পনা ও অনুভূতিকে প্রকাশ করতে পারা; এবং 7. যুক্তি দিয়ে আলো োচনা করতে পারা এবং আলো োচনার সময়ে অন্যের মত বিবেচনায় নিতে পারা। আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীরা একে অপরকে সহায়তার মাধ্যমে তাদের ভাষাদক্ষতা ও সাহিত্্যজ্ঞান বাড়াতে সক্ষম হবে। আগের দুটি শ্রেণির মতো ো অষ্টম শ্রেণির বইটিও অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক শিক্ষা-কার্্যক্রমের অংশ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন শারীরিক প্রতিবন্ধিতার জন্য কো োনো ো কাজ করতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হলে প্রাসঙ্গিক সহায়তার জন্য শিক্ষক শিক্ষক-সহায়িকার সাহায্য নিতে পারেন। সূচিপত্র প্রথম অধ্যায় প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি ১ দ্বিতীয় অধ্যায় প্রমিত বলি প্রমিত লিখি ১7 ১ম পরিচ্ছেদ ধ্বনির উচ্চারণ ১7 ২য় পরিচ্ছেদ শব্দের উচ্চারণ 26 ৩য় পরিচ্ছেদ লিখিত ভাষায় প্রমিত রীতি 34 তৃতীয় অধ্যায় লেখা অধ্যায় পড়ি লেখা বুঝি 40 ১ম পরিচ্ছেদ প্রায়ো োগিক লেখা 40 ২য় পরিচ্ছেদ বিবরণমূলক লেখা 47 ৩য় পরিচ্ছেদ তথ্যমূলক লেখা 54 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ বিশ্লেষণমূলক লেখা 60 ৫ম পরিচ্ছেদ কল্পনানির্্ভর লেখা 66 চতুর্্থ অধ্যায় শব্দ অধ্যায় বুঝি বাক্্য লিখি 75 ১ম পরিচ্ছেদ সমাস, উপসর্্গ, প্রত্্যয় 75 ২য় পরিচ্ছেদ শব্দদ্বিত্ব 87 ৩য় পরিচ্ছেদ বাক্্য 93 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ সমো োচ্চারিত ভিন্ন শব্দ 96 ৫ম পরিচ্ছেদ বানান ও অভিধান 100 পঞ্চম অধ্যায় বিবরণ লিখি বিশ্লেষণ করি 103 ১ম পরিচ্ছেদ বিবরণ লেখা ১03 ২য় পরিচ্ছেদ বিশ্লেষণ করা ১07 ষষ্ঠ অধ্যায় সাহিত্্য পড়ি সাহিত্্য লিখি ১10 ১ম পরিচ্ছেদ কবিতা ১10 ২য় পরিচ্ছেদ গল্প ১39 ৩য় পরিচ্ছেদ প্রবন্ধ ১76 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ নাটক ১82 সপ্তম অধ্যায় মত প্রকাশ করি ভিন্নমত বিবেচনা করি ১89 বাংলা প্রথম অধ্যায় প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি ১.১ পরিস্থিতি অনুযায়ী যো োগাযো োগের উপায় নিচে কিছু পরিস্থিতি দেওয়া হলো ো। এসব পরিস্থিতিতে যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য কী হতে পারে, উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কার সঙ্গে এবং কীভাবে যো োগাযো োগ করা যেতে পারে, তা উল্লেখ করো ো। ছো োটো ো ছো োটো ো দলে কয়েকজন মিলে কাজগুলো ো উপস্থাপন করো ো। সব দলের উপস্থাপনা শেষ হলে প্রয়ো োজনে নিজেদের কাজ সংশো োধন করে নাও। নিচে একটি নমুনা উত্তর দেওয়া হলো ো। যো োগাযো োগের যার সঙ্গে যো োগাযো োগ করা যেভাবে উদ্দেশ্য প্রকাশ করা পরিস্থিতি উদ্দেশ্য যেতে পারে যেতে পারে বাড়িতে কেউ অসুস্থ হয়ে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য পরিবারের সদস্য অসুস্থ ব্যক্তির শারীরিক পড়েছে। দ্রুত চিকিৎসার ডাক্তার অবস্থা ব্যাখ্যা করা ব্যবস্থা করা কাছের হাসপাতাল প্রাথমিকভাবে রো োগীর অ্্যযাম্বুলেন্স জন্য কী করা যেতে পারে হেল্পলাইন (১৬২৬৩) জানতে চাওয়া বাড়ির ঠিকানা বলা স্কুলের পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে। এমন এলাকায় দাওয়াত পেয়েছি যেখানে আগে কখনো ো যাইনি। একজন বন্ধু বেশ কিছুদিন ধরে ক্লাসে আসছে না। এলাকায় একটি অপরিচিত শিশু পাওয়া শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 গেছে। 1 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি ১.২ যো োগাযো োগে চিন্তা ও অনুভূতির প্রকাশ যো োগাযো োগে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হয়। নিচে কয়েকটি ঘটনা দেওয়া হলো ো। ঘটনাগুলো োর সঙ্গে দেওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। উত্তরগুলো ো নিয়ে সহপাঠীর সাথে আলো োচনা করো এবং প্রয়ো োজনে সংশো োধন করো ো। প্রথমটি করে দেখানো ো হলো ো। ঘটনা ১ টিফিনের সময়ে বারান্দায় দাাঁড়িয়ে সামিয়া ও নয়ন কথা বলছে। সামিয়া: আগামী শুক্রবার আমার ছো োটো ো বো োনের জন্মদিন। তুমি ঐদিন বিকেলে আমাদের বাসায় এসো ো। রীতা, মিতু ও শাহেদকে আসতে বলেছি। নয়ন: ধন্যবাদ সামিয়া। আমি বাসায় মার সাথে কথা বলে তো োমাকে জানাব। সামিয়া: ঠিক আছে। তুমি এলে আমার অনেক ভালো ো লাগবে। আমরা সবাই মিলে অনেক মজা করতে পারব। আমার মাকেও আমি তো োমার কথা বলেছি। