Bangla 7th Grade Textbook PDF

Document Details

LionheartedWilliamsite2035

Uploaded by LionheartedWilliamsite2035

2023

National Curriculum and Textbook Board

Tags

Bangla textbook Bangla language 7th grade education

Summary

This is a 7th-grade Bangla language textbook from the National Curriculum and Textbook Board of Bangladesh for 2023. The book promotes a modern curriculum focused on language skills and literary knowledge.

Full Transcript

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ অনুযায়ী প্রণীত এবং 2023 শিক্ষাবর্ ্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য নির্ ্ধধারিত পাঠ্যপুস্তক সপ্তম শ্রেণি (পরীক্ষাম...

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড কর্ক তৃ জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ অনুযায়ী প্রণীত এবং 2023 শিক্ষাবর্ ্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য নির্ ্ধধারিত পাঠ্যপুস্তক সপ্তম শ্রেণি (পরীক্ষামূলক সংস্করণ) রচনা ও সংকলন তারিক মনজুর জফির সেতু ত ন ম জাকিয়া বারিরা প্রণয় ভূঞাাঁ ফিরো োজ আল ফেরদৌ ৌস সম্পাদনা স্বরো োচিষ সরকার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড ৬৯-৭০ মতিঝিল বাণিজ্্যযিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ কর্কতৃ প্রকাশিত [জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ কর্ক তৃ সর্্বস্বত্ব সংরক্ষিত] প্রকাশকাল: ডিসেম্বর 2022 পুনর্ মুদ্রণ: --------- 2023 শিল্প নির্্দদেশনা মঞ্জুর আহমদ প্রচ্ছদ রাসেল রানা অলংকরণ মামুন হো োসাইন প্রমথেশ দাস পুলক গ্রাফিক্স নূর-ই-ইলাহী আবাবিল যুল জালাল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্ক তৃ বিনামূল্যে বিতরণের জন্য মুদ্রণে: প্রসঙ্গ কথা পরিবর্্তনশীল এই বিশ্বে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে জীবন ও জীবিকা। প্রযুক্তির উৎকর্্ষষের কারণে পরিবর্্তনের গতিও হয়েছে অনেক দ্রুত। দ্রুত পরিবর্্তনশীল এই বিশ্বের সঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার কো োনো ো বিকল্প নেই। কারণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ইতিহাসের যেকো োনো ো সময়ের চেয়ে এগিয়ে চলেছে অভাবনীয় গতিতে। চতুর্্থ শিল্পবিপ্লব পর্্যযায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ আমাদের কর্্মসংস্থান এবং জীবনযাপন প্রণালিতে যে পরিবর্্তন নিয়ে আসছে তার মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে সম্পর্্ক আরও নিবিড় হবে। অদূর ভবিষ্যতে অনেক নতুন কাজের সুযো োগ তৈরি হবে যা এখনো ো আমরা জানি না। অনাগত সেই ভবিষ্যতের সাথে আমরা যেন নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারি তার জন্য এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়ো োজন। পৃথিবী জুড়ে অর্্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটলেও জলবায়ু পরিবর্্তন, বায়ুদূষণ, অভিবাসন এবং জাতিগত সহিংসতার মতো ো সমস্যা আজ অনেক বেশি প্রকট। দেখা দিচ্ছে কো োভিড-১৯ এর মতো ো মহামারি যা সারা বিশ্বের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং অর্্থনীতিকে থমকে দিয়েছে। আমাদের প্রাত্্যহিক জীবনযাত্রায় সংযো োজিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্্যযালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা। এসব চ্্যযালেঞ্জ ও সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাাঁড়িয়ে তার টেকসই ও কার্্যকর সমাধান এবং আমাদের জনমিতিক সুফলকে সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। আর এজন্য প্রয়ো োজন জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবো োধ ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন দূরদর্শী, সংবেদনশীল, অভিযো োজন-সক্ষম, মানবিক, বৈশ্বিক এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ স্বল্্পপোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পদার্্পণের লক্ষষ্যমাত্রা অর্্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষা হচ্ছে এই লক্ষষ্য অর্্জনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এজন্য শিক্ষার আধুনিকায়ন ছাড়া উপায় নেই। আর এই আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে একটি কার্্যকর যুগো োপযো োগী শিক্ষাক্রম প্রণয়নের প্রয়ো োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্্ডডের একটি নিয়মিত, কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্্ণকার্্যক্রম হলো ো শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্্জন। সর্্বশেষ শিক্ষাক্রম পরিমার্্জন করা হয় ২০১২ সালে। ইতো োমধ্যে অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে। প্রয়ো োজনীয়তা দেখা দিয়েছে শিক্ষাক্রম পরিমার্্জন ও উন্নয়নের। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষার বর্্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং শিখন চাহিদা নিরূপণের জন্য ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালব্যাপী এনসিটিবির আওতায় বিভিন্ন গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলন পরিচালিত হয়। এসব গবেষণা ও কারিগরি অনুশীলনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকার মতো ো যো োগ্য প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিচ্ছিন্ন যো োগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম উন্নয়ন করা হয়েছে। যো োগ্যতাভিত্তিক এ শিক্ষাক্রমের আলো োকে সকল ধারার (সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হলো ো। