ইতিহাস PDF: ভারতীয় উপমহাদেশ, সিন্ধু সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতা
Document Details
![CalmLasVegas](https://quizgecko.com/images/avatars/avatar-10.webp)
Uploaded by CalmLasVegas
LJ University
Tags
Summary
এই PDF টিতে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাগৈতিহাসিক যুগ, মেহেরগড় সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা এবং বৈদিক সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন সভ্যতার আবিষ্কার, বিস্তার এবং বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও, সিন্ধু সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এবং বৈদিক সাহিত্যের শ্রেণিবিভাগ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
Full Transcript
```markdown ## 3 ইতিহাস ### [History] ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা | ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষের বসবাস | আনুমানিক খ্রি পূ. 5 লক্ষ বছর আগে | |---|---| | প্রাগৈতিহাসিক যুগের আর-এক নাম | প্রস্তর যুগ (এই যুগে মানুষ পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত)| | প্রস্তর যুগের শ্রেণিবিভাগ | তিনটি-① প্রাচ...
```markdown ## 3 ইতিহাস ### [History] ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সূচনা | ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষের বসবাস | আনুমানিক খ্রি পূ. 5 লক্ষ বছর আগে | |---|---| | প্রাগৈতিহাসিক যুগের আর-এক নাম | প্রস্তর যুগ (এই যুগে মানুষ পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত)| | প্রস্তর যুগের শ্রেণিবিভাগ | তিনটি-① প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Paleolithic Age) ② মধ্য প্রস্তর যুগ (Mesolithic Age) ③ নব্য প্রস্তর যুগ (Neolithic Age)| | প্রাচীন প্রস্তর যুগের সময়কাল | আনুমানিক 80000 খ্রি. পূ.- 10000 খ্রি. পূ.| | মধ্য প্রস্তর যুগের সময়কাল | আনুমানিক 10000 খ্রি. পূ.-6000 খ্রি. পূ.| |নব্য প্রস্তর যুগের সময়কাল| আনুমানিক 6000 খ্রি. পূ.-2500 খ্রি. পূ.| |নব্য প্রস্তর যুগের শেষের দিকে শুরু হয়|তাম্র-প্রস্তর যুগ (Chalcolithic Age) (মানুষ তামা ও ব্রোঞ্জের ব্যবহারের সাথে পাথরের ব্যবহারও করতে থাকে)| | বিভিন্ন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন সভ্যতা | সভ্যতা | নদ/নদী | সভ্যতা | নদ/নদী | |---|---|---|---| | রোমান সভ্যতা | টাইবার | সিন্ধু সভ্যতা | সিন্ধু | | মিশরীয় সভ্যতা | নীল | চৈনিক সভ্যতা | হোয়াং হো | | সুমেরীয় সভ্যতা | ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস | | | মেহেরগড় এবং সিন্ধু সভ্যতা মেহেরগড় সভ্যতা (7000-2000 খ্রি. পূ.) | 1. আবিষ্কারক | জাঁ ফ্রাঁসোয়া জারিজ ও রিচার্ড মিডো (1974)।| |---|---| | 2. বিস্তার | ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশের বোলান গিরিপথ এবং বালুচিস্তানের (পাকিস্তান) দক্ষিণ উপত্যকা থেকে শুরু করে সিন্ধু নদের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত এই সভ্যতার বিস্তার ঘটেছিল।| | 3. বৈশিষ্ট্য | ① মেহেরগড় সভ্যতার উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রগুলি ছিল-মেহেরগড়, কিলেগুল মহম্মদ, রানাঘুনডাই, কোটদিজি, নৌসেরা, কাচ্চিবেগ প্রভৃতি।② মেহেরগড় সভ্যতার সময় মানুষ তামা ব্যবহারে সক্ষম হয়।