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 2 বাংলা সামিয়ার যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য কী? জন্মদিনের দাওয়াত দেওয়া। এই যো োগাযো োগে কো োন চিন্তা ও অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? বন্ধুরা মিলে আনন্দ করা। ঐদিন কী কী মজার কাজ করবে তা পরে জানাতে পারত। আর কীভাবে সামিয়া উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে পারত? জন্মদিনের পরিকল্পনায় নয়নের সাহায্য চাইতে পারত। ঘটনা 2 ৫ই জুন। বিশ্ব পরিবেশ দিবস। স্কুলের সামনে বড়ো ো একটি ব্যানার নিয়ে দাাঁড়িয়ে আছে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে শিক্ষকরাও আছেন। ব্যানারে লেখা ‘গাছ লাগাও পরিবেশ বাাঁচাও’। কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে কয়েকটি প্ল্যাকার্ ্ড দেখা যাচ্ছে। সেখানে এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষ করে কিছু কথা লেখা আছে। শিক্ষার্থীরা কো োন উদ্দেশ্যে স্কুলের সামনে দাাঁড়িয়েছে? এই যো োগাযো োগে কো োন চিন্তা ও অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 আর কীভাবে তারা এই উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে পারত? 3 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি ঘটনা ৩ শিমুর ছো োটো ো ভাইয়ের বয়স বারো ো বছর। সকাল থেকে তাকে খুজে ুঁ পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ধ্যার সময়ে থানায় শিমুর বাবা ও চাচা কথা বলছেন পুলিশ অফিসারের সাথে। পুলিশ : সকাল কয়টা থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না বললেন? বাবা : সকাল নয়টা থেকে। পুলিশ : সে কেন ঘর থেকে বের হয়েছিল বলতে পারেন? বাবা : সম্ভবত মো োড়ের দো োকানে চকলেট কিনতে গিয়েছিল। পুলিশ : তার কো োনো ো ছবি আছে আপনাদের কাছে? [বাবা ছবি এগিয়ে দিলেন পুলিশ অফিসারের দিকে।] পুলিশ : আপনারা কি ওর বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজ নিয়েছেন? চাচা : আমরা ওর কয়েকজন বন্ধুর বাড়ি ফো োন করেছিলাম। কারো ো বাড়িতেই সে যায়নি। পুলিশ : আপনারা একটি লিখিত অভিযো োগ করে যান। আমরা দেখছি। শিমুর বাবা কো োন উদ্দেশ্যে থানায় যো োগাযো োগ করেছেন? এখানে শিমুর বাবার কো োন চিন্তা ও অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 অন্য কীভাবে শিমুর বাবা এ উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে পারতেন? 4 বাংলা যোগাযো োগের উদ্দেশ্য আমরা বিভিন্ন উপায়ে মানুষের সাথে যো োগাযো োগ করি। এসব যো োগাযো োগের পিছনে এক বা একাধিক উদ্দেশ্য থাকে। কারো ো খবর নেওয়া, কাউকে দাওয়াত দেওয়া, কো োনো ো কিছু চাওয়া, কো োনো ো উত্তর খোঁজা কিংবা আরো ো নানা প্রয়ো োজনে যো োগাযো োগের দরকার হয়। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবং ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্্ককের ধরন অনুযায়ী যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য নানা রকম হয়। কার্্যকর উপায়ে যো োগাযো োগ যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে ভাষিক ও অভাষিক দু্টি ধরন রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা লিখে, বলে, ইশারা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে একে অপরের সাথে যো োগাযো োগ করি। যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হয়। কাউকে জন্মদিনের দাওয়াত যেভাবে দেওয়া যায়, শো োকসন্তপ্ত পরিবারের কারো ো সাথে সেভাবে কথা বলা যায় না। কথা বলার সময়ে প্রসঙ্গকে বিবেচনায় নিতে হয়। মর্্যযাদা অনুযায়ী সর্্বনাম ও ক্রিয়াশব্দের ব্যবহারের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। যো োগাযো োগের সময়ে উদ্দেশ্য অনুযায়ী চিন্তা ও অনুভূতির প্রকাশ যথাযথ হলো ো কি না, সেটি খেয়াল করতে হয়। ব্যক্তিগত যো োগাযো োগ ও আনুষ্ঠানিক যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য এক রকম হয় না। উদ্দেশ্য অনুযায়ী যো োগাযো োগের যথাযথ উপায় বেছে নিতে হয়। কো োনো ো কো োনো ো ক্ষেত্রে একই প্রয়ো োজনে একাধিক উপায়ে যো োগাযো োগ করার দরকার হয়। মৌ ৌখিক যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে অঙ্গভঙ্গি, গলার স্বর, তাকানোর ধরন ইত্্যযাদিও গুরুত্বপূর্্ণ। মৌ ৌখিক যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে যেভাবে পরিস্থিতি, চিন্তা-অনুভূতি ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করা যেতে পারে, তার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো ো: যো োগাযো োগের যেভাবে পরিস্থিতি তুলে ধরা যেভাবে চিন্তা ও অনুভূতি যেভাবে উদ্দেশ্য প্রকাশ উদ্দেশ্য যেতে পারে প্রকাশ করা যেতে পারে করা যেতে পারে বন্ধুর জন্মদিনে যো োগ মা, সামনের শুক্রবার আমার সেদিন অনেক মজা হবে। বিকালের অনুষ্ঠান শেষ দেওয়ার জন্য এক বন্ধুর জন্মদিন। সেদিন সেখানে গেলে সবাই মিলে করে আমি সন্ধ্যার অভিভাবকের কাছে বিকালে আমাদের ক্লাসের অনেক আনন্দ করতে আগেই ঘরে ফিরব। অনুমতি চাওয়া। কয়েকজনকে দাওয়াত পারব। এই অনুষ্ঠানে যাওয়ার দিয়েছে। ব্যাপারে আমি তো োমার অনুমতি চাই। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 লিখিত যো োগাযো োগের সময়ে অঙ্গভঙ্গি, গলার স্বর, তাকানোর ধরন ইত্্যযাদির সুযো োগ নেই। তাই লিখিত যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে শব্দ ও বাক্্য প্রয়ো োগের মাধ্যমে সেই অভাব পূরণ করতে হয়। 5 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি লিখিত যো োগাযো োগ নানা ধরনের হয়ে থাকে; যেমন—ব্যক্তিগত যো োগাযো োগ, প্রাতিষ্ঠানিক যো োগাযো োগ, ব্যবসায়িক যো োগাযো োগ ইত্্যযাদি। এসব যো োগাযো োগের কাঠামো োও আলাদা। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক যো োগাযো োগের নমুনা হিসেবে একটি আবেদনপত্রের কাঠামো দেখানো ো হলো ো। এই আবেদনপত্রে ক্লাসরুমে পাঠাগার তৈরির জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা আবেদন করছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ প্রধান শিক্ষক ফুলঝুরি উচ্চ বিদ্যালয় বরগুনা সদর উপজেলা বরগুনা। বিষয়: ক্লাসরুম পাঠাগার তৈরির জন্য অনুমতি ও অনুদানের আবেদন। মহো োদয় আমরা ফুলঝুরি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আমাদের ক্লাসরুমের ভিতরে আমরা একটি পাঠাগার তৈরি করতে চাই। ক্লাসরুমের ভিতরে একটি পাঠাগার থাকলে বিরতির সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারব যা আমাদের অনেকেরই পছন্দের কাজ। পাঠাগার স্থাপনের জন্য আমাদের একটি বইয়ের সেলফের প্রয়ো োজন, যা শ্রেণিকক্ষের এক কো োনায় রাখা হবে। এছাড়া এই সেলফে রাখার জন্য কিছু বই কেনারও প্রয়ো োজন। শ্রেণিশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে আমরা এই পাঠাগার পরিচালনা করতে চাই। এজন্য আপনার সদয় অনুমতি এবং আর্্থথিক অনুদান কামনা করি। বিনীত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীবৃন্দ, ফুলঝুরি উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 6 বাংলা ুঁ গল্প থেকে যো োগাযো োগের উপাদান খুজি নিচের গল্পটি রাবেয়া খাতুনের (১৯৩৫-২০২১) লেখা। তিনি মূলত কথাসাহিত্্যযিক। তাাঁর ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘মধুমতী’, ‘কখনো ো মেঘ কখনো ো বৃষ্টি’ এসব উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্্মমিত হয়েছে। ছো োটো োদের জন্য তিনি অনেক গল্প-উপন্যাস লিখেছেন। অপারেশন কদমতলী রাবেয়া খাতুন আজকাল দাদি সহস্রদল চম্পকদলের গল্প বলতে গিয়ে প্রায়ই বলে বসেন, ‘জাগে চম্পকদল, জাগে সহস্রদল, আর জাগে জয় বাংলা রেডিও।’ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 চন্দন চাপা গলায় বলে ওঠে, ‘ও দাদি, তো োমার হলো ো কী?’ 7 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি আন্না বড়ো ো একটা হাই তুলে বলল, ‘কী আবার হবে, আমার মতো ো ঘুম ধরেছে।’ মান্না সঙ্গে সঙ্গে চেেঁচায়, ‘বলিস কিরে, মো োটে রাত আটটা।’ আসলেও তাই। বাইরে জরুরি অবস্থা—অন্ধকার। গো োটা বাড়িতে আলো ো বলতে একটিমাত্র সলতে-কমানো ো নিভু- নিভু হারিকেন। রেডিয়াম দেওয়া টেবিলঘড়িতে জ্বলজ্বল করছে শুধু আট সংখ্যাটা। এমন সন্ধ্যে রাতে ক মাস আগেও গমগম করত রাস্তাঘাট। ভাইয়া প্রাইভেট টিউটরের কাছ থেকে পড়ে বাসায় ফিরত। ছো োটো ো চাচা ফিরত ঘো োরাতে ঘো োরাতে ব্যাডমিন্টন কো োর্্ট থেকে। রাস্তার ওপারে দো োকানগুলো োর কো োনো োটায় জ্বলত রঙিন বাল্ব। কো োনো োটা থেকে বাজত চড়া স্বরে রেডিওর গান। চায়ের স্টলে পেয়ালার গরম ধোঁয়ার সঙ্গে আরো ো গরম কথাবার্্ততা। শেখ মুজিব, মুক্তিযো োদ্ধা, ইয়াহিয়া খান,... নানা রকমের নাম, আলো োচনা। চন্দন ঠিক বুঝতে পারত না। কিন্তু দিনভর ওইসব কথাই শুনত ট্রানজিস্টারে, খেলার মাঠে, যেখানে-সেখানে। একটা যুদ্ধ আসার কথা সবার মুখে মুখে। যুদ্ধ শব্দটা অচেনা কিছু নয়। রূপকথার বই থেকে ইতিহাসের বই— সব জায়গাতেই রাজায় রাজায় যুদ্ধ বাধে। কখনো ো সীমানা নিয়ে, কখনো ো রাজপুত্র-রাজকন্যা নিয়ে। শেষটায় যে পক্ষ সৎ সেই জিতে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের যুদ্ধটা যেন কেমন। রাজায়-প্রজায় যুদ্ধটাও আবার মুখো োমুখি নয়। মাঠে-ময়দানে নয়। রাজার সৈন্যরা যা খুশি তাই করে বেড়াচ্ছে। লড়াই শুরু হতে না হতেই গো োবেচারা ছো োটো ো চাচাকে হাত বেেঁধে, জিপে করে কো োথায় যেন নিয়ে গেল। মার্্চথেকে সেপ্টেম্বর। আজও ফেরার নাম নেই। কেউ বলে, তাকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। কেউ বলে বন্দি করে রাখা হয়েছে কুর্্মমিটো োলার শিবিরে। শুধু ছো োটো ো চাচা নয়, এই কয় মাসে নান্টুর চাচা, দিলুর বড়ো ো ভাই, ননির বাবা—আরো ো কতজনকে যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কেউ ফেরেনি। কারো ো কো োনো ো খবরও নেই। এখন মাগরেবের পর সারা পাড়া নিঝুম হয়ে যায়। অন্ধকার হয়ে যায়। কো োথাও কো োনো ো আলো ো নেই। শব্দ নেই। অথচ এখানে থাকে কয়েক হাজার মানুষ। এখন যেন পুরো ো মহল্লা রূপকথার সেই রাক্ষসপুরীর মতো ো হয়ে গেছে। রাজার রাজ্্যযে একটিও জ্্যযান্ত লো োক নেই। সব গেছে রাক্ষসের পেটে। দাদি অবশ্য বলেন, ‘রাক্ষসের গিলে-খাওয়া এই মানুষগুলো ো একদিন দেখিস ঠিক ফিরে আসবে।’ আন্না খুব অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, ‘সত্্যযি? কেমন করে?’ ‘দেখবি আমাদের পাড়ার এই রাস্তাঘাট খান সেনাদের বদলে ভরে যাবে মুক্তিসেনায়। ওরা এখন সংখ্যায় কম বলে বনে-জঙ্গলে থেকে যুদ্ধ করছে। এ যুদ্ধকে বলে গেরিলা যুদ্ধ।’ মান্না মাথার ওপর হাত তুলে বলে, ‘আমরাও তাহলে যুদ্ধ করছি।’ চন্দন চাপা গলায় চেেঁচিয়ে ওঠে, ‘এই জন্যই তো ো তো োকে দলে নিতে চাইনি।’ মান্না দু কানের লতি ছুয়ে ুঁ বলল, ‘আর ভুল হবে না ভাইয়া।’ চন্দন খুশি হয়ে ওঠে। দু বছরের বড়ো ো হলেও মান্না ওকে নাম ধরেই ডাকে। শুধু এইসব বেগতিক সময়ে ডাকে শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 ভাইয়া। সেও তখন গম্ভীর মুখে আস্তে আস্তে বলে, ‘কাল আমাদের অপারেশন। মনে আছে তো ো?’ 8 বাংলা মান্না জবাব দেয়, ‘আছে আছে। খুব আছে। কাল তো ো জুম্মাবার। সবাই বাবার সঙ্গে পাজামা, পাঞ্জাবি, টুপি পরে মসজিদে যাব। তারপর...।’ দাদি আবার কথা বলছেন। ওরা ভেবেছিল দাদির চো োখে ঘুম নেমেছে। এখন বুঝল আসলে জমেছিল পানি। আঁচলে চো োখ ঘষে আবার শুরু করলেন, ‘রাজার রাজ্্যযের শেষ সীমানায় শেওলাধরা পো োড়ো োবাড়ি। দুই ভাই সহস্রদল, চম্পকদলকে পাঠানো ো হয়েছে বক-রাক্ষসের খাবার হিসেবে। রাক্ষস বাইরে থেকে দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলল, ভেতরে কে ঘুমায়? দুই ভাই পরামর্্শ করে রাত জাগছিল। ঘুমিয়ে গেলেই বক-রাক্ষস দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ওদের খেয়ে ফেলবে। তখন ছিল চম্পকদলের পালা। সে আবার একটু ঘুমিয়েও পড়েছিল। রাক্ষসের বিকট গলা শুনে জেগে উঠে জবাব দিল, কেউ ঘুমায় না। জাগে সহস্রদল। জাগে চম্পকদল। আর জাগে...।’ দাদিকে থেমে যেতে হয়। নিভু-নিভু হারিকেনের কাছে খুব কম আওয়াজে বাজছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান—মো োরা একটি ফুলকে বাাঁচাব বলে যুদ্ধ করি...। সবাই যখন গান শো োনায় চুপচাপ, মান্নার হাত ধরে চন্দন বারান্দার কো োণে এসে দাাঁড়াল। পথে শুধু থমথমে বিদঘুটে অন্ধকার। টহলদার শত্রুসেনাদের বুটের বিশ্রী শব্দ। সেই সঙ্গে কুকুরদের আর্্তনাদ। আজকাল সারারাত ওরা ডাকে। দাদি বলেছেন, বো োবা জানো োয়ারেরা নাকি বিপদ-আপদ মানুষের আগে বুঝতে পারে। পঁচিশে মার্্চচের মাঝরাত থেকে সেই যে কুকুর ডাকা শুরু হয়েছে, কে জানে কবে থামবে। শফি ভাই অবশ্য বলেছেন, বেশি দিন আর নেই। অত্্যযাচারী রাজা ইয়াহিয়া আর তার মন্ত্রী টিক্কা খানের রাজত্ব গেল বলে। খুব চাপা স্বরে চন্দন বলল, বুঝলি মান্না, কাল থেকে শুরু হয়ে যাবে খাস ঢাকা শহরের ভেতর নানা দিকের অপারেশন। এই পাড়ায় যখন প্রথম এলাম তখন কান্না পেয়েছিল। কো োথায় গ্রিন রো োড, কো োথায় বাসাবো ো। এখানে ছিলাম বলে কদমতলী অপারেশনের সুযো োগ পেয়ে গেলাম। তো োকে কী করতে হবে, মনে আছে তো ো?’ ‘আছে। বাবার সঙ্গে আমি ঠিকই মসজিদে উঠব, তুই কেটে যাবি পিছন থেকে।’ ‘আর আমি সহিসালামতে ফিরে আসামাত্র কিংবা যদি মারাও পড়ি, পাড়ায় ছড়িয়ে দিবি—হাজার হাজার খানসেনা মুক্তিযো োদ্ধাদের আক্রমণে মারা গেছে।’ ‘ঠিক আছে, চল ঘুমাতে যাই।’ ‘তুই যা। আমি আরো ো কিছুক্ষণ জেগে টহলদার শয়তানের বাচ্চাগুলো োর বুটের শব্দের জবাব দিয়ে যাই—জাগে চন্দন, জাগে মান্না।’ আর জাগে বাসাবো োর পো োলাপানেরা। মার ডাকে কখন ঘরে গিয়ে শুয়েছিল মনে নেই চন্দনের। ঘুম ভাঙল পাখির ডাকে। সঙ্গে সঙ্গে বুক কাাঁপল। আজকাল পাখি ডাকা মানে সকাল হওয়া নয়। খানসেনারা সারা রাত ভরে যখন-তখন মুড়ি-মটরের মতো ো রাইফেলের গুলি ছো োড়ে। ভয় পেয়ে ঘুমন্ত পাখিরা বাসা ছেড়ে অস্থির ডানায় চক্কর দিতে থাকে শূন্যে। ওদের শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 ভয়ার্্ত কান্নায় পাড়ার মানুষের ঘুম ভাঙে। কিন্তু কিছু করতে পারে না। পাশের বাড়ির খালু, দুশো ো বিশ নম্বর বাড়ির সানু, মানু, দুলি আপাকে যখন অকারণে বন্দুকের নলের মুখে তুলে নিয়ে গেল, তখন কেউ টু শব্দও 9 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি করতে পারেনি—জবাব দিতে পারেনি তাদের করুণ কান্নার। তাই পাখির ডাক এখন ভো োর হওয়ার আনন্দের নয়, নিশি রাতের আতঙ্কের। দু চো োখ ডলে এখন অবশ্য চন্দন বুঝতে পারল, সত্্যযি সকাল হয়েছে। চারদিকে ঠান্ডা সূর্্যযের আলো ো। কিন্তু ক্্যযালেন্ডারের দিকে চো োখ যেতেই রক্ত গরম