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলো োকে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এমনভাবে রচনা করা হয়েছে যেন তা অনেক বেশি সহজবো োধ্য এবং আনন্দময় হয়। এর মাধ্যমে চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা বিভিন্ন প্রপঞ্চ ও ঘটনার সাথে পাঠ্যপুস্তকের একটি মেলবন্ধন তৈরি হবে। উল্লেখ্য যে, ইতো োমধ্যে অন্তর্্বর্তীকালীন ট্রাই-আউটের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামত সংগ্রহ করে লেখক এবং বিষয় বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে যৌ ৌক্তিক মূল্যায়ন করে পাঠ্যপুস্তকটি পরিমার্্জন করা হয়েছে। আশা করা যায় পরিমার্্জজিত পাঠ্যপুস্তকটির মাধ্যমে শিখন হবে অনেক গভীর এবং জীবনব্যাপী। পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়নে ধর্্ম, বর্্ণ, সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকটি রচনা, সম্পাদনা, চিত্রাঙ্কন ও প্রকাশনার কাজে যাাঁরা মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তাাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পরীক্ষামূলক এই সংস্করণের কো োনো ো ভুল বা অসংগতি কারো ো চো োখে পড়লে এবং এর মানো োন্নয়নের লক্ষ্যে কো োনো ো পরামর্্শ থাকলে তা জানানো োর জন্য সকলের প্রতি বিনীত অনুরো োধ রইল। প্রফেসর মো োঃঃ ফরহাদুল ইসলাম চেয়ারম্যান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বো োর্ ্ড, বাংলাদেশ ভূমিকা প্রমিত বাংলা ভাষায় ভালো োভাবে যো োগাযো োগ করতে পারার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সপ্তম শ্রেণির বাংলা বই তৈরি করা হয়েছে। বইয়ের পাঠ-নির্্ববাচন ও পাঠ-বিন্যাস করার সময়ে এমন কিছু কৌ ৌশল ও কাজ যো োগ করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে তাদের ভাষাদক্ষতা বাড়াতে পারে। ভাষাদক্ষতা বাড়ানো োর পাশাপাশি বাংলা সাহিত্্যযের বেশ কিছু শাখার সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ বইয়ের মূল লক্ষষ্য যেহেতু প্রমিত ভাষা শেখা, তাই বাছাই করা পাঠের মধ্যে কিছু শব্দরূপের পরিবর্্তন করতে হয়েছে। সপ্তম শ্রেণির বইটি প্রণয়নের সময়ে ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখা হয়েছে। এ বইয়ে কিছু অনুশীলনীর পুনরালো োচনা আছে এবং কিছু নতুন আলো োচনা ও কাজ যুক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা যাতে ক্রমান্বয়ে বাড়ে, সেদিকে লক্ষ রেখে সপ্তম শ্রেণির বইটি আগের শ্রেণির বইয়ের ধারবাহিকতায় রচিত। পাঠের সাথে শিক্ষার্থীর সংযো োগ ঘনিষ্ঠ করতে বইয়ের নির্্দদেশনা ও ভাষা ব্যবহারে কথো োপকথনের ভঙ্গি রক্ষা করা হলো ো। পূর্্ববর্তী শ্রেণির আটটি দক্ষতাকে খানিকটা উন্নীত করে এই শ্রেণিতে সেগুলো ো নিম্নরূপে সাজানো ো হয়েছে: ১. প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে মর্্যযাদা বজায় রেখে মানুষের সঙ্গে যো োগাযো োগ করতে পারা; ২. প্রমিত ভাষায় কথা বলা ও লেখার ক্ষেত্রে সাবলীলতা অর্্জন করতে পারা; ৩. বিশিষ্ট লেখকদের রচিত কবিতা, ছড়া, গান, গল্প, প্রবন্ধ, নাটক ইত্্যযাদি বুঝতে পারা; ৪. শব্দ, অর্্থ ও যতি বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাক্্য রচনা করতে পারা; ৫. প্রমিত ভাষায় বিভিন্ন ধরনের বিবরণ লিখতে পারা, অনুভূতি প্রকাশ করতে পারা এবং কো োনো ো কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে পারা; ৬. কবিতা-গল্প-প্রবন্ধ-নাটক-সাহিত্্যযের বিভিন্ন রূপের গঠন-বৈশিষ্টট্য বুঝতে পারা এবং এগুলো ো রচনার মধ্য দিয়ে নিজের কল্পনা ও অনুভূতিকে প্রকাশ করতে পারা; এবং ৭. কো োনো ো কিছু বো োঝার জন্য যথাযথ প্রশ্ন করতে পারা, অন্যের মত বিবেচনায় নিতে পারা এবং যুক্তি দিয়ে কো োনো ো বিষয়ের উপর আলো োচনা করতে পারা। পূর্্ববর্তী শ্রেণির বইয়ের মতো ো সপ্তম শ্রেণির বইটিও অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক শিক্ষা-কার্্যক্রমের অংশ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই কার্্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষাদক্ষতা ও সাহিত্্য জ্ঞান বাড়াতে সক্ষম হবে। সূচিপত্র প্রথম অধ্যায় প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি 1 দ্বিতীয় অধ্যায় প্রমিত ভাষায় কথা বলি ১ম পরিচ্ছেদ: ধ্বনির উচ্চারণ 14 ২য় পরিচ্ছেদ: শব্দের উচ্চারণ 20 তৃতীয় অধ্যায় অর্্থ বুঝে বাক্্য লিখি ১ম পরিচ্ছেদ: শব্দের শ্রেণি ও বাক্্যযের শ্রেণি 26 ২য় পরিচ্ছেদ: শব্দের গঠন 31 ৩য় পরিচ্ছেদ: শব্দের অর্্থ 41 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ: যতিচিহ্ন 50 ৫ম পরিচ্ছেদ: বাক্্য 56 চতুর্্থ অধ্যায় চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই 60 পঞ্চম অধ্যায় বুঝে পড়ি লিখতে শিখি ১ম পরিচ্ছেদ: প্রায়ো োগিক লেখা 72 ২য় পরিচ্ছেদ: বিবরণমূলক লেখা 79 ৩য় পরিচ্ছেদ: তথ্যমূলক লেখা 87 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ: বিশ্লেষণমূলক লেখা 95 ৫ম পরিচ্ছেদ: কল্পনানির্্ভর লেখা 104 ষষ্ঠ অধ্যায় সাহিত্্য পড়ি লিখতে শিখি ১ম পরিচ্ছেদ: কবিতা 117 ২য় পরিচ্ছেদ: ছড়া 136 ৩য় পরিচ্ছেদ: গান 144 ৪র্্থ পরিচ্ছেদ: গল্প 148 ৫ম পরিচ্ছেদ: প্রবন্ধ 