শশাঙ্কের রাজত্ব ও কর্ণসুবর্ণ

শশাঙ্ক ছিলেন একজন গুপ্ত সম্রাটের মহাসামন্ত। তিনি ৬০৬-'০৭ খ্রিস্টাব্দের কিছু কাল আগে গৌড়ের শাসক হন।

শশাঙ্কের শাসনামলে, গৌড়ের রাজনৈতিক গুরুত্ব ধীরে ধীরে বেড়ে যায়।

শশাঙ্ক ৬৩৭-৩৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ।

কর্ণসুবর্ণ শহরের আরেকটি নাম, যা রাজা কর্ণের প্রাসাদের নাম অনুসারে পরিচিত।

সুয়ান জাং কর্ণসুবর্ণকে একটি সমৃদ্ধ ও জনবহুল শহর হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

কর্ণসুবর্ণের জমি নীচু ও আর্দ্র ছিল, যেখানে কৃষিকাজ সারা বছর ধরে চলত।

কর্ণসুবর্ণ একটি বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল, যেখানে বিভিন্ন জিনিসপত্র আসত এবং যাতায়াত করত।

কর্ণসুবর্ণের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় অঞ্চলের সাথে বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল।

কর্ণসুবর্ণের রাজনীতি বারবার পরিবর্তিত হয়েছে, শশাঙ্কের পরে ভাস্করবর্মা এবং জয়নাগের রাজারাও রাজত্ব করেছেন।

কর্ণসুবর্ণে বৌদ্ধ এবং শৈব সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করত।

হর্ষবর্ধন শশাঙ্ককে হারাতে পারেননি, যা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

শশাঙ্ক শৈব ধর্ম পালনকারী ছিলেন, যা তার রাজনৈতিক জীবনে প্রভাব ফেলেছে।

এই সময়কালে কৃষিক্ষেত্রের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় এবং বাণিজ্যের গুরুত্ব কমে যায়।

গ্রাম্য ক্ষেত্রের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে নগর কেন্দ্রিক অঞ্চলের প্রভাব কমে যায়।

এই যুগে শ্রেষ্ঠীরা ক্ষমতা হারিয়েছিলেন, এবং স্থানীয় প্রধানরা তাদের জায়গা দখল করেছিলেন।

শশাঙ্ক ব্রাহ্মণ্য ধর্মের অনুসারী ছিলেন।

শশাঙ্কের মৃত্যুর পর, গৌড়ে ক্ষমতা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় মনোনীত উত্তরাধিকারীর অভাবে।

কামরূপ, জয়নাগ, এবং তিব্বতের শাসকরা বাংলার বিভিন্ন অংশে শাসন করতে থাকে

কাশ্মীর এবং কনৌজের শাসকরা বাংলা আক্রমণ করেছিলেন

বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্কের মৃত্যুর পরের অস্থির সময়কালকে মাৎস্যন্যায়ের যুগ বলা হয়।

মাৎস্যন্যায় বলতে দেশে অরাজকতা এবং স্থায়ী শাসকের অনুপস্থিতিকে বোঝায়।

শশাঙ্ককে বৌদ্ধবিদ্বেষী বলা হয় যমঞ্জু শ্রীমূলকারী নামক বৌদ্ধ গ্রন্থে এবং সুয়ান জাং-এর ভ্রমণ বিবরণীতে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের হত্যা করেছিলেন এবং বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় স্মারক ধ্বংস করেছিলেন।

হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্টের রচনা হর্ষচরিত-এ শশাঙ্ককে নিন্দা করা হয়েছে।

শশাঙ্কের মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর পরে চিনা পর্যটক ই-ৎসিঙ্-এরও নজরে পড়েছিল বাংলার বৌদ্ধ ধর্মের উন্নতি।

শশাঙ্কের শাসনকালে গৌড়ে যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তাকে বলা যায় গৌড়তন্ত্র।

শশাঙ্কের শাসনকালে রাজ্যের কর্মচারী বা আমলারা একটা নির্দিষ্ট শাসনপ্রণালী গড়ে তুলেছিল।

আগে যা ছিল গ্রামের স্থানীয় লোকের কাজ, শশাঙ্কের সময় সেই কাজে প্রশাসনও হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে।

ঐ আমলের গৌড় রাজ্যে কেন্দ্রীয় ভাবে সরকার পরিচালনা করা হতো।

শশাঙ্কের আমলে সোনার মুদ্রা প্রচলিত ছিল। কিন্তু তার মান পড়ে গিয়েছিল। নকল সোনার মুদ্রাও দেখা যেত। রুপোর মুদ্রা ছিল না।

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই যুগে সম্ভবত মন্দা দেখা দিয়েছিল। সমাজে জম