হয়ে গেল—25শে ভাদ্র, 10ই সেপ্টেম্বর 197১। চা-নাশতা সেরে, ঘড়ির দিকে চেয়ে অস্থির সময় কাটতে লাগল, কখন মসজিদের মিনার থেকে শো োনা যাবে আজানের আওয়াজ। ত্রিবেণীর মুক্তিসেনা-শিবির থেকে ওই সময়ে দুটো ো ছইওয়ালা একটি জিপে করে বেরুবেন অপারেশনের ভাইয়েরা, তার কাজ কদমতলীর ফাাঁড়ির দিকে বিলের বিশেষ এক জায়গায় দাাঁড়িয়ে সব কিছু ঠিক আছে তার সংকেত দেখানো ো। দুপুরে বিলের সেই জায়গায় দাাঁড়িয়ে খবর পেল অপারেশনের কথা শুধু চন্দনরাই নয়, খানসেনারাও দেশি মীরজাফরদের কাছ থেকে জেনে ফেলেছে। তবে কিছু দেরিতে। ওরা দলেবলে পৌ ৌঁঁছানো োর আগে যা ঘটার ঘটে যাবে। পাকুড়গাছের মগডালের পাতার আড়াল থেকে সবুজ নিশান তিন বার দেখাতেই, যেন পানির অতল থেকে হঠাৎ উঠে এলো ো তিন তিনটি নৌ ৌকা। খাল আর বিল পেরিয়ে তারা এগো োতে লাগল ফাাঁড়ির দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফটাফট বন্দুকের আর রাইফেলের শব্দ। ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ঢেকে গেল পুলিশ ফাাঁড়ির চারদিক। ধোঁয়ার ভেতর থেকে আসতে লাগল নানা রকম কাতর শব্দ। পাকুড়গাছ থেকে নেমে চন্দন দৌ ৌড় লাগাল। কদমতলী, মাদারটেক, মুগদাপাড়া, সবুজবাগ রাস্তায় ছুটতে ছুটতে চন্দন চেেঁচিয়ে বেড়াতে লাগল, ‘কে কো োথায় আছেন, মুক্তিরা ফাাঁড়ি আক্রমণ করেছে...।’ রাস্তার ধারে ধারে ওর বয়সী যারা ছিল, সেইসব ছেলেও দলে যো োগ দিয়ে বলতে লাগল, ‘ঝাাঁকে ঝাাঁকে মুক্তি ভাইয়েরা... হাজার দু হাজার...।’ ওদিকে নামাজ শেষে মুসল্লিরা শুনলেন চারদিক কাাঁপছে রাইফেল, মেশিনগান আর মর্্টটারের আওয়াজে। তার ভেতর বালকের দল দুজন চারজন করে ভাগে ভাগে, ছুটে ছুটে বিলি করছে নতুন খবর—হাজারে হাজারে মুক্তি এসেছে... রাতে নয়, দিনে-দুপুরে। মরেছে ফাাঁড়ির পুলিশ, রাজাকার, আহত হয়েছে মেলা, আর লুট হয়েছে ফাাঁড়ির নানা রকমের অস্ত্র। ছেলেদের দুুঃসাহসে ফাাঁড়ির লো োক প্রথমে কেেঁপে উঠেছিল ত্রাসে। এই বুঝি অবুঝ দামাল ছেলেগুলো োকে জিপে করে চালান দেয় কুর্্মমিটো োলার বন্দিশিবিরে। কিন্তু দেখা গেল জালিম রাজার সৈন্যরা ব্যস্ত নিজেদের রক্ষার কাজে। ট্রাক সাদা পর্্দদায় ঢেকে দ্রুত সরানো ো হচ্ছে কদমতলী থেকে আহত-নিহত খানসেনাদের আর বিশ্বাসঘাতক রাজাকারদের। ুঁ ওদিকে যাদের জন্য এতসব, সেই মুক্তিযো োদ্ধারা বিলের কো োথায় যে মিলিয়ে গেছে, খানসেনারা অনেক খোঁজাখুজি করেও হদিস পেল না। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 বারান্দার কো োণে বসে গেন্ডারি খেতে খেতে চন্দন বলল, ‘পাবে কী করে? ভাইয়েরা জব্বর চালাক। কেউ চাষিদের সঙ্গে মিশে গেছেন, কেউ মাঝিদের, কেউ কেউ জেলেদের। খানরা কি তাদের আলাদা করে চেনে!’ 10 বাংলা মান্না বলল, ‘সাবধান, ভাইয়া বলেছেন ওসব এখন নয়। এখন শুধু গেন্ডারি খেতে খেতে দেখব রাতে খানসেনারা আর কত গুলি ফো োটায়।’ মান্না বলল, ‘যাই বলিস ভাইয়া, সত্্যযি সত্্যযি মুক্তিযুদ্ধের কাজে এসেছি। তুই অপারেশনে অংশ নিয়েছিস! ভেবে যেমন অবাক হচ্ছি, তেমনি ভালো োও লাগছে খুব। আর এই খবরটা যখন জয় বাংলা থেকে শুনব, তখন আরো ো কত ভালো ো লাগবে কে জানে! শব্দের অর্্থ অপারেশন: বিশেষ অভিযান। বেগতিক: উপায়হীন। আতঙ্ক: ভয়। রাক্ষসপুরী: রাক্ষসদের বাসস্থান। গেরিলা যুদ্ধ: নিজেকে লুকিয়ে রেখে শত্রুপক্ষকে রেডিয়াম: একটি তেজস্ক্রিয় মৌ ৌলিক পদার্্থ। আক্রমণ করা হয় এমন যুদ্ধ। সলতে: প্রদীপ জ্বালাতে ব্যবহৃত হয় এমন টুকরো ো চম্পকদল: রূপকথার একটি চরিত্রের নাম। কাপড় বা মো োটা সুতা। টহলদার: পাহারাদার। সহস্রদল: রূপকথার একটি চরিত্রের নাম। দুুঃসাহস: অতিরিক্ত সাহস। সহিসালামতে: নিরাপদে। নিঝুম: নীরব। ১.৩ যো োগাযো োগে প্রাসঙ্গিকতা এখানে ‘অপারেশন কদমতলী’ গল্প থেকে পাাঁচটি কথা দেওয়া হলো ো। এসব কথা গল্পের কো োন চরিত্র, কো োন প্রসঙ্গে বলেছে লেখো ো। একইসঙ্গে কথাগুলো ো কতটুকু প্রাসঙ্গিক হয়েছে, তা উল্লেখ করো ো। কাজ শেষ হলে সহপাঠীর সঙ্গে আলো োচনা করো ো এবং প্রয়ো োজনে সংশো োধন করে নাও। প্রথমটির নমুনা উত্তর করে দেওয়া হলো ো। ১. কী আবার হবে, আমার মতো ো ঘুম ধরেছে। কথাটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? কথাটি বলেছে ‘অপারেশন কদমতলী’ গল্পের চরিত্র আন্না। দাদি রূপকথার গল্প বলছিলেন। সেই গল্প শুনছিল আন্না, মান্না ও চন্দন। চন্দনের কথার জবাবে আন্না এ কথা বলেছিল। রূপকথার গল্প বলতে গিয়ে দাদি হঠাৎ করে জয় বাংলা রেডিওর কথা বলে ফেলেন। তাই চন্দন অবাক হয়। সে জানতে চায় দাদির ঘুম পেয়েছে কি না। তারা মনে করেছিল, দাদি বুঝি কথার খেই হারিয়ে ফেলছেন। এমন অবস্থায় চন্দনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আন্নার কথাটি প্রাসঙ্গিক। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 11 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি ২. রাক্ষসের গিলে-খাওয়া এই মানুষগুলো ো একদিন দেখিস ঠিক ফিরে আসবে। কথাটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? ৩. এ যুদ্ধকে বলে গেরিলা যুদ্ধ। কথাটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? ৪. বেশি দিন আর নেই। কথাটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? ৫. পাবে কী করে? ভাইয়েরা জব্বর চালাক। কথাটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 12 বাংলা ১.৪ যো োগাযো োগে মর্্যযাদাসূচক শব্দ যো োগাযো োগে বাংলা ভাষায় তিন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়—সাধারণ সর্্বনাম, মানী সর্্বনাম ও ঘনিষ্ঠ সর্্বনাম। একইসঙ্গে মর্্যযাদা অনুযায়ী ক্রিয়ার রূপও তিন ধরনের হয়—সাধারণ ক্রিয়ারূপ, মানী ক্রিয়ারূপ ও ঘনিষ্ঠ ক্রিয়রূপ। নিচে ‘অপারেশন কদমতলী’ গল্প থেকে কিছু বাক্্য দেওয়া হলো ো। বাক্্যগুলো োর সঙ্গে দেওয়া প্রশ্নগুলো োর জবাব লেখো ো। কাজ শেষ হলে সহপাঠীর সঙ্গে আলো োচনা করো ো এবং প্রয়ো োজনে সংশো োধন করে নাও। প্রথম দুটির নমুনা উত্তর করে দেওয়া হলো ো। ১. ও দাদি, তো োমার হলো ো কী? এখানে কো োন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে? সাধারণ সর্্বনাম_______ মানী সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ও দাদি, আপনার হলো ো কী? ঘনিষ্ঠ সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ও দাদি, তো োর হলো ো কী? ২. মান্না সঙ্গে সঙ্গে চেেঁচায়। এখানে কো োন ধরনের ক্রিয়ারূপ ব্যবহার করা হয়েছে? সাধারণ ক্রিয়ারূপ মানী ক্রিয়ারূপের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? মান্না সঙ্গে সঙ্গে চেেঁচান। ৩. রাক্ষসের গিলে-খাওয়া এই মানুষগুলো ো একদিন দেখিস ঠিক ফিরে আসবে। এখানে বাক্্যযের মাঝে কো োন ধরনের ক্রিয়ারূপ ব্যবহার করা হয়েছে? সাধারণ ক্রিয়ারূপের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? মানী ক্রিয়ারূপের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ৪. তো োকে কী করতে হবে, মনে আছে তো ো? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 এখানে কো োন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে? 13 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি সাধারণ সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? মানী সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ৫. ঠিক আছে, চল ঘুমাতে যাই। এখানে কো োন ধরনের ক্রিয়ারূপ ব্যবহার করা হয়েছে? সাধারণ ক্রিয়ারূপের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? মানী ক্রিয়ারূপের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ৬. তুই যা। এখানে কো োন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে? মানী সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? সাধারণ সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ৭. খাল আর বিল পেরিয়ে তারা এগো োতে লাগল ফাাঁড়ির দিকে। এখানে কো োন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে? মানী সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? ৮. তুই অপারেশনে অংশ নিয়েছিস! এখানে কো োন ধরনের সর্্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে? মানী সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 সাধারণ সর্্বনামের প্রয়ো োগে বাক্্যটি কেমন হবে? 14 বাংলা ১.৫ যো োগাযো োগের উপাদান বিশ্লেষণ নিচের ছকে তো োমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে একটি পরিস্থিতির উল্লেখ করো ো। ঐ পরিস্থিতিতে তুমি কীভাবে তো োমার উদ্দেশ্য ও চিন্তা-অনুভূতির প্রকাশ করেছিলে, সেটি লেখো ো। আর কীভাবে প্রকাশ করলে এই উদ্দেশ্য ও চিন্তা-অনুভূতির প্রকাশ আরো ো ভালো োভাবে হতে পারত বলে মনে করো ো? লেখা হয়ে গেলে সহপাঠীদের সাথে আলো োচনা করো ো এবং তাদের মতামত নাও। পরিস্থিতি যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য যে ধরনের চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে আর কী উপায়ে যো োগাযো োগ করা যেত উপরের পরিস্থিতি নিয়ে পরিবার বা পরিবারের বাইরের কো োনো ো ব্যক্তির সাথে আলো োচনা করো ো। যো োগাযো োগের উদ্দেশ্য পূরণে পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কী কী করা যেতে পারত, সে ব্যাপারে তাাঁর মতামত নাও এবং নিচে উল্লেখ করো ো। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 15 প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি 1.