163 ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ: নাটক 171 ৭ম পরিচ্ছেদ: সাহিত্্যযের নানা রূপ 181 সপ্তম অধ্যায় অন্যের মত বিবেচনায় নিয়ে আলো োচনা করি ১ম পরিচ্ছেদ: প্রশ্ন করতে শেখা 184 ২য় পরিচ্ছেদ: সমালো োচনা করতে শেখা 186 বাংলা প্রথম অধ্যায় প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি পরিস্থিতি অনুযায়ী যো োগাযো োগ নিচে কয়েকটি পরিস্থিতির উল্লেখ আছে। এসব পরিস্থিতিতে কীভাবে যো োগাযো োগ করবে, তা পরিকল্পনা করো ো এবং ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করো ো। পরিস্থিতি ১ আজ তো োমার একজন সহপাঠী ও তুমি সবার আগে ক্লাসে চলে এসেছ। ক্লাসরুম একটু আগেই ঝাড়ু দেওয়া হয়েছে এবং মেঝে পানি দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে, যা তুমি খেয়াল করো োনি। ভেজা মেঝেতে তো োমার জুতার ছাপ পড়ায়, বিদ্যালয়ের পরিছন্নতাকর্মী ওই জায়গাগুলো োতে আবার মুছে দিতে থাকলেন। এ অবস্থায় তুমি তাকে কী বলবে এবং কীভাবে বলবে? শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 1 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি পরিস্থিতি ২ বিশেষ প্রয়ো োজনে মাকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়ি যেতে হবে, যেখানে আগে কখনো ো যাওনি। সেই আত্মীয়রা থাকে তো োমাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে। ওই জায়গায় কীভাবে যাবে, আর ঠিকমতো ো পৌ ৌঁঁছানো োর পর কার কার সাথে যো োগাযো োগ করবে? পরিস্থিতি ৩ বিদ্যালয়ে আসার পথে জানতে পারলে, তো োমাদের স্কুলের একজন ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 বন্ধুরা মিলে আলো োচনা করলে এবং সিদ্ধান্ত নিলে যে তো োমরা বাল্যবিবাহ প্রতিরো োধ করার চেষ্টা করবে। এখন বন্ধুরা মিলে কার কার সাথে যো োগাযো োগ করবে ও কী বলবে? 2 বাংলা পরিস্থিতি ৪ বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী নতুন ভর্্ততি হয়েছে। কিছুদিন আগে তার পরিবার এ এলাকায় এসেছে । তো োমার বিদ্যালয় এবং এলাকা সম্পর্্ককে তাকে কীভাবে পরিচিত করবে? পরিস্থিতি ৫ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 একটি বিষয় নিয়ে তো োমার দুই বন্ধুর মতের পার্্থক্্য হয়েছে এবং তাদের মধ্যে তর্্ককাতর্্ককি হচ্ছে। কিছুক্ষণ ধরে এ অবস্থা চলায় তুমি এগিয়ে গেলে এবং তাদেরকে শান্ত করতে চাইলে। তো োমার ভূমিকা ও কথা কী হবে? 3 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি পরিস্থিতি ৬ তো োমার কাছাকাছি এলাকায় আগুন লেগেছে। এ রকম জরুরি অবস্থায় কার কার সাথে কিংবা কো োন সেবাসংস্থার সাথে যো োগাযো োগ করবে এবং কীভাবে যো োগাযো োগ করবে? যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে বিবেচ্্য যে কো োনো ো ধরনের পরিস্থিতিতে অন্যের সাথে যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত বলে তো োমার মনে হয়, সেগুলো ো নিচে লেখো ো। ক)................................................................................................................................................................................................................................................ খ)................................................................................................................................................................................................................................................ গ)........................................................................................................................ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024........................................................................................................................ 4 বাংলা ভাষায় মর্্যযাদার প্রকাশ মানুষের সাথে কথা বলার সময়ে বয়স ও মর্্যযাদা অনুযায়ী সর্্বনাম ব্যবহার করতে হয়। তুমি, আপনি, তুই, সে, তিনি, ও-এগুলো ো সর্্বনাম শব্দ। সর্্বনাম মূলত তিন ধরনের: ১. সাধারণ সর্্বনাম ২. মানী সর্্বনাম ৩. ঘনিষ্ঠ সর্্বনাম তুমি করে বলা যায় ভাই-বো োনের সঙ্গে, ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে, বাবা-মার সঙ্গে, বন্ধুর সঙ্গে। এগুলো ো সাধারণ সর্্বনাম। আপনি করে বলতে হয় শিক্ষকের সঙ্গে, বয়সে বড়ো ো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে, অপরিচিত লো োকের সঙ্গে। এগুলো ো মানী সর্্বনাম। তুই করে বলা হয় কারো ো সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠতা থাকলে। আবার কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলার সময়েও তুই ব্যবহার করা হয়। এগুলো ো ঘনিষ্ঠ সর্্বনাম। মর্্যযাদা অনুযায়ী সর্্বনামের যেমন পরিবর্্তন হয়, ক্রিয়ারও তেমন পরিবর্্তন হয়। নিচে সর্্বনাম অনুযায়ী ‘করা’ ক্রিয়ার কয়েকটি রূপ দেখানো ো হলো ো। সর্্বনাম অনুযায়ী ক্রিয়াপদের রূপ সাধারণ সর্্বনাম মানী সর্্বনাম ঘনিষ্ঠ সর্্বনাম তুমি/তো োমরা করো ো আপনি/আপনারা করুন তুই/তো োরা করিস তুমি/তো োমরা করছ আপনি/আপনারা করছেন তুই/তো োরা করছিস তুমি/তো োমরা করেছ আপনি/আপনারা করেছেন তুই/তো োরা করেছিস তুমি/তো োমরা করতে আপনি/আপনারা করতেন তুই/তো োরা করতিস তুমি/তো োমরা করেছিলে আপনি /আপনারা করেছিলেন তুই/তো োরা করেছিলি তুমি/তো োমরা করবে আপনি/আপনারা করবেন তুই/তো োরা করবি তুমি/তো