③ পোড়া মাটির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। অলংকার শিল্প উৎকর্ষতা লাভ করে।④ আফগানিস্তান, পশ্চিম এশিয়া, ইরান ও মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে মেহেরগড় সভ্যতার বাণিজ্যিক লেনদেন চলত।⑤ খাদ্যশস্য সঞ্চয়ের জন্য পৃথক শস্যাগারের নিদর্শন পাওয়া গেছে।⑥ গম, বার্লি খেজুর তুলা প্রভৃতি শস্যের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।⑦ ছোটো ছোটো মূর্তি, নীলকান্ড মনি, লাপিস লাজুলি, শঙ্খ নির্মিত বিভিন্ন ধরনের অলংকার প্রভৃতির নিদর্শন পাওয়া গেছে।| --- ## 84 সিন্ধু সভ্যতা (2600-1900 খ্রি. পূ.) সিন্ধু সভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ও সেগুলির আবিষ্কারক |কেন্দ্র|আবিষ্কারক|অবস্থান| |---|---|---| |1. হরপ্পা (1921 খ্রি.)|দয়ারাম সাহানি|পাকিস্তানের মন্টগোমারি (পাঞ্জাব প্রদেশ) জেলার ইরাবতী বা রাভি নদীর তীরে অবস্থিত।| |2. মহেন-জো-দারো (1922 খ্রি.)|স্যার জন মার্শাল ও রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়|সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলা।| |3. চানহুদারো (1931 খ্রি.)|ননীগোপাল মজুমদার|সিন্ধু নদের তীরবর্তী সিন্ধুপ্রদেশ।| |4. সুতকাজেনদোর (1927 খ্রি.)|অরেলস্টাইন|সিস্ত নদীর তীরবর্তী বেলুচিস্তান প্রদেশ (মাকরান উপকূল)।| |5. রোপার (1953 খ্রি.)|ওয়াই ডি শর্মা|পাঞ্জাবের শতদ্রু নদীর তীরে অবস্থিত।| |6. কালিবঙ্গান (1960 খ্রি.)|বিকে থাপার|রাজস্থান প্রদেশের ঘর্ঘরা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল।| |7. লোথাল (1954 খ্রি.)|এস আর রাও|গুজরাত প্রদেশের ভোগাবর নদীর তীরে অবস্থিত ছিল। এ ছিল একটি সামুদ্রিক বন্দর অঞ্চল।| |8. বানওয়ালি (1974 খ্রি.)|আর এস বিস্ট|হরিয়ানা রাজ্যের অন্তর্গত হিসার অঞ্চলে অবস্থিত।| |9. আলমগিরপুর (1958, 1959 খ্রি.)|ওয়াই ডি শর্মা|মিরাট জেলার হিন্দন নদীর তীরে অবস্থিত।| |10. ধোলাভিরা (1967 খ্রি.)|জগৎপতি যোশি|গুজরাতের কচ্ছ জেলায় অবস্থিত (লুনি নদীর তীরে)।| |11. আমরি (1935 খ্রি.)|ননীগোপাল মজুমদার|সিন্ধু নদের তীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত।| সিন্ধু সভ্যতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি 1. সিন্ধু সভ্যতার কেন্দ্রগুলির মধ্যে প্রথম আবিষ্কৃত হয় হরপ্পা। 2. গম ও বার্লি জাতীয় শস্য ছিল সিন্ধু সভ্যতার উৎপাদিত ফসলের মধ্যে অন্যতম। 3. কালিবঙ্গান ও লোথালে ইট ভাটার নিদর্শন পাওয়া গেছে। 4. হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতার মানুষ লোহার ব্যবহার জানত না। 5. সিন্ধু সভ্যতায় পাঁচটি পশুবেষ্টিত ত্রিমুখবিশিষ্ট যোগীমূর্তি পাওয়া গেছে। স্যার জন মার্শাল এই মূর্তিকে 'আদি শিব' (পশুপতি দেব) বলে চিহ্নিত করেছেন। 6. সিন্ধু সভ্যতায় প্রাপ্ত লিপিগুলিতে যে লিখনশৈলী ব্যবহার করা হয়েছে তা বউস্ট্রোফেডন (Boustrophedon) লিখনশৈলী নামে পরিচিত। 7. মহেন-জো-দারোতে একটি বৃহৎ স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। এটির আয়তন ছিল 180 ×108 ফুট। 8. হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতায় মৃতদেহকে সমাধিস্থ করার রীতি ছিল। 9. এই সময় মানুষ পোড়া ইটের দ্বারা বাড়িঘর নির্মাণ করত। 10. হরপ্পা কেন্দ্রটিতে একটি বৃহৎ শস্যাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। মোট শস্যাগারের সংখ্যা ছিল 6টি। 11. হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্র কালিবঙ্গান কথার অর্থ হল কালো কঙ্কন (Black Bangle)। 