৬ প্রয়ো োজন বুঝে যো োগাযো োগ করি দলে আলো োচনা করে তো োমাদের বিদ্যালয় বা শ্রেণিকক্ষের কো োনো ো একটি সমস্যা চিহ্নিত করো ো। এই সমস্যা দূর করার জন্য কার সঙ্গে যো োগাযো োগ করা যেতে পারে, সেটি ঠিক করো ো। এই কাজে মৌ ৌখিক যো োগাযো োগের প্রয়ো োজন হলে কীভাবে উপস্থাপন করবে এবং লিখিত যো োগাযো োগের প্রয়ো োজন হলে কীভাবে লিখবে, তা আলো োচনা করো ো এবং সে অনুযায়ী কাজ করো ো। নিচের ছকটি তো োমাদের কাজের পরিকল্পনা করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়ো োজন (সমস্যা/ যার সঙ্গে যো োগাযো োগ করা মৌ ৌখিক যো োগাযো োগ লিখিত যো োগাযো োগ চাহিদা) যেতে পারে শ্রেণিশিক্ষক সরাসরি কথা বলা আবেদনপত্র শ্রেণিকক্ষের ভিতরে প্রধান শিক্ষক মো োবাইল ফো োনে কথা বলা বিজ্ঞপ্তি পাঠাগার স্থাপন অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থী পো োস্টার পরিবারের সদস্য শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 16 বাংলা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রমিত বলি প্রমিত লিখি ১ম পরিচ্ছেদ ধ্বনির উচ্চারণ উচ্চারণ ঠিক রেখে কবিতা পড়ি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ (১৯৩৪-২০০১) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কবি। তাাঁর উল্লেখযো োগ্য কবিতার বইয়ের নাম ‘সাত নরী হার’, ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ ইত্্যযাদি। নিচের কবিতাটি ভাষা-আন্্দদোলন বিষয়ক একটি বহুল পঠিত কবিতা। এটি কবির ‘সাত নরী হার’ কাব্য থেকে নেওয়া। কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো ো; এরপর সরবে পাঠ করো ো। সরবে পাঠ করার সময়ে ধ্বনির উচ্চারণে সতর্্ক থাকতে হবে। মাগো ো, ওরা বলে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ‘কুমড়ো ো ফুলে-ফুলে নুয়ে পড়েছে লতাটা, সজনে ডাাঁটায় ভরে গেছে গাছটা, আর, আমি ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি— খো োকা তুই কবে আসবি! কবে ছুটি? চিঠিটা তার পকেটে ছিল, ছেেঁড়া আর রক্তে ভেজা। ‘মাগো ো, ওরা বলে, সবার কথা কেড়ে নেবে শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 তো োমার কো োলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না। বলো ো, মা, তাই কি হয়? 17 প্রমিত বলি প্রমিত লিখি তাইতো ো আমার দেরি হচ্ছে। তো োমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরব। লক্ষ্মী মা রাগ কো োরো ো না, মাত্র তো ো আর কটা দিন। ‘পাগল ছেলে’, মা পড়ে আর হাসে, ‘তো োর ওপরে রাগ করতে পারি! নারকেলের চিড়ে কো োটে, উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে এটা সেটা আরো ো কত কী! শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 তার খো োকা যে বাড়ি ফিরবে! ক্লান্ত খো োকা! 18 বাংলা কুমড়ো ো ফুল শুকিয়ে গেছে, ঝরে পড়েছে ডাাঁটা; পুইুঁ লতাটা নেতানো ো, ‘খো োকা এলি?’— ঝাপসা চো োখে মা তাকায় উঠো োনে, উঠো োনে যেখানে খো োকার শব শকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে। এখন, মার চো োখে চৈত্রের রো োদ পুড়িয়ে দেয় শকুনিদের। তারপর, দাওয়ায় বসে মা আবার ধান ভানে, বিন্নি ধানের খই ভাজে, খো োকা তার কখন আসে! কখন আসে! এখন, মার চো োখে শিশির ভো োর, স্নেহের রো োদে ভিটে ভরেছে। শব্দের অর্্থ উড়কি ধান: এক রকম ধান। নুয়ে পড়া: ঝুলে পড়া। কথার ঝুড়ি: অনেক কথা। বিন্নি ধান: এক রকম ধান। ঝাপসা চো োখে: অস্পষ্ট দৃষ্টিতে। ব্যবচ্ছেদ: কাটা-ছেেঁড়া। ডালের বড়ি: ডাল দিয়ে বানানো ো ছো োটো ো ভিটে: বাসভূমি। বড়া। মুড়কি: গুড় দিয়ে মাখানো ো খই। দাওয়া: ঘরের বারান্দা। শব: মৃতদেহ। নারকেলের চিড়ে: চিড়ার মতো ো করে শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 বানানো ো নারকেলের টুকরা। 19 প্রমিত বলি প্রমিত লিখি ধ্বনির কম্পনমাত্রা ও বায়ুর প্রবাহ অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনি ধ্বনির কম্পনমাত্রা অনুযায়ী বিভাজন ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে স্বরযন্ত্রে বায়ুর কম্পন কমবেশি হওয়ার ভিত্তিতে ব্যঞ্জনধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়: ঘো োষ ও অঘো োষ। ঘো োষ ব্যঞ্জন: যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে স্বরযন্ত্রে কম্পন অপেক্ষাকৃত বেশি হয়, সেসব ধ্বনিকে বলে ঘো োষধ্বনি। যেমন: গ, ঘ, জ, ঝ, ড, ঢ, ড়, ঢ়, দ, ধ, ন, ব, ভ, ম, র, ল। অঘো োষ ব্যঞ্জন: যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে স্বরযন্ত্রে কম্পন অপেক্ষাকৃত কম হয়, সেসব ধ্বনিকে বলে অঘো োষধ্বনি। যেমন: ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ, শ, স, হ। ধ্বনি সৃষ্টিতে বায়ুর প্রবাহ অনুযায়ী বিভাজন ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে বায়ুপ্রবাহের বেগ কমবেশি হওয়ার ভিত্তিতে ব্যঞ্জনধ্বনিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়: অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ। অল্পপ্রাণ ব্যঞ্জন: সেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ফুসফুস থেকে নির্্গত বায়ুপ্রবাহের মাত্রা অপেক্ষাকৃত কম, সেগুলো োকে বলা হয় অল্পপ্রাণ ধ্বনি। যেমন: ক, গ, চ, জ, ট, ড, ড়, ত, দ, প, ব, শ, স। মহাপ্রাণ ব্যঞ্জন: সেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ফুসফুস থেকে নির্্গত বায়ুপ্রবাহ অপেক্ষাকৃত বেশি, সেগুলো োকে বলা হয় মহাপ্রাণ ধ্বনি। যেমন: খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, ঢ়, থ, ধ, ফ, ভ, হ। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 20 বাংলা ২.১.১ কম্পনমাত্রা ও বায়ুপ্রবাহ অনুযায়ী ধ্বনির উচ্চারণ ‘মাগো ো, ওরা বলে’ কবিতা থেকে কিছু শব্দ নিচের তালিকায় দেওয়া হলো ো। লালচিহ্নিত বর্্ণগুলো ো উচ্চারণ করে এগুলো োর বৈশিষ্টট্য যাচাই করো ো এবং ছকে লেখো ো। কাজ শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে নিজের উত্তর মেলাও, আলো োচনা করো ো এবং প্রয়ো োজনে সংশো োধন করো ো। নিচে দুটি নমুনা-উত্তর করে দেওয়া হলো ো। শব্দ লাল চিহ্নিত বর্্ণটির ধ্বনি-বৈশিষ্টট্য কু মড়ো ো অঘো োষ অল্পপ্রাণ ফু ল অঘো োষ মহাপ্রাণ লতা ডাঁটা গাছ ছুিট পকেট েভজা েদরি কথা পাগল শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 মুড়কি 21 প্রমিত বলি প্রমিত লিখি বাক্প্রত্্যঙ্গ ধ্বনি উচ্চারণে যেসব প্রত্্যঙ্গ সরাসরি কাজ করে সেগুলো োকে বাক্প্রত্্যঙ্গ বলে। এখানে বাক্প্রত্্যঙ্গের ছবি দেওয়া হলো ো। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 22 বাংলা ২.১.২ ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণে বাক্প্রত্্যঙ্গের সক্রিয়তা নিচের ছকের লালচিহ্নিত বর্্ণগুলো ো উচ্চারণ করো ো। উচ্চারণের সময়ে কো োন বাক্পপ্রত্্যঙ্গ ব্যবহৃত হচ্ছে তা বো োঝার চেষ্টা করো ো এবং ছকের নির্্দদিষ্ট জায়গায় লেখো ো। কাজ শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে নিজের উত্তর মেলাও, আলো োচনা করো ো এবং প্রয়ো োজনে সংশো োধন করো ো। একটি নমুনা-উত্তর করে দেওয়া হলো ো। কো োন বাক্্প্রত্্যঙ্গ ব্যবহৃত হচ্ছে শব্দ (কণ্ঠ, তালু, মূর্ ্ধধা, দন্ত, ওষ্ঠ) কু মড়ো ো কণ্ঠ ফু ল লতা ডাঁটা গাছ ছুিট পকেট েভজা েদরি কথা পাগল শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 মুড়কি 23 প্রমিত বলি প্রমিত লিখি উচ্চারণস্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনি বাক্প্রত্্যঙ্গের যে জায়গায় বায়ু বাধা পেয়ে ব্যঞ্জনধ্বনি সৃষ্টি করে, সেই জায়গাটি হলো ো ঐ ব্যঞ্জনের উচ্চারণস্থান। উচ্চারণস্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়: ১. কণ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন, ২. তালব্য ব্যঞ্জন, ৩. মূর্ ্ধন্য ব্যঞ্জন, ৪. দন্তত্য ব্যঞ্জন, ৫. ওষ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন। ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে কো োন বাক্প্রত্্যঙ্গের অংশগ্রহণ মুখ্য এবং কো োন বাক্প্রত্্যঙ্গের অংশগ্রহণ গৌ ৌণ, নিচের ছকে তা দেখানো ো হলো ো: ধ্বনি মুখ্য বাক্প্রত্্যঙ্গ গৌ ৌণ বাক্প্রত্্যঙ্গ কণ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন জিভের পিছনের অংশ নরম তালু তালব্য ব্যঞ্জন জিভের সামনের অংশ শক্ত তালু মূর্ ্ধন্য ব্যঞ্জন জিভের ডগা মূর্ ্ধধা দন্তত্য ব্যঞ্জন জিভের ডগা উপরের পাটির দাাঁত ওষ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন নিচের ঠোঁট উপরের ঠোঁট কণ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন: যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের পিছনের অংশ উঁচু হয়ে আলজিভের কাছাকাছি নরম তালুর কাছে বায়ুপথে বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলো োকে কণ্ঠঠ্য ব্যঞ্জন বলে। কাকা, খালু, গাছ, ঘাস, কাঙাল প্রভৃতি শব্দের ক, খ, গ, ঘ, ঙ কণ্ঠঠ্য ব্যঞ্জনের উদাহরণ। তালব্য ব্যঞ্জন: যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের ডগা খানিকটা প্রসারিত হয়ে শক্ত তালুর কাছে বায়ুপথে বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলো োকে তালব্য ব্যঞ্জন বলে। চাচা, ছাতা, জাল, ঝড়, শসা প্রভৃতি শব্দের চ, ছ, জ, ঝ, শ তালব্য ব্যঞ্জনের উদাহরণ। মূর্ ্ধন্য ব্যঞ্জন: দন্তমূল এবং তালুর মাঝখানে যে উঁচু অংশ থাকে তার নাম মূর্ ্ধধা। যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের ডগা মূর্ ্ধধার সঙ্গে লেগে বায়ুপথে বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলো োকে মূর্ ্ধন্য ব্যঞ্জন বলে। টাকা, ঠেলাগাড়ি, ডাকাত, ঢো োল, গাড়ি, মূঢ় প্রভৃত?