োমরা কো োরো ো সে/তারা করে তিনি/তাাঁরা করেন ও/ওরা করে সে/তারা করছে তিনি/তাাঁরা করছেন ও/ওরা করছে সে/তারা করেছে তিনি/তাাঁরা করেছেন ও/ওরা করেছে সে/তারা করত তিনি/তাাঁরা করতেন ও/ওরা করত সে/তারা করেছিল তিনি/তাাঁরা করেছিলেন ও/ওরা করেছিল শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 সে/তারা করবে তিনি/তাাঁরা করবেন ও/ওরা করবে 5 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি মর্্যযাদা অনুযায়ী সর্্বনাম ও ক্রিয়ার প্রয়ো োগ সর্্বনাম ও ক্রিয়াশব্দগুলো ো মর্্যযাদা অনুযায়ী ঠিক করে নিচের খালি জায়গায় লেখো ো। আমার নানা একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাকে নিয়ে আমার বড়ো ো মামা জেলা সদরের হাসপাতালে গেল। হাসপাতালের ডাক্তার বলেছিল, রো োগীকে কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। ওই সময় নানা তিন-চার দিন হাসপাতালে ছিল। মা হাসপাতালে থেকে নানার সেবা করত। একদিন বিকালে আমি বড়ো ো মামার সাথে হাসপাতালে গিয়েছিলাম নানাকে দেখতে। এত বড়ো ো হাসপাতাল আমি আগে দেখিনি। জরুরি বিভাগের সামনে একটু পরপরই রো োগী আসছে। আর সেখানকার ডাক্তার-নার্্স সেসব রো োগী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। বেশি লো োকের ভিড় দেখে দারো োয়ান বারবার বলছে, ‘তো োমরা এখানে ভিড় করবেন না।’ নানা আমাকে দেখে খুব খুশি হলো ো। তবু তিনি বলল, ‘তুই আবার আসতে গেলে কেন?’ নানা আমাকে আদর করে তুই করে বলে। আমি ছো োটো োবেলায় নানাকে তুমি করে বলতাম। এখন তাকে আপনি করে বলি। আমি নানার কথার উত্তরে বললাম, ‘নানাভাই, আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।’ খানিক বাদে একজন নার্্স এসে নানাকে ওষুধ খাইয়ে গেল। সে বললেন কাল নানাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেবে। সন্ধ্যার আগে আগে বড়ো ো মামা যাওয়ার জন্যে উঠে দাাঁড়ালেন। তারপর বলল, ‘চলো ো, এবার যাই; কাল সকালে আবার আসিস।’ আমি বললাম ‘চলো ো, মামা।’.................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... শিক্ষাবর্ ্ষ 2024...................................................................................................................................................... 6 বাংলা................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024...................................................................................................................................................... 7 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি ভাষিক যো োগাযো োগ অভাষিক যো োগাযো োগ আমরা যখন অন্যের সাথে কথা বলি, সেটা একধরনের যো োগাযো োগ। চিঠি বা পত্র লিখেও আমরা যো োগাযো োগ করি। আবার, ইশারা বা আকার-ইঙ্গিতের মাধ্যমেও আমরা যো োগাযো োগ করি। বিভিন্ন ছবি বা সংকেতের মাধ্যমেও আমাদের যো োগাযো োগ বা ভাব-বিনিময় হয়। দৈনন্দিন জীবনে তুমি চর্্চচা করো ো এমন কয়েকটি ভাষিক যো োগাযো োগের উদাহরণ দাও।................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................ দৈনন্দিন জীবনে তুমি চর্্চচা করো ো এমন কয়েকটি অভাষিক যো োগাযো োগের উদাহরণ দাও।................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................ মানুষ নানা প্রয়ো োজনে একে অন্যের সাথে যো োগাযো োগ করে। যো োগাযো োগ মূলত দুইভাবে হয়: ১. ভাষিক যো োগাযো োগ ২. অভাষিক যো োগাযো োগ ভাষিক যো োগাযো োগ: ভাষিক যো োগাযো োগের প্রধান রূপ চারটি-শো োনা, বলা, পড়া ও লেখা। এর মধ্যে বলা ও শো োনার কাজে মুখ ও কানের ভূমিকা প্রধান। যন্ত্রে তৈরি শব্দও আমরা কান দিয়ে শুনে থাকি। অন্যদিকে লেখা ও পড়ার কাজে হাত ও চো োখ প্রধান ভূমিকা রাখে। যন্ত্রে লেখা শব্দও আমরা চো োখ দিয়ে পড়তে পারি। কথা বলা, বই পড়া, ফো োনে আলাপ করা ও বার্্ততা পাঠানো ো, রেডিও-টেলিভিশন শো োনা ও দেখা, কাগজে লেখা বা কম্পিউটারে টাইপ করা ইত্্যযাদি ভাষিক যো োগাযো োগের উদাহরণ। এছাড়া শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য রয়েছে ইশারা ভাষা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য রয়েছে ব্রেইল ভাষা। অভাষিক যো োগাযো োগ: যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে কথা বলা ও লেখার পাশাপাশি কিছু অভাষিক কৌ ৌশলও কাজে লাগানো ো হয়। তখন মুখভঙ্গি ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গি, হাত ও চো োখের ইশারা, হাতের স্পর্্শ, ছবি ও সংকেত ইত্্যযাদির ব্যবহার হয়। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 8 বাংলা প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ শ্রেণিশিক্ষক সো োমা জাহান ক্লাসে ঢুকেই বললেন, ‘তোমরা কি গতকাল নো োটিশ বো োর্ ্ড দেখেছ?’ সো োহেল দাাঁড়িয়ে বলল, ‘ম্যাডাম, আমি গতকাল স্কুলে আসিনি।’ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ কৌ ৌতূহলী হয়ে উঠল। কী লেখা থাকতে পারে নো োটিশ বো োর্্ডডে? সো োহেলের মতো ো দু-একজন গতকাল স্কুলে আসেনি। তাদের জানার কথা নয়। তবে, যারা স্কুলে ছিল, তাদের সবাই ঠিকমতো ো নো োটিশবো োর্ ্ড খেয়াল করেনি। ফলে সেখানে কী লেখা আছে, সবার জানা নেই। সো োমা জাহান বললেন, ‘তো োমরা যারা দেখো োনি, তারা দেখে নিও। তবে আমি জানতে চাচ্ছি, এমন কেউ কি আছ যে নো োটিশ বো োর্ ্ড দেখেছ এবং সেখানে কী লেখা আছে তা বলতে পারবে?’ মিলি বলল, ‘ম্যাডাম, আমি দেখেছি। আমি বলতে পারব সেখানে কী লেখা আছে।’ সো োমা জাহান মিলিকে বলার অনুমতি দিলেন। মিলি বলল, ‘নোটিশবো োর্্ডডে লেখা আছে সামনের সপ্তাহে স্কুলে বার্্ষষিক ক্রীড়া প্রতিযো োগিতা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযো োগিতায় একজন শিক্ষার্থী দুটি খেলায় নাম দিতে পারবে।’ সো োমা জাহান যো োগ করলেন, ‘তো োমরা দলগতভাবেও একটি খেলায় নাম দিতে পারবে। দলগতভাবে খেলার জন্য আছে ক্রিকেট এবং হ্্যযান্ডবল। কে কো োন খেলা খেলবে, তা ঠিক করে আমার কাছে নাম জমা দাও।’ তারপর সবাই মিলে আলাপ করতে লাগল কে কো োন খেলায় নাম লেখাবে। সো োহেল ক্রিকেট ভালো ো খেলে, তাই তাকে দলনেতা করে দলগঠনের কথা হতে লাগল। পলাশ ওই কথার মধ্যেই সো োহেলকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুই গতকাল স্কুলে আসিসনি কেন?’ সো োহেল জবাব না দিয়ে ক্রিকেট দলে কে কে থাকবে, তার তালিকা তৈরি করতে লাগল। পলাশ বলল, ‘সো োহেল, তুই কি অসুস্থ ছিলি?’ সো োহেল সংক্ষেপে বলল, ‘না।’ পলাশ এবার বলল, ‘তুই অসুস্থ ছিলি না। তবে কাল কেন আসিসনি? তো োর বড়ো ো মামার তো ো বিদেশ থেকে আসার কথা ছিল। তিনি কি গতকাল এসেছেন?’ সো োহেল একটু বিরক্ত হয়ে বলল, ‘ওগুলো ো নিয়ে পরে কথা বলা যাবে। আগে ক্রিকেটের দলগঠন শেষ করি।’ পলাশের এবার সত্্যযি সত্্যযি মনে হলো ো, সো োহেলের বড়ো ো মামা বুঝি বিদেশ থেকে এসেছেন। তাই সে বলল, ‘বিদেশ থেকে কী এনেছেন রে!’ সো োহেল এবার উঁচু গলায় বলল, ‘আমি এ নিয়ে কথা বলব না।’ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 9 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি পড়ে কী বুঝলাম শ্রেণিশিক্ষক সো োমা জাহান ক্লাসে কো োন বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন?........................................................................................................................................................................................................................................................ সো োহেল কেন পলাশের কথায় বিরক্ত হয়েছিল?.................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... পলাশ যা জানতে চাচ্ছিল, তা আর কো োন উপায়ে সে জানতে পারত?.................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... সো োহেল কীভাবে পলাশকে প্রসঙ্গের মধ্যে আনার চেষ্টা করতে পারত?.................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... পলাশ কীভাবে সো োহেলের সাথে কথা বললে তা প্রাসঙ্গিক হতো ো?.................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগের ক্ষেত্রে কো োন কো োন দিক বিবেচনায় রাখতে হয় বলে তুমি মনে করো ো?........................................................................................................................................................................................................................................................ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024............................................................................................................................ 10 বাংলা প্রাসঙ্গিক কথা অপ্রাসঙ্গিক কথা কো োনো ো কিছু নিয়ে কথা বলার সময়ে বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে হয়। বিষয়ের মধ্যে থেকে কথা বলাকে প্রাসঙ্গিক কথা বলে। আর বিষয়ের বাইরের কথাকে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে। প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করতে পারা একটি দরকারি যো োগ্যতা। দুজন বা কয়েকজন মিলে আলাপের সময়ে বক্তা কিংবা শ্্ররোতাকে প্রসঙ্গের মধ্যে ধরে রাখতে হয়। প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক কথা খু ুঁজি একজন শিক্ষার্থী লালবাগের কেল্লা ঘুরতে গিয়েছিল। সে লালবাগ কেল্লা ঘুরে এসে নিচের মতো ো করে লিখল: অনেকদিন থেকেই ইচ্ছা ছিল পুরাতন কো োনো ো ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরতে যাব। বাবার মুখে অনেকবার লালবাগ কেল্লার কথা শুনেছি। ঠিক করা হলো ো সবাই মিলে সেখানে যাব। আমাদের যাওয়ার কথা শুনে আমার মামাতো ো বো োনও যেতে চাইল। ওর নাম শেফালি। শেফালিকে নিয়ে অনেক মজার মজার ঘটনা আছে। একবার যেমন, আমার মামা ওকে বলেছিলেন, ‘শেফালি, তুমি কি আমার জন্য এক কাপ চা বানিয়ে আনতে পারবে?’ শেফালি কী বুঝল কে জানে! একটা ডিম ভাজার প্রস্তুতি নিতে লাগল। তা দেখে আমার মামি হাসতে লাগলেন। শেফালি অনেক লজ্জা পেয়েছিল সেদিন। শেফালি লালবাগ কেল্লা দেখতে চায় শুনে বাবা হেসে বললেন, ‘ঠিক আছে।’ আমরা টিকিট কেটে কেল্লার ভিতরে ঢুকলাম। ওখানে যেতে যেতেই বাবা বলেছিলেন, লালবাগের কেল্লা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি মো োগল আমলে তৈরি করা একটি দুর্্গ। ১৬৭৮ সালে মো োগল সুবেদার আজম শাহ দুর্্গগের নির্্মমাণকাজ শুরু করেন। আজম শাহ ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র। বাবা আরও বলেছিলেন, দুর্্গগের কাজ শেষ হওয়ার আগেই আজম শাহকে দিল্লি চলে যেতে হয়। এরপর ১৬৮০ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাাঁ দুর্্গ তৈরির কাজ আবার শুরু করেন। কিন্তু ১৬৮৪ সালে শায়েস্তা খাাঁর কন্যা পরীবিবি হঠাৎ মারা যান। শায়েস্তা খাাঁ তখন দুর্্গগের কাজ থামিয়ে দেন। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 11 প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যো োগাযো োগ করি আগের পৃষ্ঠার রচনাটির মধ্যে কো োন কো োন কথা লালবাগ কেল্লা ভ্রমণের সাথে প্রাসঙ্গিক, আর কো োন কো োন কথা অপ্রাসঙ্গিক, তা নিচে লেখো ো। প্রাসঙ্গিক কথা............................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... অপ্রাসঙ্গিক কথা......................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................... শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 12 বাংলা উপস্থিত বক্তৃতা তো োমরা একটি করে বিষয় লিখে শিক্ষকের কাছে জমা দাও। বিষয় হতে পারে যে কো োনো ো কিছু , যেমন-আমার প্রিয় খেলা, রেলগাড়ি, বর্ ্ষষাকাল ইত্্যযাদি। শিক্ষক সেগুলো ো থেকে লটারির মাধ্যমে একেক জনকে একেকটি বিষয় নিয়ে বলতে দেবেন। কথা বলার সময় অন্যরা খেয়াল করবে কো োন কথাগুলো ো প্রাসঙ্গিক, আর কো োন কথাগুলো ো প্রাসঙ্গিক নয়। উপস্থিত বক্তৃতার সময়ে নিচের বিষয়গুলো ো খেয়াল রাখতে পারো ো: ক. প্রথমে বিষয় অনুযায়ী বক্তব্য গুছিয়ে নিয়ে কথা শুরু করতে হয়; খ. উপস্থিত বক্তৃতায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করা যায় না; গ. বিষয়টির ধারণা পরিষ্কার করার জন্য উদাহরণ, ব্যাখ্যা ইত্্যযাদির প্রয়ো োজন হতে পারে; ঘ. বিষয়ের সাথে সম্পর্্ক নেই এমন কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হয়; ঙ. নির্ ্ধধারিত সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে হয়; চ. বক্তৃতার ভাষা প্রমিত হতে হয়। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 13 প্রমিত ভাষায় কথা বলি দ্বিতীয় অধ্যায় প্রমিত ভাষায় কথা বলি ১ম পরিচ্ছেদ ধ্বনির উচ্চারণ বাংলাদেশের সব অঞ্চলের মানুষের ভাষা এক রকমের নয়। অঞ্চলভেদে অনেক শব্দের উচ্চারণ আলাদা হয়, কখনো ো কখনো ো একই অর্্থথে ভিন্ন ভিন্ন শব্দও ব্যবহার করা হয়। ভাষাগত এই তফাতকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা। আঞ্চলিক ভাষার কারণে এক অঞ্চলের মানুষের কথা আর এক অঞ্চলের মানুষের বুঝতে সমস্যা হয়। অন্যদিকে প্রমিত ভাষায় কথা বললে সব অঞ্চলের মানুষ সহজে বুঝতে পারে। প্রমিত ভাষাকে মনে করা হয় ভাষার মান রূপ বা আদর্্শ রূপ। প্রমিত ভাষার দুটি রূপ আছে: কথ্য প্রমিত ও লেখ্য প্রমিত। কথ্য প্রমিত ব্যবহার হয় আনুষ্ঠানিক কথা বলার সময়ে, অন্যদিকে লেখ্য প্রমিত ব্যবহার হয় লিখিত যো োগাযো োগের কাজে। প্রমিত ভাষার প্রয়ো োগ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা অফিস-আদালতে প্রমিত ভাষা ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা, সংবাদ পাঠ, হারানো ো বিজ্ঞপ্তি প্রচার, যে কো োনো ো ধরনের ঘো োষণা, খেলার মাঠের ধারাবিবরণী, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান, কো োনো ো বিষয়ে বক্তৃতা বা আলো োচনা ইত্্যযাদি আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে প্রমিত ভাষায় কথা বলা হয়ে থাকে। উপরের যে কো োনো ো একটি আনুষ্ঠানিক পরিস্থিতি এককভাবে বা দলে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করো ো। উপস্থাপন করা হয়ে গেলে কো োন কো োন শব্দ প্রমিত হয়নি, সে ব্যাপারে সহপাঠীদের মতামত নাও এবং নিচের ছক পূরণ করো ো। যে শব্দটি প্রমিত হয়নি শব্দটির প্রমিত রূপ পাঠকাটি পাটকাঠি গইয়া পেয়ারা শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 14 বাংলা শব্দ খু ুঁজি অনেক শব্দ তো োমার চারপাশের মানুষ ভিন্নভাবে উচ্চারণ করে, কিংবা প্রমিত শব্দের বদলে আলাদা শব্দ ব্যবহার করে। তো োমার উচ্চারণেও হয়তো ো এ রকম ব্যাপার ঘটে। প্রথম কলামে এ ধরনের শব্দ এবং দ্বিতীয় কলামে এর প্রমিত রূপ লেখো ো। শব্দটির উচ্চারণে পরিবর্্তন ঘটেছে, না কি শব্দের রূপটিই পরিবর্্ততিত হয়েছে, তা তৃতীয় কলামে নির্্দদেশ করো ো। আঞ্চলিক উচ্চারণ/শব্দ প্রমিত শব্দ উচ্চারণগত/শব্দগত পরিবর্্তন খাইছি খেয়েছি উচ্চারণগত পরিবর্্তন চঙ্গ মই শব্দগত পরিবর্্তন শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 15 প্রমিত ভাষায় কথা বলি ঘো োষ ও অঘো োষ ধ্বনি আমাদের গলার ভিতরে শ্বাসনালির উপরের দিকে যে পর্্দদা থাকে, তাকে ধ্বনিদ্বার বা স্বরতন্ত্রী বলে। ফুসফুস থেকে বাতাস বেরিয়ে আসার সময়ে এই ধ্বনিদ্বার কাাঁপে। কিছু ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ধ্বনিদ্বার কম কাাঁপে, সেগুলো োকে বলে অঘো োষ ধ্বনি। যেমন: ক খ চ ছ ট ঠ ত থ প ফ। আবার কিছু ধ্বনি উচ্চারণের সময় ধ্বনিদ্বার বেশি কাাঁপে, সেগুলো োকে বলে ঘো োষ ধ্বনি। যেমন: গ ঘ ঙ জ ঝ ঞ ড ঢ ণ দ ধ ন ব ভ ম। ধ্বনিদ্বারের বাইরে থেকে গলায় আলতো োভাবে দুটি আঙুল রেখে ধ্বনিগুলো ো উচ্চারণ করলে ঘো োষ ধ্বনি ও অঘো োষ ধ্বনির পার্্থক্্য বুঝতে পারবে। উচ্চারণ অনুশীলন করার জন্য নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো ো। ধ্বনির উচ্চারণ যথাযথ রেখে এগুলো ো জো োরে জো োরে পড়ো ো: কই খই গই ঘই চই ছই জই ঝই চাল ছাল জাল ঝাল টাল ঠাল ডাল ঢাল টিন ঠিন ডিন ঢিন তিন থিন দিন ধিন তুপ থুপ দুপ ধুপ পুপ ফুপ বুপ ভুপ কেক খেক গেক ঘেক পেক ফেক বেক ভেক ক্্যযাট খ্যাট গ্যাট ঘ্্যযাট ট্যাট ঠ্যাট ড্্যযাট ঢ্্যযাট চো োর ছো োর জো োর ঝো োর তো োর থো োর দো োর ধো োর শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 16 বাংলা উচ্চারণ ঠিক রেখে ছড়া পড়ি এখানে সত্্যযেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা একটি কবিতা দেওয়া হলো ো। সত্্যযেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯২২ সালে মারা যান। তাাঁকে বলা হয় ‘ছন্দের জাদুকর’। ‘বেণু ও বীণা’, ‘ফুলের ফসল’, ‘কুহু ও কেকা’ ইত্্যযাদি তাাঁর বিখ্যাত কবিতার বই। নিচের কবিতাটি কবির ‘কুহু ও কেকা’ নামের বই থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো ো; এরপর সরবে পাঠ করো ো। ছিন্ন-মুকুল সত্্যযেন্দ্রনাথ দত্ত সবচেয়ে যে ছো োটো ো পিিঁড়িখানি সেইখানি আর কেউ রাখে না পেতে, ছো োটো ো থালায় হয়নাকো ভাত বাড়া, জল ভরে না ছো োট্ট গেলাসেতে; বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছো োটো ো খাবার বেলায় কেউ ডাকে না তাকে, সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 তারি খাওয়া ঘুচেছে সব আগে। 