12. মেসোপটেমিয়া, সুমের ইত্যাদি সভ্যতার সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার বাণিজ্যিক লেনদেনের নিদর্শন পাওয়া গেছে। 13. হরপ্পা সভ্যতায় বণিকদের পণি নামে অভিহিত করা হত। 14. মেসোপটেমিয়ার অধিবাসীদের কাছে হরপ্পার অধিবাসীরা মেলুহা নামে পরিচিত ছিল। 15. হুইলার ও গর্ডন চাইল্ড-এর অভিমত অনুসারে হরপ্পা সভ্যতার পতনের অন্যতম কারণ হল আর্য আক্রমণ। 16. হরপ্পার অধিবাসীরা মূলত মাতৃশক্তির পুজো করত। 17. সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতা হল নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। 18. হরপ্পা ও মহেন-জো-দারো শহরকে যমজ নগরী (Twin city) বলা হয়। --- ## ইতিহাস ৮৫ বৈদিক সভ্যতা * হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর বৈদিক সভ্যতার উদ্ভব হয়। এই সভ্যতার স্রষ্টাদের 'আর্য' বলা হয়। * আর্যদের বিশ্বাস বেদ স্বয়ং ঈশ্বরের বাণী। তাই বেদকে নিত্য ও 'অপৌরুষেয়' বলা হয়। * বেদ, বেদাঙ্গ প্রভৃতি নিয়ে বৈদিক সাহিত্য গড়ে উঠেছে। * প্রাচীন আর্য ঋষিরা ঈশ্বরের এই বাণী শ্রবণ করেছিলেন বলে বেদকে 'শ্রুতি' বলা হয়। বেদ হল সমগ্র আর্যজাতির প্রাচীনতম সাহিত্য। আর্যদের আদি বাসস্থান সম্পর্কিত বিভিন্ন মতবাদ | অভিমত | অঞ্চল | প্রবক্তা | | --- | --- | --- | | 'আর্যরা ছিলেন ভারতীয়' | মুলতান-এর অন্তর্গত দেবিকা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল | গঙ্গানাথ ঝা, ডি এস ত্রিবেদী, বি দি লাল প্রমুখ | | | কাশ্মীর ও হিমালয়ের উত্তর-পশ্চিমের তরাই অঞ্চল | কাল্লা | | | সপ্তসিন্ধু অঞ্চল | এ সি দাস | | 'আর্যরা ছিলেন বহিরাগত' | আর্কটিক/সুমেরু অঞ্চল | বিজি তিলক | | | মধ্য এশিয়া | ম্যাক্সমুলার | | | ইউরোপীয় | উইলিয়াম জোনাস | | | হাঙ্গেরি | পি গাইলস্ | | | সাইবেরিয়ার দক্ষিণে কিরঘিজ স্তেপি অঞ্চল | ব্রান্ডেনস্টাইন | বৈদিক সাহিত্যের শ্রেণিবিভাগ * বেদের 4টি ভাগ 1. ঋগ্বেদ (আর্যদের প্রাচীনতম গ্রন্থ) - প্রাকৃতিক বর্ণনা ও দেবদেবীর স্তুতিগান। ঋগ্বেদের মোট স্ত সংখ্যা হল 1028টি। 2. সামবেদ-যজ্ঞের সময় এর স্তোত্রগুলি গীত হত, যা সামগান নামে পরিচিত। 3. যজুর্বেদ যাগযজ্ঞের মন্ত্রাদি 4. অথর্ব বেদ-সৃষ্টিরহস্য, চিকিৎসাবিদ্যা, বশীকরণ মন্ত্রাদি প্রতিটি বেদকে আবার 4 ভাগে ভাগ করা যায় (i) সংহিতা - দেবতার উদ্দেশ্যে মন্ত্র ও স্তোত্র (ছন্দে লেখ) (ii) ব্রাহ্মণ-যজ্ঞের নিয়মকানুন (গদ্যে লেখা) (iii) আরণ্যক-সংসারাশ্রমের শেষে যাঁরা অরণ্যে আশ্রয় নিতেন তাঁদের উপযোগী ধর্মতত্ত্ব (iv) উপনিষদ(এটি বেদের শেষভাগ, তাই উপনিষদ বেদান্ত নামেও পরিচিত) - দার্শনিক চিন্তা সূত্র-সাহিত্য ক্রমে বৈদিক সাহিত্য বিশাল ও জটিল হয়ে উঠলে তা শুদ্ধভাবে পাঠ করার জন্য, যাগযজ্ঞ প্রভৃতি নির্ভুলভাবে পালনের জন্য সৃষ্টি হয় সূত্র-সাহিত্য। বৈদিক সাহিত্য এবং দর্শন বিষয়ক একটি ডায়াগ্রাম নিচে দেওয়া হলো: ``` সূত্র-সাহিত্য ┌────────────────────────────┐ │ বেদাঙ্গ │ দর্শন │ │(বেদ পাঠের জন্য এই 6টি বিস্তার প্রয়োজন)│ │(উপনিষদের গভীর তত্ত্বগুলির আলোচনা ও│ │ ব্যাখ্যা থেকেই ষড়দর্শনের উৎপত্তি)│ └────────────────────────────┘ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ শিক্ষা ছন্দ ব্যাকরণ নিরুক্ত জ্যোতিষ কল্প ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ ↓ সাংখ্য যোগ ন্যায় বৈশেষিক পূর্ব মীমাংসা উত্তর মীমাংসা ```