17 প্রমিত ভাষায় কথা বলি সবচেয়ে যে অল্পে ছিল খুশি,- খুশি ছিল ঘেেঁষাঘেেঁষির ঘরে, সেই গেছে, হায়, হাওয়ার সঙ্গে মিশে দিয়ে গেছে জায়গা খালি করে, ছেড়ে গেছে, পুতুল, পু ুঁতির মালা, ছেড়ে গেছে মায়ের কো োলের দাবি, ভয়-তরাসে ছিল যে সবচেয়ে সেই খুলেছে আঁধার ঘরের চাবি! সবচেয়ে যে ছো োটো ো কাপড়গুলি সেগুলি কেউ দেয় না মেলে ছাদে, যে শয্যাটি সবার চেয়ে ছো োটো ো আজকে সেটি শূন্য পড়ে কাাঁদে; সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল সেই গিয়েছে সবার আগে সরে, ছো োট্ট যে-জন ছিল রে সবচেয়ে সেই দিয়েছে সকল শূন্য করে। শব্দের অর্্থ গেলাস: গ্লাস। ঘেেঁষাঘেেঁষির ঘর: বহু জন একত্রে থাকার ঘর । ঘো োচা: শেষ হওয়া। তরাস: ত্রাস, ভয়। পিিঁড়ি: বসার ছো োটো ো আসন। পু ুঁতির মালা: পু ুঁতি দিয়ে তৈরি মালা। পেতে রাখা: বসার জন্য মেঝেতে রাখা। ভাতবাড়া: খাওয়ার জন্য ভাত থালায় রাখা। শয্যা: শো োয়ার বিছানা। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 18 বাংলা উচ্চারণ ঠিক করি উচ্চারণের সময়ে অঞ্চলভেদে ঘো োষ ধ্বনি অঘো োষ ধ্বনিতে পরিণত হতে পারে, কিংবা অঘো োষ ধ্বনি ঘো োষ ধ্বনিতে পরিণত হতে পারে। আবার, অল্পপ্রাণ ধ্বনি বদলে মহাপ্রাণ ধ্বনি হয়ে যেতে পারে, কিংবা মহাপ্রাণ ধ্বনি বদলে অল্পপ্রাণ ধ্বনি হয়ে যেতে পারে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে তো োমরা শিখেছ, বাতাস কম-বেশির কারণে ধ্বনি অল্পপ্রাণ বা মহাপ্রাণ হয়। যেমন: ক গ চ জ ট ড ত দ প ব ধ্বনি অল্পপ্রাণ এবং খ ঘ ছ ঝ ঠ ঢ থ ধ ফ ভ ধ্বনি মহাপ্রাণ। নিচের ছকে ‘ছিন্ন মুকুল’ কবিতা থেকে কিছু শব্দ দেওয়া হয়েছে। যেসব ধ্বনির উচ্চারণে ঘো োষ-অঘো োষ কিংবা অল্পপ্রাণ-মহাপ্রাণের পার্্থক্্য ঘটতে পারে, সেগুলো ো লাল হরফে দেখানো ো হলো ো। তো োমার উচ্চারণ ঠিক হলে ডান কলামে টিকচিহ্ন (∙) দাও। শব্দ অঞ্চলভেদে বর্্ণটির প্রমিত এখানে কো োন ধরনের উচ্চারণ ঠিক বর্্ণটির উচ্চারণ উচ্চারণ পরিবর্্তন হয়েছে হলে টিকচিহ্ন যা হতে পারে যা হবে দাও সবচেয়ে প ব ঘো োষ ধ্বনি অঘো োষ ধ্বনি হয়েছে ফ প অল্পপ্রাণ ধ্বনি মহাপ্রাণ ধ্বনি হয়েছে ড ট েপতে ফ প ব ভ ভ ব ছ চ ফ প দ ধ ঘর গ ঘ ছ চ শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 ছাদ ত দ 19 প্রমিত ভাষায় কথা বলি ২য় পরিচ্ছেদ শব্দের উচ্চারণ নিচে একটি গল্প দেওয়া হলো ো। গল্পের নাম ‘কত দিকে কত কারিগর’। এটি সৈয়দ শামসুল হকের (১৯৩৫- ২০১৬) লেখা। সৈয়দ শামসুল হক কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটক রচনা করেছেন। সাহিত্্যযের বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখার কারণে তাাঁকে সব্যসাচী লেখক বলা হয়। তাাঁর লেখা উল্লেখযো োগ্য বইয়ের মধ্যে আছে-‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ ইত্্যযাদি। তিনি সিনেমার জন্যও কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লিখেছেন। ‘কত দিকে কত কারিগর’ গল্পটি পড়ার সময়ে প্রমিত উচ্চারণের দিকে খেয়াল রেখো ো। কত দিকে কত কারিগর সৈয়দ শামসুল হক শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 20 বাংলা নদী পার হয়ে, ওপারে কুমো োরদের একটা গ্রামের ভেতরে সারাদিন দেখছি ওদের মাটির কাজ। হাাঁড়ি পাতিল সরা সানকি তৈরি করছে ওরা। বেশি কৌ ৌতূহল নিয়ে দেখেছি পাটার কাজ। মাটির পাটায় ফুলের নকশা, রবীন্দ্রনাথ, বেণীবন্ধনরত যুবতীর চিত্র, জয়নুলের আঁকা গো োরুর চাকা ঠেলে তো োলার প্রতিলিপি, উড়ন্ত পরি, ময়ূরপঙ্খি নৌ ৌকার চিত্র, চো োখ বুজে নজরুল যে বাাঁশি বাজাচ্ছেন, সেই ফটো োগ্রাফের নকল। বাাঁশবনে আচ্ছন্ন শীতল একটি গ্রামে, অবিশ্বাস্য ঝিম ধরা নীরবতার ভেতরে, সবুজ শ্যাওলা ধরা কুমো োরদের প্রাঙ্গণে সার দিয়ে সাজানো ো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জয়নুল। আজকাল এগুলো োর বিক্রি ভালো ো। সস্তায় ঘরের দেয়াল সাজাবার জন্যে অনেকেই কেনে। একেকটা চিত্রের জন্যে কাঠের ওপর খো োদাই করা নকশা আছে। তার ওপর কাদার তাল টিপে টিপে পাটা তৈরি করছে ওরা। কাদার তালে ফুটে উঠছে নকশা। বাাঁশের কলম দিয়ে সংশো োধন করে পাটাগুলো ো ভাাঁটিতে পো োড়াবার জন্যে তৈরি করা হচ্ছে। কাজ করছে যারা তাদের ভেতরে কিশো োর বেশ কয়েকজন। যুবক দুজন। আর একপাশে উঁচু পিিঁড়ির ওপর উবু হয়ে বসে কাজের তদারক করছেন বৃদ্ধ পালমশাই। মাথায় টাক। কানের দুপাশে সাদা এক খামচা করে চুল। তিনি শ্যেন চো োখে কারিগরদের হাতের দিকে তাকিয়ে আছেন। -এইও। করলি কী! আরে দামড়া! কারিগর ছো োকরা এতগুলো ো। কাকে দামড়া বলে সম্্ববোধন করলেন, বুঝতে পারলাম না। কিন্তু বুঝেছে ঠিক যাকে বলা হয়েছে সে। দেখলাম, সে ছো োকরা চো োখ না তুলেই চট করে একটিপ মাটি নিয়ে ময়ূরপঙ্খি নৌ ৌকায় বসা মহারাজ ধরনের মূর্্ততিটির মুকুটে লাগাল। পালমশাই আমার দিকে ফিরে হেসে বললেন, নজর না রাখলে কাম সারা। দ্যাখলেন না? চান্দ সওদাগরের মুকুটটা যে ছাাঁচে ওঠে নাই, ব্যাটার খ্যাল নাই। বলেই ‘উঁহুহু’ করেই নিজেই উঠে গেলেন ছো োকরার কাছে। তারপর ছো োকরার হাত থেকে বাাঁশের চিকন কলমটা খপ করে টেনে নিয়ে মুকুটের ওপর অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে চিকন নকশা এঁকে দিলেন। -জ্্যযাঠা। পেছন থেকে ডাক শুনে বিরক্ত হয়ে ঘুরে তাকালেন পালমশাই। ব্যাস আর কো োনো ো কথা নয় কারো ো তরফে। ঘুরে তাকিয়ে তিনিও বুঝতে পারলেন, যে ছো োকরা ডাক দিয়েছিল সেও মাথা নিচু করে বসে রইল সমুখের কাাঁচা মাটির পাটার দিকে তাকিয়ে। আরে, দামড়া! রবীন্দ্রনাথের দাড়িতে ঢেউ খেলানো ো কয়বার দেখাইয়া দিতে অয়? আমার দিকে ফিরে বললেন, বো োঝলেন, এই দাড়ি তো ো বাংলার সক্কলে চেনে। চেনে মানে, ছায়া দেখলেও চেনে। খালি ছায়া দিয়াই বুঝান যায় শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 রবীন্দ্রনাথ। তাইলে বো োঝেন, সেই কবির দাড়িই যদি ঠিক না অয়, দাড়ি দেইখা যদি লালন ফকির মনে হয়, কি মাওলানা ভাসানী মনে হয়, তাইলে চলব? 21 প্রমিত ভাষায় কথা বলি আবার দ্রুত হাত চলে পালমশাইয়ের। মহাবিরক্ত হয়ে তিনি কাাঁচামাটির পাটায় রবীন্দ্রনাথের দাড়িতে সূক্ষ্ম আঁচড় কেটে চলেন। আঁচড় কাটতে কাটতে আমাকে বলেন, বো োঝলেন, কাঠের ছাাঁচে সকল টানটো োন ছাপছো োপ ঠিক ওঠে না। হাতে ঠিক করতে অয়। নইলে মাল নষ্ট। পয়সা নষ্ট। তার উপর ধরেন, ভাাঁটি থিকা বাইর করলেও কিছু বাদ-বাতিল হয়া যায়। জয়নুলের আঁকা গো োরুর গাড়ির চাকা ঠেলে তো োলার ছবির দিকে দেখিয়ে পালমশাইকে জিগ্যেস করি, এটা কার ছবি? -ক্্যযান? মানুষ চাকা ঠেইলা তো োলে-সেই ছবি। -সে কথা নয়। কার আঁকা ছবি? পালমশাই একটু ইতস্তত করে বললেন, ধরেন, আমাগো ো আঁকা। আমি হেসে বললাম, পালমশাই, এটা জয়নুল আবেদীনের আঁকা। শুনে কিছুক্ষণ ভ্রু কুুঁচকে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর নিরাসক্ত গলায় বললেন, হ, হইতে পারে। কেটা জানে! কত দিকে কত কারিগর আছে। জয়নাল না কী কইলেন? নাম মনে থাকে না। তারপর ধরেন গিয়া, আমরা যে আর্্টটের কাম করি, আমাগো ো চেনে কয়জন? নাম জানে কয়জন? এই যে আমার বাবায়, তানি ছিলেন এতবড়ো ো আর্টিস্ট, কে তারে স্মরণ রাখছে কন? তারপর একটু চুপ থেকে বললেন, জয়নাল? হ, হইতে পারে। তয়, এই নকশাটা খুব চলছে। জিগ্যেস করলাম, আচ্ছা, এটা তো ো রবীন্দ্রনাথ। ওটা কবি নজরুল-বাাঁশি বাজাচ্ছেন। পালমশাই সন্দিগ্ধ চো োখে একবার আমার, একবার পাটা দুটো োর দিকে তাকালেন। ভাবলেন, হয়তো ো চেহারা ঠিক মেলেনি। বললেন, ক্্যযান, কী হইছে? -না, ঠিকই আছে। আমি শুধু জানতে চাইছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি করেন না? -বঙ্গবন্ধু? -হ্্যাাঁ। -ক্্যযান, দ্যাহেন নাই-ঐ যে উপরে চাইয়া দেহেন-সবার উপরেই তো ো বঙ্গবন্ধুর দুইডা ছবি। হেরে তো ো মধ্যে বা নিচে রাহন যায় না। এতক্ষণ মুঠো োতে ধরে রাখা চশমাটা এবার চো োখে দিলাম। সত্্যযি, বঙ্গবন্ধুকে এই কারিগর স্থান দিয়েছেন সবার ওপরে। চো োখ দুটো ো ঝাপসা হয়ে এল। শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 22 বাংলা শব্দের অর্্থ অবিশ্বাস্য: যা বিশ্বাস করা যায় না। তরফ: পক্ষ। আঁচড়: দাগ টানা। দামড়া: বলদ গো োরু। আর্্ট: ছবি আঁকা ও অন্যান্য শিল্প। নিরাসক্ত: আবেগহীন, নির্্ললিপ্ত। আর্টিস্ট: শিল্পী। পাটা: মাটির ফলক। ইতস্তত: দ্বিধা। বাাঁশবনে আচ্ছন্ন: বাাঁশগাছ দিয়ে ভরা। এক খামচা চুল: পাাঁচ আঙুলের এক খামচিতে বেণীবন্ধনরত: বেণী বাাঁধছে এমন। তো োলা একমুঠ চুল। ভাাঁটি: মাটির তৈরি জিনিস পো োড়ানো োর একটিপ: একটুখানি। কাদার তাল: কাদার পিন্ড। বড়ো ো চুলা। কারিগর: যাাঁরা হাতে জিনিস বানান। ময়ূরপঙ্খি নৌ ৌকা: যে নৌ ৌকার সামনের কুমো োর: মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো ো যাাঁদের দিকটা ময়ূরের মুখের মতো ো নকশা করা। পেশা। মওলানা ভাসানী: বাংলাদেশের একজন কৌ ৌতূহল: আগ্রহ , জিজ্ঞাসা। বিখ্যাত রাজনীতিবিদ। খো োদাই করা নকশা: কেটে কেটে বানানো ো লালন ফকির: বাংলা ভাষার একজন বিখ্যাত নকশা। লো োককবি ও গায়ক। চান্দ সওদাগর: বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনির শ্যেন: তীক্ষ্ণ, বুনো ো। একটি চরিত্র। সন্দিগ্ধ: সন্দেহ ভরা। ছাাঁচ: কো োনো ো কিছু বানানো োর কাঠামো ো। সমুখের: সামনের। ছো োকরা: ছেলে। সরা: মাটির ঢাকনা। জয়নুল আবেদীন: বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। সানকি: মাটির থালা। জ্্যযাঠা: চাচা, বাবার বড়ো ো ভাই। সূক্ষ্ম: মিহি, সরু। ঝাপসা: অস্বচ্ছ, অস্পষ্ট। শব্দের উচ্চারণ প্রমিত ভাষায় শব্দের উচ্চারণ ঠিকমতো ো করতে হয়। ‘কত দিকে কত কারিগর’ গল্প থেকে কিছু শব্দ বাম কলামে দেওয়া হলো ো। শব্দগুলো োর প্রমিত উচ্চারণ কেমন হবে, তা ডানের কলামে লিখে দেখানো ো হয়েছে। তো োমার উচ্চারণ এখান থেকে ঠিক করে নাও। শব্দ প্রমিত উচ্চারণ আঁচড় আঁচো োড়্ আর্টিস্ট আর্টিস্ট্ ইতস্তত ইতো োস্‌ততো ো উঁচু উঁচু শিক্ষাবর্ ্ষ 2024 এতক্ষণ কাাঁচা কাাঁচা 23 প্রমিত ভাষায় কথা বলি কাঠ কাঠ্ গ্রাম গ্রাম্ ঘুরে ঘুরে চাকা চাকা চিকন চিকো োন্ চিত্র চো োখ চো োখ্ জন্যে জিগ্যেস ঝাপসা ঠেলা ঠ্যালা তদারক তদারক্ তরফ তরো োফ্ দ্রুতগতি দ্রুতো োগো োতি নৌ ৌকা নো োউকা পাটা পাটা প্রতিলিপি প্্ররোতিলিপি

Use Quizgecko on...
Browser
Browser